বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে জর্ডানের তাস্কার অ্যাপারেল কোম্পানিতে নারী পোশাককর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। কর্মীদের বিনা মূল্যে থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হবে। কর্মীদের আসা-যাওয়ার বিমানভাড়াও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান দেবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাস্কার অ্যাপারেল কোম্পানিতে নারী মেশিন অপারেটর পদে ৩০০ জন নারী কর্মী নেওয়া হবে। প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। প্লেইন মেশিন ও ওভারলক মেশিন পরিচালনার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মাসিক মূল বেতন ২১ হাজার ৩১১ টাকা।

চাকরির শর্ত

দৈনিক আট ঘণ্টা ডিউটি, সপ্তাহে ছয় দিন। ওভারটাইম রয়েছে। চাকরির চুক্তি তিন বছর, তবে নবায়নযোগ্য। নিয়োগকর্তা থাকা, খাওয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসা এবং পরিবহনের খরচ দেবেন। চাকরিতে যোগদানের বিমানভাড়া ও তিন বছর সন্তোষজনকভাবে চাকরি শেষে দেশে ফেরত আসার বিমানভাড়া নিয়োগকর্তা দেবেন। অন্যান্য শর্ত জর্ডানের শ্রম আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে বা জর্ডানে কোনো মামলা আছে, তাঁরা নিয়োগের অযোগ্য হবেন। একাধিক পাসপোর্ট থাকলে সঙ্গে আনতে হবে। প্রত্যেক কর্মীকে ন্যূনতম দুটি মেশিনের কাজে পারদর্শী হতে হবে। যাঁরা আগে জর্ডান থেকে এসেছেন, তাঁদের আবেদনের প্রয়োজন নেই, শুধু তাস্কার কোম্পানিতে ছিলেন, তাঁরাই পুনরায় আবেদন করে ইন্টারভিউয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

আরও পড়ুনবিডার সংশোধিত নিয়োগে পদ বেড়ে ১০৮, আবেদন শুরু ৪ মার্চ০৩ মার্চ ২০২৫বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য খরচ

নির্বাচিত নারী মেশিন অপারেটরদের মেডিকেল ফি বাবদ ১ হাজার টাকা, ফিঙ্গার প্রিন্ট বাবদ ২২০ টাকা এবং বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ বাবদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা সোনালী ব্যাংক, মগবাজার শাখায় “বোয়েসেল, ঢাকা” নামে পে-অর্ডার করে বোয়েসেল অফিসে জমা দিতে হবে। বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ বাবদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা তাস্কার কোম্পানি কর্তৃক জর্ডান যাওয়ার তিন মাস পর কর্মীকে দেওয়া হবে। এই টাকা ছাড়া অন্য কোথাও কোনো প্রকার অতিরিক্ত খরচের প্রয়োজন নেই।

সাক্ষাৎকারের সময় যা আনতে হবে

চার কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, মূল পাসপোর্ট ও মূল পাসপোর্টের ছবিযুক্ত অংশের চার সেট রঙিন ও চার সেট সাদাকালো ফটোকপি, একাধিক পাসপোর্ট থাকলে অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে।

সাক্ষাৎকারের স্থান ও তারিখ

আগ্রহী প্রার্থীদের ৭ মার্চ সকাল আটটায় সাক্ষাৎকার দিতে মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দারুস সালাম রোড, মিরপুর, ঢাকায় উপস্থিত থাকতে হবে। এ-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ০২-৪৮৩১৯১২৫ ও ০২-৪৮৩১৭৫১৫ টেলিফোন নম্বরে ও প্রবাস বন্ধু কলসেন্টার ১৬১৩৫-এ যোগাযোগ করা যেতে পারে। নিয়োগ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এই লিংকে জানা যাবে।

আরও পড়ুনস্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ৬৬ পদে পুনর্নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি৬ ঘণ্টা আগেঅনলাইনে আবেদন

প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত সঙ্গে আনার প্রয়োজন নেই। অনলাইনে আবেদন করা যাবে এই লিংকের মাধ্যমে। অনলাইনে আবেদন ইন্টারভিউ প্রদানের নিশ্চয়তা বহন করে, তবে চাকরি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নয়। চাকরির জন্য অবশ্যই আপনাকে ট্রেড টেস্ট/ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। কর্মীদের অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা আবেদন ফি দিতে হবে। বোয়েসেলের কোনো এজেন্ট বা সাব এজেন্ট নেই। বোয়েসেল কর্মী নির্বাচনে নিজে সিদ্ধান্ত নেয়।

আরও পড়ুনকারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, সংশোধিত পদ ৭৫১০১ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভাঙা বেড়িবাঁধ, আমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় মাতারবাড়ীর চাষিরা

চলতি মৌসুমে আমন চাষ করার জন্য এক ব্যক্তির এক একর জমি ১৮ হাজার টাকায় ইজারা নেন কক্সবাজারের মহেশখালীর সাগর উপকূলীয় মাতারবাড়ী ইউনিয়নের নয়াপাড়ার কৃষক জাকের হোছাইন। এই মাসের শেষের দিকে আমন চাষ শুরু করার কথা তাঁর। তবে সাগরে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে বর্ষায় ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়ার শঙ্কায় আমনের চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কেবল জাকের হোছাইন নন, তাঁর মতো একইভাবে আমনের চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মাতারবাড়ী ইউনিয়নের অন্তত ২০০ চাষি।

কুহেলিয়া নদীর পশ্চিমে আর বঙ্গোপসাগরের পূর্বে জেগে ওঠা প্রায় ১২ বর্গকিলোমিটার চর নিয়ে মহেশখালীর মাতারবাড়ী ইউনিয়ন। এর পশ্চিম পাশে রয়েছে আট কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, যার মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক দশক ধরে। ওই অংশ দিয়ে আশপাশের লোকালয় ও ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়া ঠেকাতে সর্বশেষ চার বছর আগে বসানো হয়েছিল জিও টিউব। তবে গত ২৯ ও ৩০ মে নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে জিও টিউব বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বেড়িবাঁধের ওই ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয় ও ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি তিন দফায় লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ভেঙে গেছে অন্তত ১০টি কাঁচা বসতঘর। স্থানীয় মানুষের চোখে ঘুম নেই। চাষিরাও আমন ধানের চাষাবাদ আদৌ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।সরওয়ার কামাল, সদস্য, মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ

বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি ইউনিয়নের ষাইটপাড়া এলাকায়। গত শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা বেড়িবাঁধের পাশে বসানো জিও টিউব সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সাগরের পানি ঢেউয়ের সঙ্গে বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ উপচে পাশের ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ছে। সেখানে স্থানীয় মাঝের ডেইল এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদেরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, বেড়িবাঁধের জিও টিউব বিলীন হওয়ার দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা খুবই উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আমনচাষিরা চাষাবাদ করতে পারবেন কি না তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মানুষ তাঁদের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার করা উচিত।

মাতারবাড়ী ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরুল হোছাইন মোহাম্মদ তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধের কারণে ষাইটপাড়াসহ আশপাশের চারটি গ্রামে জলাবদ্ধতার শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে এসব এলাকার অন্তত ৮০ একর জমিতে আমন চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সরওয়ার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সম্প্রতি তিন দফায় লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ভেঙে গেছে অন্তত ১০টি কাঁচা বসতঘর। স্থানীয় মানুষের চোখে ঘুম নেই। চাষিরাও আমন ধানের চাষাবাদ আদৌ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।’ ইউপি সদস্য সরওয়ার কামাল আরও বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই এলাকার মানুষের উদ্বেগ বাড়ে। অথচ ভাঙা বেড়িবাঁধ সংস্কারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড।

মহেশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেদায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি নিম্নচাপের প্রভাবে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় অন্তত ১ হাজার ৬০০ মিটারের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপাতত বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানি টেকানোর জন্য ভাঙা বেড়িবাঁধের ওপর জিও টিউব বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজারের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জামাল মুর্শিদ প্রথম আলোকে বলেন, মাতারবাড়ী ও ধলঘাট ইউনিয়নে স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রায় ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় চারপাশে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার সুপার ডাইকের আদলে স্থায়ী বেড়িবাঁধ ও ৭টি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া খনন করা হবে সাড়ে ১৯ কিলোমিটার কুহেলিয়া নদী। গত এপ্রিলে প্রকল্প প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ