জামালপুরে বাস ধর্মঘট, যাত্রীদের দুর্ভোগ
Published: 4th, March 2025 GMT
বাস শ্রমিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে জামালপুর জেলায় বাস চলাচল বন্ধ করেছে বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতারা। এতে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছে।
মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতারা সুষ্ঠু বিচার এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। দোষীদের আইনের আওতায় না নিয়ে আসা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শুভ।
এদিকে, বাস সংস্কারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
ঈদের ছুটিতে দেশে এসে সড়কে ঝরল ২ যুবকের প্রাণ
রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজছাত্র নিহত
প্রাণহানি বন্ধ ও বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে পৌর শহরের বাইপাস মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও বেঞ্চ আড়াআড়ি করে ফেলে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলন দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে। এ সময় বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা শিক্ষাথীদের আলোচনার প্রস্তাব দেয়। শিক্ষার্থীরা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে মারমুখী হয়। এতে মনির নামে এক শ্রমিক আহত হয়।
শ্রমিক আহতের প্রতিবাদে দুপুর ২টা থেকে বাস-সিএনজিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে একইস্থানে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। পরে দুপুর ৩টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলেও সারা দেশের সঙ্গে জামালপুরের বাস-সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে সারা দেশের সঙ্গে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছে।
শ্রমিক হামলার সুষ্ঠু বিচার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। সরেজমিন টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, শহরের বাইপাস এলাকার বিসিক শিল্পনগরীর সামনে জামালপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসগুলো ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে। শ্রমিক ও নেতাদের জটলা। যাত্রীরা টার্মিনালে এসে ফিরে যাচ্ছে। অনেকে বাসের অপেক্ষায় বসে আছে।
ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এসেছেন জামালপুর শহরের হিরু সড়ক এলাকার রবিউল ইসলাম। তিনি কাপড়ের ব্যবসা করেন। তিনি জানান, কাপড়ের ব্যবসায়ীদের জন্য এখন ভরা মৌসুম। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা যেতে পারছেন না। এখন একদিন ব্যবসা না হলে অনেক ক্ষতি হয়।
টার্মিনালে কথা হয় গাইবান্ধা জেলার পোশাক শ্রমিক খোরশেদ আলমের সঙ্গে। গাজীপুর কোনাবাড়ি এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। ছুটি শেষ হয়েছে। আজকে কারখানায় যোগদান করতে হবে। তিনি জানান, তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে দেওয়ানগঞ্জ হয়ে জামালপুর এসেছেন। এসে দেখেন বাস বন্ধ। আজকে যোগদান করতেই হবে, না হলে চাকরি থাকবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক আফরিন জান্নাত আঁখি বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীারা কারো ওপর চড়াও হবে এটা আমাদের সংগঠনের নিয়মে নেই। শ্রমিকরা শিক্ষার্থীদের ওপরে আক্রমণ করতে আসে। আমরা সহনশীল ও ভদ্রচিতভাবে সেটা কন্ট্রোল করি। আমরা সহনশীল না হলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারত। এ ঘটনায় কোনো শ্রমিক আহত হয়নি।’’
তিনি বলেন, ‘‘মানুষের যাতায়াতে বেশকিছু ট্রেন রয়েছে। বাস বন্ধ থাকায় ট্রেনগুলো সঠিক সময়ে যাতায়াত করছে। সাধারণ মানুষের সাময়িক সমস্যা হলেও জামালপুরের বাস সার্ভিস উন্নয়নে স্থায়ী সমাধান হবে।’’
এ প্রসঙ্গে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শুভ বলেন, ‘‘গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কিছু সন্ত্রাসী শ্রমিকের ওপর হাত তোলে। শ্রমিকের ওপর হাত তোলার প্রতিবাদে সারা জামালপুরে ধর্মঘট চলছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রমিকের ওপর হাত তোলা সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে না আসা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।’’
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো.
জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম জানান, এ বিষয়ে সমাধানের জন্য আলোচনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/শোভন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন র জন য ত কর ম ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//