ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসা রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের নানা অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরেছে পুলিশের তদন্ত সংস্থা সিআইডি।

১৩৩ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের একটি মামলায় ইমরান হোসেনকে সোমবার (৩ মার্চ) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সম্পর্কের জানাতে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তদন্ত সংস্থাটির অর্গানাইজড ক্রাইমের ডিআইজি একরামুল হাবিব।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ জাতের গরু ব্রামহা আমদানি করে বিক্রি করতেন। যা ছিল বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ আইনে বেআইনি ও আমদানি নিষিদ্ধ। কিন্তু এরপরও তিনি তা করতেন। বিষয়টি বিভিন্ন সময় আলোচনায় এলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর এখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিআইডির পক্ষ থেকে তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ১৩৩ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য পেলেও ৮৬ লাখ টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি।

সিআইডি বলছে, ইমরান হোসেন ও তার সহযোগী তৌহিদুল আলম জেনিথ চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করতেন। সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা পাচার করেছেন।

সিআইডির ডিআইজি একরামুল হাবিব জানান, তারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ বাংলাদেশে আনতেন। এছাড়া ভুটান ও নেপাল থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে এনে বিক্রি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ইমরান হোসেন প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু ছাগলকে বিদেশি ও বংশীয় গরু/ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করতেন।এভাবে অবৈধভাবে আয় করে প্রায় ১২১ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ১৪৪ টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন।

সিআইডি কর্মকর্তা জানান, ঢাকা কাস্টমস হাউজের আটককৃত এবং কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার, সাভারে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে সেগুলো জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে গরুগুলো কৌশলে হাতিয়ে নেন ইমরান। যা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। আর এই ব্রামহা আমদানির নামে ১২১ কোটি ৩২ লাখ ৯১ হাজার টাকা ইমরানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে বিনিয়োগ করে লন্ডারকৃত সম্পদে রূপান্তর করেছেন।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের ডিআইজি একরামুল হাবিব

এছাড়া মোহাম্মদপুর থানা, ঢাকার বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও জবর দখল করে সাদিক এগ্রোর মালিক মো.

ইমরান হোসেন তার অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

এদিকে ইমরান হোসেনকে আদালতে তোলা হলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

ঢাকা/এমআর/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইমর ন হ স ন র কর ছ ন স আইড র সরক র আমদ ন করত ন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ