রাশিয়া যেমনটি চেয়েছে, বিগত সপ্তাহটি ঠিক সেভাবেই কেটেছে। হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রকাশ্যে বিতণ্ডায় জড়ানোর দৃশ্যটি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে উপভোগের বিষয় ছিল।

তবে আজ রোববার ইউরোপের নেতারা যে সম্মেলনে বসেছেন, তাতে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা রয়েছে। এ ছাড়া কূটনৈতিক সংকটের একটি সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টাও রয়েছে। এসব বিষয়ের ওপর নজর রাখছে ক্রেমলিন। কারণ, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে ভাঙনকে কাজে লাগাতে চাচ্ছে তারা।

আজ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ তাঁর বক্তব্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, ৫০০ বছর ধরে বিশ্বে ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনাগুলোর সবগুলো হয় ইউরোপ থেকে সৃষ্টি হয়েছে অথবা ইউরোপীয় নীতির কারণে ঘটেছে। লাভরভ এটাও বলেছেন, কোনো সংঘাত উসকে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা পালন করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

বছরের পর বছর ধরে রাশিয়া যে বার্তা দিয়ে আসছে, লাভরভের বক্তব্য তার বিপরীত। এত দিন বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করে আসছে মস্কো। এ ছাড়া ওয়াশিংটনের অধীন থেকে ইউরোপ কাজ করছে বলে দাবি করেছে তারা।

মস্কো এখন বুঝতে পেরেছে যে বর্তমানে ইউরোপ একটি নাজুক অবস্থানে রয়েছে। ইউরোপের দেশগুলো একই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন, অভ্যন্তরীণ সংকটের সমাধান এবং ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার মধ্যে একটি ভারসাম্য রাখতে চাইছে।

তবে ইউরোপ যদি একত্র হতে পারে এবং ট্রাম্পকে এটা বোঝাতে পারে যে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভূমিকা রয়েছে, তাহলে নিজেদের শর্ত অনুযায়ী যুদ্ধে দ্রুত সমাপ্তি টানার যে কৌশল রাশিয়া হাতে নিয়েছে, তা আরও জটিল হয়ে পড়বে।

ইউক্রেন নিয়ে লন্ডনে সম্মেলন শুরু, যোগ দিয়েছেন ইউরোপের নেতারাজেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে কীভাবে বের করে দেওয়া হয়, জানালেন ট্রাম্পের উপদেষ্টাজেলেনস্কির প্রতি কেন এত মারমুখী ছিলেন ভ্যান্সআমেরিকার জন্য ভয়ংকর এক শুক্রবার.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ