বিএসইসিতে অভিযানের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক
Published: 3rd, March 2025 GMT
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে রবিবার (২ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে পাওয়া অনিয়মগুলো শিগগিরই কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসিতে দুদকের এটাই প্রথম অভিযান। এ অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এসএম মামুনুর রশীদ ও রাজু আহমেদ।
আরো পড়ুন:
হামিদ ফেব্রিক্সের কোম্পানি সচিব নিয়োগ
বে-মেয়াদীতে রূপান্তরে এশিয়ান টাইগারের আবেদন নাকচ
অভিযানকালে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ২০১০ সাল পরবর্তী দুই কমিশনের মেয়াদের অনিয়ম ও দুর্নীতির অনেক প্রমাণ পেয়েছেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানির প্রসপেক্টাসে থাকা আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যেও ম্যানিপুলেট করা হয়। আর্থিক অবস্থা দুর্বল থাকা কোম্পানিকে সবল দেখানো হয়। এরপর মার্কেটে ছাড়া হয় আইপিও। সেই কোম্পানি অব্যাহত প্রবৃদ্ধিও করেছে। তারপর একপর্যায়ে তাদের শেয়ারদর পড়তে শুরু করে। এতে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে বিভিন্ন সময় এসব কোম্পানির বিষয়ে সতর্ক করে সুপারিশ করা হলেও বিএসইসি তা আমলে নেয়নি। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানের আওতায় আনা হবে।
এছাড়া, কোম্পানিটির দাখিলকৃত ফ্যাব্রিকেটেড আর্নিংস অ্যান্ড অ্যাসেটস বিবরণী ও উইন্ডো ড্রেসিংয়ের মাধ্যমে তৈরিকৃত ব্যালান্সশিটের বিপরীতে আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রে ডিএসইর সুপারিশ ও অবজারভেশন বিবেচনা করা হয়নি, যা ব্যাপক অনিয়মের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। এছাড়া, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট জালিয়াতি ও বাণিজ্য, অধিক মূল্যে শেয়ার প্রাইস নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ ও অল্প সময়ে শেয়ার বিক্রি, প্রাইসের দ্রুত অবনমনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়টিও পরিলক্ষিত হয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় টিম আরো প্রত্যক্ষ করে, যে দুর্বল কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে অনুমোদন দেয়ায় ক্যাপিটাল মার্কেটে প্রবেশের অল্পদিনেই তাদের লো পারফর্মিং কোম্পানি হিসেবে জেড ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, জালিয়াতির মাধ্যমে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের প্রস্তুতকৃত উইন্ডো ড্রেসড ব্যালান্সশিট ও ফ্যাব্রিকেটেড আর্নিং রিপোর্ট ও ইস্যু ম্যানেজারের তৈরিকৃত ওভারভ্যালুড কোম্পানি প্রোফাইলের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের আশ্রয়ে বিএসইসি আইপিওর অনুমোদন দিয়েছে। প্রাপ্ত অনিয়মগুলোর বিষয়ে দুদক টিম প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এ বিষয়ে জানতে বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।
ঢাকা/এনটি/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল