এক চাকার সাইকেল চালানো বেশ কঠিন কাজ। এই সাইকেল চালাতে হলে ভারসাম্য রক্ষায় দারুণ দক্ষতা অর্জন করতে হয়। আর ভারোত্তোলন দারুণ পরিশ্রমের, শরীরে প্রচণ্ড শক্তি থাকতে হয়।

কঠিন এই দুই কাজ একত্রে করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ড্যান গ্যালান্ট। তিনি এক চাকার সাইকেল চালাতে চালাতেই তুলেছেন ৯০ কেজির বেশি ওজন।

ড্যান একজন শখের ভারোত্তোলক। মিশিগানের এই বাসিন্দা একদিন সিদ্ধান্ত নেন, তিনি যে কাজে সেরা, সেই কাজ দিয়েই ইতিহাসে নাম লেখাবেন। তবে শুধু ভারোত্তোলন করে নয়, বরং তিনি অনন্য কিছু একটা করবেন।

এ চিন্তা থেকেই এক চাকার সাইকেলের ওপর ভারোত্তোলন অনুশীলন শুরু করেন ড্যান। এ জন্য শুধু প্রচণ্ড শক্তি থাকলেই হবে না, ভারসাম্য রক্ষার দিকেও গভীর মনোযোগ দিতে হবে।

এক চাকার সাইকেলে চেপে ভারোত্তোলনের রেকর্ড করতে গিয়ে এর আগে চারবার ব্যর্থ হয়েছিলেন ড্যান। পঞ্চমবারের চেষ্টায় সাফল্য তাঁর হাতে ধরা দেয়। তিনি এক চাকার সাইকেল চালাতে চালাতেই মাথার ওপর তুলে ফেলেন ৯৩ কেজি ওজন। তিনি কাজটি করেন ২০২৪ সালে। এর মধ্য দিয়ে তিনি নিজের রেকর্ডই ভাঙেন। এর আগে তিনি এক চাকার সাইকেলে চেপে প্রায় ৭৯ কেজি ওজন তুলেছিলেন।

নিজের আগের রেকর্ড ভাঙতে ড্যান যে অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন, তাতে এটা প্রমাণ হয়েছে, যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মূলে একাগ্রতা।

স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে ড্যান বলেছিলেন, ‘এটা আমার কাছে পাজল মেলানোর মতো। যেমন এই নতুন পরিস্থিতিতে এক চাকার সাইকেলে চেপে কীভাবে আমি আমার মাথার ওপর এই ওজন তুলতে পারি, সবচেয়ে কার্যকরভাবে, সম্ভাব্য সবচেয়ে নিরাপদে।’

শরীরচর্চা আর ভারোত্তোলনই ড্যানের জীবন। ১৩ বছর বয়স থেকে তিনি ভারোত্তোলন করেন। আর ১৬ বছর বয়স থেকে চালানো শুরু করেন এক চাকার সাইকেল। নিজের এলাকা মিশিগানের গ্র্যান্ড র‍্যাপিডসে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের এক চাকার সাইকেল চালানো শেখান।

মানুষকে এক চাকার সাইকেল চালানো শেখাতে কেমন লাগে—এমন প্রশ্নের জবাবে ড্যান বলেন, এ অভিজ্ঞতা জাদুকরী। এর মাধ্যমে মানুষকে এটা বোঝানোর সুযোগ পাওয়া যায় যে তিনি কতটা সক্ষম। চাইলেই কঠিন সব কাজ তাঁরা করে ফেলতে পারেন।

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে অন্যদের উপদেশ দিতে গিয়ে ড্যান আরও বলেন, ‘আমি তাদের বলব.

..নিজেদের আরামের জায়গা থেকে বেরিয়ে আসুন এবং এমন কিছু করার চেষ্টা করুন, যেটা করার কথা কখনো কল্পনাও করেননি। কারণ, আপনার জন্য অনেক বিস্ময় অপেক্ষা করছে। এবং তাঁরা যে বিস্মিত হবেন, সে বিষয়ে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ