পরিবেশগত হুমকির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিচারিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
Published: 3rd, March 2025 GMT
পরিবেশগত হুমকির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিচারিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, শিল্প দূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত নগর সম্প্রসারণের ফলে সৃষ্ট অস্তিত্বগত হুমকিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর বিচারিক প্রতিক্রিয়া জরুরি।
সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে পরিবেশগত ন্যায়বিচার রক্ষা: একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিচারকদের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে জলবায়ুগত ও মানবসৃষ্ট হুমকির হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে দেশের পরিবেশগত নিরাপত্তা হারিয়ে যাবে। যা লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা ও ভবিষ্যতকে বিপন্ন করবে।
ব্রাজিলের হাইকোর্ট বিভাগের প্রধান বিচারপতি আন্তোনিও হারমান বেঞ্জামিনের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এই সেমিনার আয়োজন করে।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের বিচার বিভাগ ঐতিহাসিকভাবেই পরিবেশ সুরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকায় ছিল। বিচারক হিসেবে আমাদের পবিত্র দায়িত্ব হলো কঠোর আইনি কাঠামো, টেকসই নীতি এবং সর্বদা বিচারিক তদারকির মাধ্যমে এই অমূল্য জীববৈচিত্র্যের ভান্ডারকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা।
ব্রাজিলের হাইকোর্ট বিভাগের প্রধান বিচারপতি আন্তোনিও হারমান বেঞ্জামিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ও ব্রাজিল উভয়ই ব্যাপক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন নেই তা নয়, বরং সমস্যা হলো আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব। বিদ্যমান পরিবেশ সংরক্ষণ আইনগুলো অনেকাংশেই ঔপনিবেশিক শোষণের মানসিকতা দ্বারা প্রভাবিত, তাই কার্যকর ও ন্যায়সংগত আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।
সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) এবং আইনগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নদী সুরক্ষা, বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ সংক্রান্ত কয়েকটি ঐতিহাসিক রায়ের প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের হাইকোর্ট বিভাগের প্রধান বিচারপতি আন্তোনিও হারমান বেঞ্জামিনকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক ও প্রকাশনা তুলে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।