জামালপুরের প্রতিনিয়ত রাজীব পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রতিবাদ ও বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী শহরের বাইপাস এলাকায় জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশের আশ্বাসে বেলা ৩টা ২০ মিনিটে আজকের মতো অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাইপাস এলাকার বিসিক শিল্পনগরীর সামনে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে একদল শিক্ষার্থী রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের সামনেই রাস্তায় আড়াআড়িভাবে দুটি মোটরসাইকেল রাখা। তাঁদের পেছনে বসার বেঞ্চ রাখা। এতেই সড়কের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন যানবাহন আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাজীব পরিবহনের বাস জামালপুর-ঢাকা যাতায়াত করে। ওই পরিবহনটি বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট। তারা উন্নত মানের সেবার কথা বললেও ন্যূনতম সেবাও যাত্রীরা পান না। এই পরিবহনের বাস লক্কড়ঝক্কড়, বাসের সিট ভালো না, অনেক বাসের জানালা ভাঙা, চালকদের লাইসেন্স নেই, অদক্ষ চালক, চালক-হেলপারসহ শ্রমিকদের ব্যবহার খুব খারাপ। বাসগুলো জামালপুর শহর থেকে মুক্তগাছা পর্যন্ত বেপরোয়া চলাচল করে। এর পর থেকে বাসগুলো কচ্ছপগতি চলাচল করে। যেখানেই যাত্রীরা হাত উঠাবে, ওই বাস সেখানেই থেমে যাবে। মাত্র চার ঘণ্টার পথ এই বাসে লাগে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। জামালপুরবাসীর গলার কাঁটা এই বাস সার্ভিসটি। কোনো ধরনের সেবা না থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া ঠিকই নিয়ে থাকে। কারণ, তারা একক বাস সার্ভিস। এই সিন্ডিকেটের কারণে বড় বড় বাস কোম্পানি জামালপুরে চলতে পারে না।

সড়ক অবরোধের সময় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আফরিন জান্নাত ও মুকুল হোসাইন এবং সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আবিদ।

বক্তারা বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই পরিবহনের চালক ও শ্রমিকদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বাস সার্ভিসের সংস্কার করতে হবে। প্রত্যেক যাত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বাসের ভাড়া কমাতে হবে। লক্কড়ঝক্কড় বাস বাতিল করে ভালো বাস দিতে হবে। এসব দাবি মানা না হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো.

আতিক বলেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা সড়কটি ছেড়ে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর এলাকায় জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজীব পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এতে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ পর বহন র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।

আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’

আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’

এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী