বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে
Published: 3rd, March 2025 GMT
বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয়ে ২১৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আত্মপ্রকাশের এক দিন পর গত শনিবার গভীর রাতে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ হবে এক বছর। কমিটিতে বাম ও ডানপন্থী সাবেক ছাত্রনেতারা যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী থেকে আসা মানুষ। কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন দলিত-হরিজন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও।
গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের এই দল গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ করে। সেদিন রাতে নতুন এই দলের ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির একটি তালিকা গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে আসে। সেই তালিকার একজন পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন।
এ ছাড়া পদ পরিবর্তন হয়েছে ১৩ জনের। পদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে বেশ কয়েকজনের। নতুন করে কমিটিতে যুক্ত হয়েছেন ৪৬ জন।
খসড়া কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর একজন যুগ্ম সদস্যসচিবকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। এ বিষয়কে ইঙ্গিত করে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা ফেসবুকে দুঃখ প্রকাশ করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশের পর দেখা গেল, সেখানে তাঁর নাম নেই।
নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আছেন সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা। মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। এর বাইরে দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ৩৩ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ৯ জনকে উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ১৮ জনকে উত্তরাঞ্চলের সংগঠক, ৭ জনকে দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ২৪ জনকে দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক, ২৩ জনকে যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং ৭৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
এনসিপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা গতকাল রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয়ে এনসিপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এই দল যেন সব মতের মানুষের প্রতিনিধিত্বশীল দল হয়, কমিটি করার সময় সে বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় ছিল। কমিটিতে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষএনসিপির ২১৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া অনিক রায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। নতুন দলের সদস্য হওয়া সৈয়দা নীলিমা দোলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেত্রী। যুগ্ম মুখ্য সংগঠকের পদ পাওয়া অলিক মৃ আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি। দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কৈলাস চন্দ্র রবিদাস ও ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু পেয়েছেন যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের পদ।
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার একসময় রাষ্ট্রচিন্তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম ও জাবেদ রাসিন আগে ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠকের পদ পাওয়া ইমন সৈয়দ ছাত্র ফেডারেশনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
নতুন এই দলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সেক্রেটারি। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদও শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা। যদিও তিনি পরে এবি পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। অবশ্য এনসিপি গঠনের আগে শীর্ষ নেতৃত্বে আসার আলোচনায় থাকা শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জোনায়েদ শেষ পর্যন্ত দলে যোগ দেননি। শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরেক সাবেক সভাপতি রাফে সালমান রিফাতও দলে যুক্ত হননি। দল ঘোষণার আগেই নানা আলোচনার মধ্যে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, তাঁরা নতুন দলে যুক্ত হচ্ছেন না।
কওমি অঙ্গন থেকে আসা আশরাফ উদ্দীন মাহাদী যুগ্ম আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলাম আইনীকে উত্তরাঞ্চলের সংগঠক করা হয়েছে। যুগ্ম সদস্যসচিব মঈনুল ইসলাম তুহিন (তুহিন খান) কওমি মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তিনি বামপন্থী ছাত্রসংগঠন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সঙ্গে যুক্ত হন।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে দলের কমিটিতে রয়েছেন অর্পিতা শ্যামা দেব ও প্রীতম দাশ। তাঁরা দুজনই যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ছাড়া যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদ পেয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সাগর বড়ুয়া।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের বেশ কিছু সাবেক নেতাও যুক্ত হয়েছেন নতুন দলে। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া আরিফুল ইসলাম আদীব ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসেইন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের পদ পাওয়া তারিকুল ইসলাম ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।
এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহকে নতুন এই দলে যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও মশিউর রহমানকে যুগ্ম সদস্যসচিব করা হয়েছে।
কখনো কোনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, এমন অনেকে তরুণদের নতুন দল এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন। যেমন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া তাসনিম জারা, যুগ্ম মুখ্য সংগঠকের পদ পাওয়া মাহমুদা আলম মিতু ও সদস্যপদ পাওয়া তাওহিদ তানজিম কখনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের বাইরে বিভিন্ন পেশার মানুষকেও রাখা হয়েছে এনসিপির কমিটিতে। যুগ্ম মুখ্য সংগঠক পদে আছেন মেজর (অব.
চিকিৎসকদের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবদুল আহাদ, সদস্য আতাউর রহমান রাজিব, সাবরিনা মনসুর ও মশিউর রহমান। আইনজীবীদের মধ্যে নতুন এই দলে সদস্য হিসেবে আছেন মো. মনিরুজ্জামান ও ছেফায়েত উল্লাহ। দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হিসেবে আছেন আইনজীবী মনজিলা ঝুমা, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক হিসেবে আছেন আইনজীবী শিরীন আক্তার শেলী। শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদে আছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির।
সাংবাদিকদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন শিশির যুগ্ম সদস্যসচিব পদ পেয়েছেন, আরিফুর রহমান তুহিন হয়েছেন যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও সদস্য হয়েছেন মামুন তুষার।
এনসিপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা গতকাল রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয়ে এনসিপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এই দল যেন সব মতের মানুষের প্রতিনিধিত্বশীল দল হয়, কমিটি করার সময় সে বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় ছিল।
আপাতত বাংলামোটর থেকে কার্যক্রমজাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে। শুক্রবার দলের আত্মপ্রকাশ হলেও এখনো কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেয়নি তারা। দলের কার্যালয়ের জন্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জায়গা খোঁজা হচ্ছে।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের পর এনসিপির ব্যানারে এখনো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালিত হয়নি। অর্থাৎ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম সেভাবে শুরু হয়নি। দল ঘোষণার পর এখন নিবন্ধনের শর্ত পূরণের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ভাবছে এনসিপি। সে জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় করার কথা ভাবছে তারা।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আপাতত বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয় থেকে দলের দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। খুব দ্রুতই দলীয় কার্যালয় ঠিক হলে আমরা সেখানে চলে যাব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য গ ম ম খ য সমন বয়ক য গ ম ম খ য স গঠক য গ ম সদস যসচ ব র প র ণ ঙ গ কম ট ক কম ট র ল ইসল ম সদস য হ র রহম ন এনস প র র জন ত কম ট ত হয় ছ ন আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাতের কর্মকাণ্ড নিয়ে বোধকরি একটা মহাকাব্য লিখে ফেলা সম্ভব। তাঁরা যেভাবে গভীর কিংবা শেষ রাতে নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, ফেসবুকে বার্তা দিচ্ছেন; তাতে তো মনে হচ্ছে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা দিনে কাজ না করে রাতেই মনে হয় বেশি কাজ করেন! কয়েকটা উদাহরণ বরং দেওয়া যাক।
মাস কয়েক আগে যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ভাবে খারাপ হয়ে গেল, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাত তিনটার সময় সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন! বাংলাদেশের ইতিহাসে রাত তিনটার সময় আর কোনো মন্ত্রী এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করেছেন কি না, আমার অন্তত জানা নেই। আমরা সবাই ভাবলাম, তিনি হয়তো বড় কোনো ঘোষণা দেবেন। এরপর কী দেখলাম?
তিনি খুব সাধারণভাবে বললেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার নিজেদের উদ্যোগকে কঠিন ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে।
সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ আকাশ থেকে একটি যুদ্ধবিমান ঢাকা শহরের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল বিল্ডিংয়ে ভেঙে পড়ল। আগুনে দগ্ধ শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নিজেরা উঠে এসে হাঁটছে; এমন দৃশ্যও আমাদের দেখতে হয়েছে। যে দৃশ্য দেখলে যে কেউ হয়তো ট্রমায় চলে যাবে। ওই স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হয়তো সরাসরি সেই দৃশ্য দেখেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে—এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সময়ের দাবি ছিল। এ সিদ্ধান্ত সরকার দিনের বেলাতেই নিতে পারত। অথচ আমরা কী দেখলাম?
সরকারের পক্ষ থেকে রাত তিনটার দিকে ফেসবুকে এসে ঘোষণা করা হলো, পরের দিনের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।দিন দু-এক আগে এ সরকারকেই যাঁরা চাকরি দিয়েছেন, এ কথা বলছি কারণ, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, ‘ছাত্ররা আমার নিয়োগকর্তা’—সেই ছাত্রদের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গভীর রাতে ফেসবুক এসে লাইভ করেন প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
এই আড়াই ঘণ্টার লাইভে মূল যে বক্তব্য তিনি তুলে ধরেছেন, সারমর্ম করলে দাঁড়ায়: বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম মানি মেকিং মেশিনে পরিণত হয়েছে এবং অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। তিনি এটাও বলেছেন, এই সংগঠনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোড থেকে আসে। অর্থাৎ উপদেষ্টারা যেখানে থাকেন।
এদিকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটা ফেসবুক পোস্ট করেছেন। যদিও ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তিনি বেশ কয়েকবার এডিট করেছেন। তবে প্রথমে যা লিখেছেন, সেটা হচ্ছে, নতুন একটি দলের মহারথীদের কয়েকজন দুর্নীতিতে জড়িত। এ ছাড়া তিনি এটাও বলেছেন, একটা সার্কেলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তাঁদের কেন প্রশ্রয় দেওয়া হলো? আপনারা যদি জানেনই কিছু মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাহলে সরকারের অংশ হিসেবে আপনাদের তো দায়িত্ব তাঁদের আইনের আওতায় আনা। সেটা না করে ফেসবুকে পোস্ট করতে হচ্ছে কেন? তা–ও আবার রাত তিনটায়!
এই সরকার কি মাঝরাতের ফেসবুকীয় সরকারে পরিণত হয়েছে? পরীক্ষা পেছানোর মতো সিদ্ধান্ত যখন মাঝরাতে নিতে হয়, সংবাদ সম্মেলন যখন রাত তিনটায় করতে হয়, তখন তো প্রশ্ন জাগতেই পারে। কারণ এটা তো স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।
রাষ্ট্র যদি ভালো না থাকে তবে তার মাত্রা কতটুকু, সেটা নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমিনুল ইসলাম প্রভাষক, এস্তোনিয়ান এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ইউনিভার্সিটি
[email protected]