চিয়া সিড খেলে যেহেতু অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগে না, তাই সাহ্‌রিতে এই বীজ খেলে সারা দিন না খেয়ে থাকা সহজ হবে বলে মনে হতে পারে আপাতদৃষ্টে। আবার ইফতারে চিয়া সিড খেলে পেট ভালো থাকবে, এমনটাও মনে করতে পারেন কেউ কেউ। আদতে কোন সময় চিয়া সিড খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো? জানালেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান

সাহ্‌রিতে যদি খান

সাহ্‌রিতে আপনাকে অবশ্যই এমন কিছু খেতে হবে, যা থেকে আপনার দেহ সারা দিনের জন্য শক্তি পাবে। ভাত, মাছ, মাংস, দুধ—অনেক কিছুই খাওয়া যেতে পারে এই সময়। চাইলে আপনি নিশ্চয়ই চিয়া সিড ভেজানো পানি সাহ্‌রিতে খেতে পারেন। কিন্তু এই পানীয় খেলে অন্যান্য খাবার ততটা খেতে পারবেন না, যতটা আপনার প্রয়োজন সারা দিনের শক্তি জোগাতে। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে বেশ খানিকটা সময় আপনার ক্ষুধা পাবে না ঠিকই, কিন্তু সূর্যাস্ত পর্যন্ত দেহের যে শক্তি প্রয়োজন, তা গ্রহণ না করায় আপনি সহজেই দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। তাই চিয়া সিডের চেয়ে বরং সাহ্‌রিতে এমন কিছু খাওয়াই ভালো, যা থেকে আপনি পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং শক্তি পাবেন।

আরও পড়ুনচিয়া সিড কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে সবচেয়ে বেশি উপকার?১৮ নভেম্বর ২০২৪ইফতারে চিয়া সিড

ইফতারের দারুণ এক উপকরণ হতে পারে চিয়া সিড। আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলেই হলো। কিংবা এর বদলে একই সময় ধরে ভিজিয়ে রাখা চিয়া সিড সালাদ কিংবা টক দইয়ের সঙ্গে যোগ করেও খেতে পারেন। খাবারে যোগ করতে হলে অবশ্য এক চামচ চিয়া সিড ভেজাতে মাত্র তিন চামচ পানি ব্যবহার করতে হবে। এই অনুপাত খেয়াল রেখে চিয়া সিড ভেজানো হলে তা পানিটুকু শোষণ করে ফুলে ওঠে, বাড়তি পানি রয়ে যায় না। ইফতারে খাবার বা পানীয়ে চিয়া সিড খেলে প্রচলিত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারবেন। এতে হজমজনিত সমস্যা থেকে বাঁচা সহজ হবে, রক্তের কোলেস্টেরলও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এভাবে চিয়া সিড খাওয়া হলে তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা রাখে। আর ইফতারে চিয়া সিড খেতে গিয়ে কম ক্যালরি গ্রহণ করা হলেও রাতের খাবারে তা পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ তো থাকেই।

আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখবে সকালের এই ৫ অভ্যাস০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তাই প্রয়োজন বুঝে…

বুঝতেই পারছেন, ইফতারে চিয়া সিড খাওয়া অধিকাংশ মানুষের জন্য ভালো। তবে পবিত্র রমজান মাসে পর্যাপ্ত পানি এবং শাকসবজি না খাওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে পারেন কেউ কেউ। সে ক্ষেত্রেও আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা চিয়া সিডে উপকার মেলে। অর্থাৎ এই একটি কারণে সাহ্‌রির সময়ই কারও কারও চিয়া সিড ভেজানো পানি খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখুন, পানীয়ের জন্য যাতে সাহ্‌রিতে পুষ্টির পরিমাণ কমে না যায়। অর্থাৎ খাবারের পরিমাণ খানিকটা কমে গেলেও যেন পুষ্টিকর খাবার বাদ না পড়ে। খাবার খাওয়ার অন্তত ১৫–২০ মিনিট আগে চিয়া সিড ভেজানো পানি খেয়ে নেবেন। আরও একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই বীজ পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার জন্য কিন্তু আপনাকে একটু আগেভাগেই ঘুম থেকে উঠতে হবে।

আরও পড়ুনযে ৭ কারণে সকালে খাবেন চিয়াসিড ও বিটরুটের পানি২৮ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ