বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয়ে ২১৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আত্মপ্রকাশের এক দিন পর গত শনিবার গভীর রাতে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ হবে এক বছর। কমিটিতে বাম ও ডানপন্থী সাবেক ছাত্রনেতারা যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী থেকে আসা মানুষ। কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন দলিত-হরিজন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও।

গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের এই দল গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ করে। সেদিন রাতে নতুন এই দলের ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির একটি তালিকা গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে আসে। সেই তালিকার একজন পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন।

এ ছাড়া পদ পরিবর্তন হয়েছে ১৩ জনের। পদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে বেশ কয়েকজনের। নতুন করে কমিটিতে যুক্ত হয়েছেন ৪৬ জন।

খসড়া কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর একজন যুগ্ম সদস্যসচিবকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। এ বিষয়কে ইঙ্গিত করে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা ফেসবুকে দুঃখ প্রকাশ করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশের পর দেখা গেল, সেখানে তাঁর নাম নেই।

নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আছেন সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা। মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। এর বাইরে দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ৩৩ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ৯ জনকে উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ১৮ জনকে উত্তরাঞ্চলের সংগঠক, ৭ জনকে দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, ২৪ জনকে দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক, ২৩ জনকে যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং ৭৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে।

এনসিপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা গতকাল রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয়ে এনসিপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এই দল যেন সব মতের মানুষের প্রতিনিধিত্বশীল দল হয়, কমিটি করার সময় সে বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় ছিল। কমিটিতে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ

এনসিপির ২১৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া অনিক রায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। নতুন দলের সদস্য হওয়া সৈয়দা নীলিমা দোলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেত্রী। যুগ্ম মুখ্য সংগঠকের পদ পাওয়া অলিক মৃ আদিবাসী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি। দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কৈলাস চন্দ্র রবিদাস ও ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু পেয়েছেন যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের পদ।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার একসময় রাষ্ট্রচিন্তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম ও জাবেদ রাসিন আগে ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠকের পদ পাওয়া ইমন সৈয়দ ছাত্র ফেডারেশনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

নতুন এই দলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সেক্রেটারি। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদও শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা। যদিও তিনি পরে এবি পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। অবশ্য এনসিপি গঠনের আগে শীর্ষ নেতৃত্বে আসার আলোচনায় থাকা শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জোনায়েদ শেষ পর্যন্ত দলে যোগ দেননি। শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরেক সাবেক সভাপতি রাফে সালমান রিফাতও দলে যুক্ত হননি। দল ঘোষণার আগেই নানা আলোচনার মধ্যে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, তাঁরা নতুন দলে যুক্ত হচ্ছেন না।

কওমি অঙ্গন থেকে আসা আশরাফ উদ্দীন মাহাদী যুগ্ম আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলাম আইনীকে উত্তরাঞ্চলের সংগঠক করা হয়েছে। যুগ্ম সদস্যসচিব মঈনুল ইসলাম তুহিন (তুহিন খান) কওমি মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তিনি বামপন্থী ছাত্রসংগঠন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সঙ্গে যুক্ত হন।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে দলের কমিটিতে রয়েছেন অর্পিতা শ্যামা দেব ও প্রীতম দাশ। তাঁরা দুজনই যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ছাড়া যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদ পেয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সাগর বড়ুয়া।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের বেশ কিছু সাবেক নেতাও যুক্ত হয়েছেন নতুন দলে। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া আরিফুল ইসলাম আদীব ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসেইন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের পদ পাওয়া তারিকুল ইসলাম ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।

এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহকে নতুন এই দলে যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও মশিউর রহমানকে যুগ্ম সদস্যসচিব করা হয়েছে।

কখনো কোনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, এমন অনেকে তরুণদের নতুন দল এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন। যেমন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়া তাসনিম জারা, যুগ্ম মুখ্য সংগঠকের পদ পাওয়া মাহমুদা আলম মিতু ও সদস্যপদ পাওয়া তাওহিদ তানজিম কখনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।

বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের বাইরে বিভিন্ন পেশার মানুষকেও রাখা হয়েছে এনসিপির কমিটিতে। যুগ্ম মুখ্য সংগঠক পদে আছেন মেজর (অব.

) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। সদস্য হয়েছেন মেজর (অব.) মো. সালাউদ্দিন।

চিকিৎসকদের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবদুল আহাদ, সদস্য আতাউর রহমান রাজিব, সাবরিনা মনসুর ও মশিউর রহমান। আইনজীবীদের মধ্যে নতুন এই দলে সদস্য হিসেবে আছেন মো. মনিরুজ্জামান ও ছেফায়েত উল্লাহ। দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হিসেবে আছেন আইনজীবী মনজিলা ঝুমা, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক হিসেবে আছেন আইনজীবী শিরীন আক্তার শেলী। শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক পদে আছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির।

সাংবাদিকদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন শিশির যুগ্ম সদস্যসচিব পদ পেয়েছেন, আরিফুর রহমান তুহিন হয়েছেন যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও সদস্য হয়েছেন মামুন তুষার।

এনসিপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা গতকাল রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের সমন্বয়ে এনসিপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এই দল যেন সব মতের মানুষের প্রতিনিধিত্বশীল দল হয়, কমিটি করার সময় সে বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় ছিল।

আপাতত বাংলামোটর থেকে কার্যক্রম

জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে। শুক্রবার দলের আত্মপ্রকাশ হলেও এখনো কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেয়নি তারা। দলের কার্যালয়ের জন্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জায়গা খোঁজা হচ্ছে।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের পর এনসিপির ব্যানারে এখনো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালিত হয়নি। অর্থাৎ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম সেভাবে শুরু হয়নি। দল ঘোষণার পর এখন নিবন্ধনের শর্ত পূরণের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ভাবছে এনসিপি। সে জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় করার কথা ভাবছে তারা।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আপাতত বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয় থেকে দলের দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। খুব দ্রুতই দলীয় কার্যালয় ঠিক হলে আমরা সেখানে চলে যাব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য গ ম ম খ য সমন বয়ক য গ ম ম খ য স গঠক য গ ম সদস যসচ ব র প র ণ ঙ গ কম ট ক কম ট র ল ইসল ম সদস য হ র রহম ন এনস প র র জন ত কম ট ত হয় ছ ন আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দহন থেকে  জংলি

‘আমি নিয়মিত অনেক চিত্রনাট্য পাচ্ছি। নিয়মিত সেসব সিনেমা করলে প্রচুর টাকা কামাতে পারব। ফিন্যান্সিয়ালি জায়গাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দর্শক আমাকে যেভাবে দেখতে চাচ্ছেন, তেমন গল্প পাচ্ছি না। দর্শক-প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কিছু দিতে চাই। যখন সামগ্রিক চিন্তা করি, তখন ভাবতে হয় আমি কতটা আয় করলাম তার চেয়েও দর্শকের সামনে কীভাবে আসছি, সেটি মুখ্য। এটি একটি প্যাকেজ। মাঝে একটি-দুটি গল্প পছন্দ হয়। সেসব টিমের যে অবস্থা, বাজেট সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভালো গল্প তুলে আনা কঠিন হবে। তখন আমি না করে দিই। আমি চাইছি নিজের মতো করে কাজ করতে। জীবনে অনেক সিনেমা করতে হবে, এমন চিন্তা নেই। আমার মতো করে অল্প কিছু কাজ করে যেতে চাই।’ বলছিলেন সিয়াম আহমেদ।

গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’। যে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নায়কের আবেগ ও পরিশ্রমের দীর্ঘ গল্প। সিনেমাটি করতে একচুলও ছাড় দেননি সিয়াম। ফলাফল হিসেবে পেয়েছেন দর্শকের অবারিত ভালোবাসা। জংলি মুক্তির পর তাই গল্পটি হয়ে উঠেছে সবার। দর্শকরা হলে গিয়ে কেঁদেছেন, গল্পে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। করেছেন সিয়াম ও তাঁর টিমের প্রশংসা। 

সিয়াম বললেন, ‘এ সিনেমায় আমি দীর্ঘ সময় দিয়েছি। সিনেমার জন্য চুলদাড়ি বড় করেছি। একটি সিনেমার জন্য আমার পাগলামি নিয়ে মা-বাবার মনে হয়তো প্রশ্ন ছিল, ছেলেটি চুল-দাড়ি বড় করে কী করছে? কী করেছি, এটি তো তাদের বোঝানো যায় না। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সিনেমাটি মুক্তির পরে গল্পটি তাদের টাচ করবে। কারণ, গল্পটিই এমন, এটি প্রথম যদি কাউকে টাচ করে, সেটি সন্তানের মা-বাবাদের। যে কারণে তাদের একসঙ্গে হলে নিয়ে কাছ থেকে অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত মা-বাবার কাছ থেকে সেরা ফিডব্যাক পেয়েছি। বাবা-মেয়ের গল্পটি দেখে তারা ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু আমার বাবা-মা নন, অন্য মা-বাবাদের কাছেও গল্পটি নিজেদের হয়ে উঠেছে। তারা সিনেমাটি দেখে কেঁদেছেন। হল রিঅ্যাকশনের সেসব ভিডিও সবাই দেখেছেন। সব মিলিয়ে আমরা সফল। আমাদের জংলি সফল।’

মুক্তির পর থেকে ‘জংলি’ সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গ্রাফ দেখলে শুধু দর্শকের ভালোবাসায় সফল নয়, ব্যবসায়িকভাবেও সিনেমাটি যে সফল তার চিত্র বিদ্যমান। মাত্র ৮টি শো দিয়ে শুরু হওয়া সিনেমাটি ঈদের এতদিন পরও মাল্টিপ্লেক্সে ত্রিশটির মতো শো নিয়ে দাপিয়ে চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও জংলি হয়ে উঠেছে দর্শকদের সিনেমা।  

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জানিয়েছেন, জংলি প্রায় ছয় কোটির (গ্রস) ক্লাবে প্রবেশ করেছে। 

ঈদে মুক্তির পর থেকে ক্রমশ দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘জংলি’। এমনকি, দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে ‘জংলি’। গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এ সিনেমাটি। কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ‘জংলি’।

ঈদে আরও অনেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জংলি বিশেষ হয়ে উঠেছে কেবল বাবা-মেয়ের গল্পের কারণে। সঙ্গে সিয়ামের নজরকাড়া অভিনয়। নৈঋতার পাখি হয়ে ওঠার দারুণ চেষ্টা। দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট নামে এক মনীষী বলেছেন, ‘একজন বাবা বলেন না যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন; বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন’ জংলি সিনেমায় সিয়াম সেটি বোঝাতে পেরেছেন। ফলে সিনেমাটি হয়ে উঠেছে সবার।

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন– ‘পৃথিবীতে আসার সময় প্রতিটি মানুষই একটি করে আলাদিনের প্রদীপ নিয়ে আসে, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই প্রদীপ থেকে ঘুমন্ত দৈত্যকে জাগাতে পারে।’ 
সিয়াম তাঁর জীবনের সেই দৈত্যকে জাগাতে পেরেছেন। পেরেছেন বলেই হয়তো আজ তিনি সাধারণ সিয়াম থেকে নায়ক সিয়াম হয়ে উঠেছেন। সিয়ামের যাত্রাটা শুরু বেশ আগে হলেও পুরোপুরি শুরু হয় ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমাটির মাধ্যমে সিয়াম নাটক থেকে পুরোপুরি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে ওঠেন। সে যাত্রা এখনও চলছে। প্রথম সিনেমায় যে সিয়ামকে সবাই  দেখেছেন, জংলির সেই সিয়াম যেন আকাশ-পাতাল। তখন সিয়াম ছিলেন তরুণ, এই সিয়াম এখন বাবা। পর্দায় ও বাস্তবে দুই জায়গাতে দারুণ এক বাবা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আগামী পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন রাখলে নায়ক বলেন, ‘আমি নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাই। যারা আমার আগের কাজ দেখেছেন, তারা যেন বলেন, আগের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ