‘পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে কাজ করছি’
Published: 29th, July 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের গঠিত কমিটির সভাপতি ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য আমরা কাজ করছি। কিছু সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির তালিকা করে তাদের সঙ্গে বসছি। সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সোমবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে পুঁজিবাজারের অংশীজনদের তৃতীয় মাসিক সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো.
আরো পড়ুন:
নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে শাহজালাল ব্যাংক
রেনেটার প্রেফারেন্স শেয়ার অনুমোদন
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, “ডায়ালগের বিকল্প নেই। সকলে মিলে যৌথভাবে সকল সমস্যার সমাধান করা যায়। পুঁজিবাজারের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।”
এছাড়া, সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকা এবং সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করার কথাও বলেন তিনি।
ঢাকার আগারগাঁওয়ের অবস্থিত বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে সোমবার অনুষ্ঠিত সভায় পুঁজিবাজারের অংশীজনদের সঙ্গে পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থাসহ পুঁজিবাজারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ এবং পুঁজিবাজার অংশীজন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের শীর্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন। এসময় সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
এছাড়া, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. মোমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুল মোতালেব, সিসিবিএলের বাবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আ স ম খায়রুজ্জামান, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন, ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী ও মিনহাজ মান্নান ইমন, বিএপিএলসির পরিচালক ও নির্বাহী সদস্য মো. কায়সার হামিদ, ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ ও কমিশন সচিব উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যের মধ্যে পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন বৃহৎ দেশীয় কোম্পানি, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি কিংবা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণ, অনলাইন বা ডিজিটাল আইপিও আবেদন ব্যবস্থা চালুকরণ, তালিকাভুক্তির পথে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করার জন্য আলাদা টাস্কফোর্স কিংবা টিম গঠন, আইসিবিসহ পুঁজিবাজার অংশীজন প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইসিবির যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের উন্নয়ন, পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণ, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ব্যবহার, সিসিবিএল এর বাস্তবায়ন ও কার্যকরকরণ, পুঁজিবাজারের বিদ্যমান বাজার কাঠামোর আধুনিকায়ন ও সেটেলমেন্টের সময় হ্রাস, কোম্পানিসমূহের ক্যাটাগরিকরণ, আইটি প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য এসএমই বোর্ডের মত আলাদা প্ল্যাটফর্ম তৈরি, নেগেটিভ ইক্যুইটির সমাধান, স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ট্রেজারি বন্ডের প্রাইমারি অকশন চালুকরণ, বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, মার্চেন্ট ব্যাংকের কাজের পরিধি বৃদ্ধিকরণ, ফিন্যানশিয়াল রিপোর্টিং এবং হিসাব ও নিরীক্ষা কার্যক্রমের মানোন্নয়ন, পুঁজিবাজারে কর ছাড়ের সুবিধা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারে অনিয়ম ও কারসাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসার ও বিকাশ, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি, বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুরক্ষা নিশ্চিত ও স্বার্থ সংরক্ষণ, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারকে প্রতিষ্ঠিতকরণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনাসহ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কশিনের গৃহীত উদ্যোগ-কার্যক্রম এবং পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সুপারিশ ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ, পুঁজিবাজারের অংশীজনদের বিভিন্ন প্রস্তাবনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণসহ পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন ও সংস্কারের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
ঢাকা/এনটি/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র র অ শ জন ব যবস থ ন নয়ন আইস ব
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে বড়-মাঝারি বিনিয়োগকারী বেড়েছে : বিএসইসি
পুঁজিবাজার থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগকারী বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও পরিসংখ্যানে এর বিপরীত চিত্রই উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের ৩০ জুনের তুলনায় ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে অতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও বড় ও মাঝারি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা নয় বরং তাদের বিনিয়োগক্ষমতার ধরণ ও মান বদলেছে। তাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কিংবা বিনিয়োগ কমছে এমন তথ্য সম্পূর্ণ সত্য নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিএসইসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অথবা বিও হিসাবের সংখ্যা কিংবা বিনিয়োগ কমছে এমন বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি মূলত সম্পূর্ণ সত্য নয়। মূলত বিগত বছরের তুলনায় পুঁজিবাজারে বৃহৎ বিনিয়োগকারীর (৫০ কোটি হতে ৫০০ কোটি টাকা এবং তদুর্ধ্ব পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারে টানা ৩ কার্যদিবস সূচকের পতন
বিএসইসি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করছে: ডিবিএ সভাপতি
পাশাপাশি বিগত বছরের তুলনায় মাঝারি বিনিয়োগকারীর (৫০ লাখের ঊর্ধ্বে ও ৫০ কোটি টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে বিগত বছরের তুলনায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর (১ লাখের ঊর্ধ্বে ও ৫০ লাখের টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে বিগত বছরের তুলনায় অতি ক্ষুদ্রবিনিয়োগকারীর (১ লাখ টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। অর্থ্যাৎ অতি ক্ষুদ্রবিনিয়োগকারীর (১ লাখ টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যা ব্যতীত অন্য সকল ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়েছে।
পোর্টফোলিও ভ্যালু ৫০ কোটি টাকার বেশি এমন বৃহৎ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ৭৩৩ জন, যা আগের বছর ছিল ৬৯৬। আর ৫০০ কোটির ঊর্ধ্বে পোর্টফোলিওধারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০, যা আগের বছর ছিল ৬৮।
মাঝারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে এমন মাঝারি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২২৫ জন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১ হাজার ৩১৮ জন বেশি।
তবে বিপরীত চিত্র রয়েছে ১ লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগ রয়েছে এমন অতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তাদের সংখ্যা ২০২৪ সালের ৯ লাখ ১৬ হাজার ১৫৭ থেকে কমে ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৪৮ জন। অর্থাৎ প্রায় ৮৫ হাজার বিনিয়োগকারী ১ লাখ টাকার নিচের পোর্টফোলিও থেকে সরে এসেছেন বা বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছেন।
ঢাকা/এনটি/বকুল