যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির গত শুক্রবারের বিতণ্ডাকে অনেক ঝানু কূটনৈতিক পর্যবেক্ষক পরিকল্পিত বলে মনে করেন। তাঁদের মতে, এটা একধরনের রাজনৈতিক ছিনতাই। জেলেনস্কিকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে এবং তাঁকে সরিয়ে দিতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারাই ওভাল অফিসের ওই বিতণ্ডার পরিকল্পনা করেছিলেন। পরবর্তী আলাপ-আলোচনা নির্বিঘ্নে সারতেই এটা করা হয়েছিল।

ট্রাম্প-জেলেনস্কির ওই বিতণ্ডা পরিকল্পিতভাবে করা হোক বা না হোক, তবে এতে যে মস্কো সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়েছে, তা আর গোপন নেই। এখন যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সম্পর্ক ধারণার চেয়ে দ্রুতগতিতে স্বাভাবিক হতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওই নাটকীয় ঘটনার পর ওয়াশিংটন-মস্কোর সম্পর্ক পুনরায় শুরুর বিষয় নিয়ে এখনো প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলেনি। তবে পর্দার অন্তরালে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক নিয়ে আলোচনা চলছে। এখন দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকই সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর দলের সদস্যদের বিরোধ হওয়ায় নতুন করে আশাবাদী হয়ে উঠেছে মস্কো। লক্ষণীয় বিষয় হলো, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার আলাপটা গুরুত্ব হারাতে বসেছে। কারণ, যুদ্ধটা শেষ করা বেশ কঠিন। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার অর্থনীতিবিষয়ক আলাপ গুরুত্ব পাবে, যা এরই মধ্যে তলে তলে শুরু হয়ে গেছে।

আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক হতে পারে সৌদি আরবে১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আর রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক করার আলোচনার পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলাপ হয়। কিন্তু বৈঠকে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

বাঁ থেকে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের গোলাপি রঙের খালি গায়ের ব্যঙ্গ ছবি। পশ্চিম জার্মানির ডুয়েসেলডর্ফে রোজ মানডে উপলক্ষে, ৩ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিরোধপূর্ণ বালুচর স্যান্ডি কে ‘দখলে নিল’ চীন

দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত বিরোধপূর্ণ বালুচর স্যান্ডি কে চীনের কোস্টগার্ড দখলে নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এ ঘটনা ফিলিপাইনের সঙ্গে দেশটির আঞ্চলিক বিরোধ আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

চীনা গণমাধ্যম সিসিটিভির প্রকাশিত ছবিতে স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের বিরোধপূর্ণ প্রবালপ্রাচীর স্যান্ডি কে-তে কালো পোশাক পরা কোস্টগার্ডের চার কর্মকর্তাকে চীনের জাতীয় পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এপ্রিলের শুরুর দিকে চীন ওই প্রবালপ্রাচীরে ‘সামুদ্রিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগ করেছে’, সিসিটিভি এমনটাই জানিয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের বেশ কিছু দ্বীপের মালিকানা নিয়ে চীন ও ফিলিপাইনের পাল্টাপাল্টি দাবি আছে।

এ ঘটনার পর রোববার ফিলিপাইন তিনটি বালুচরে নামার কথা জানায় এবং চীনের ছবির অনুকরণে তাদের কর্মকর্তারাও একটি প্রবালপ্রাচীরে জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছে এমন একটি ছবি প্রকাশ করে। অবশ্য ফিলিপাইনের নিরাপত্তা বাহিনী যেসব বালুচরে নেমেছে, তার মধ্যে কোনোটি স্যান্ডি কে কিনা, তা নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।
এক বিবৃতিতে ন্যাশনাল টাস্কফোর্স ওয়েস্ট ফিলিপাইন সি জানায়, তারা একটি বালুচর থেকে এক হাজার গজ দূরে চীনা কোস্টগার্ডের একটি নৌযান এবং আরও সাতটি চীনা মিলিশিয়া নৌযানের ‘অবৈধ উপস্থিতি’ দেখতে পেয়েছিল।

পশ্চিম ফিলিপাইন সাগরে দেশের সার্বভৌমত্ব, সার্বভৌম অধিকার ও কর্তৃত্ব রক্ষায় ফিলিপাইন সরকারের অবিচল নিষ্ঠা ও দৃঢ় অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ এই অভিযান,’ বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

রোববারই পরে এক বিবৃতিতে চীনা কোস্টগার্ড জানায়, তারা তিয়েশিয়ান প্রবালপ্রাচীরে ৬ ফিলিপিনোর ‘অবৈধভাবে নামার ঘটনায় ব্যবস্থা নিয়েছে’। স্যান্ডি কে চীনে তিয়েশিয়ান প্রবালপ্রাচীর নামে পরিচিত।

চীনের দিক থেকে সতর্কবার্তা ও নিরুৎসাহিত করার পরও ফিলিপাইনের ছয়জন অবৈধভাবে তিয়েশিয়ান প্রবালপ্রাচীরে নামে। চীনের কোস্টগার্ড সদস্যরা এরপর ওই প্রবালপ্রাচীরে নামে এবং তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়। রোববার সন্ধ্যায় দেওয়া বিবৃতিতে চীনা কোস্টগার্ডের মুখপাত্র লিউ দেজুন এমনটাই বলেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিরোধপূর্ণ বালুচর স্যান্ডি কে ‘দখলে নিল’ চীন