রিমান্ডে এনে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নারী আইনজীবীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার ১১ মাস পর গতকাল মঙ্গলবার রাজবাড়ীর আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী মুক্তা পারভীন।

বিচারক মামলা আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। রাজবাড়ী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোন্দকার হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামি মাহফুজুর রহমান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত। বাকি চার আসামি হলেন রাজশাহীর ছোট বনগ্রামের শেখ আবদুল্লাহ, শাহমখদুম এলাকার জাহিদ উল আলম, রাজপাড়া থানার রোমান ইসলাম ও মো.

ছালাম।

মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল আইনজীবী মুক্তা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসআই মাহফুজুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬–১৮ এপ্রিল রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করেন। রিমান্ড কক্ষে উপস্থিত থাকার আইনানুগ সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও শেখ আব্দুল্লাহ, জাহিদ উল আলম, রোমান ইসলাম ও মো. ছালাম সেখানে ছিলেন।

এর আগে ধর্ষণচেষ্টা, শ্লীলতাহানি ও ৩০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের অভিযোগ এনে আইনজীবী মুক্তা পারভীন গত ১৩ জানুয়ারি রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করেন। এতে এসআই মাহফুজুর রহমানসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

মুক্তা পারভীন বলেন, ‘প্রথমে জানুয়ারি মাসে মামলা করেছিলাম। প্রায় দুই মাস পার হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হননি। তাঁরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নানাভাবে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। তাই আবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’

এ বিষয়ে এসআই মাহফুজুর রহমান বলেন, চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তা পারভীন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আছে। রেলওয়ে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁরা ৭০-৮০ জনের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী, সিলেট, রাজশাহী, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক প্রতারণা মামলা আছে।

মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘মুক্তা পারভীনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় তিনটি প্রতারণা মামলা আছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা থাকাকালীন আমাকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। এখন আমাদের হয়রানি করতে তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ভালো করে তদন্ত হলেই সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নরসিংদীতে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে কলেজছাত্র নিহত
  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ বাসের ধাক্কা, পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ২
  • গোপালগঞ্জে ৬ যানবাহনের সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্যসহ নিহত ২
  • রেললাইনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মুঠোফোনে, ট্রেনে কাটা পড়ে চা–শ্রমিকের মৃত্যু
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
  • গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫