‘জ্ঞান যদি শক্তি হয়, তাহলে আমরা কী জানি না, সেটা জানাই হলো প্রজ্ঞা।’ উক্তিটি নেওয়া হয়েছে অ্যাডাম গ্র্যান্টের বই ‘থিংক এগেইন’ থেকে। শহরকে স্বাস্থ্যকর ও বাসযোগ্য করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘ভূমিজ’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ফারহানা রশিদের এই উক্তিটি খুবই প্রিয়।  

ফারহানা রশিদ একজন প্রকৌশলী। তবে এর পাশাপাশি শহুরে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতেও তিনি অগ্রগামী। তার উদ্যোগ ‘ভূমিজ’- এর মাধ্যমে তিনি জনসাধারণের জন্য নিরাপদ ব্যবহার্য শৌচাগার তৈরিতে সংকল্পবদ্ধ। বিশেষ করে নারীরা যেন নিরাপদে এবং নির্ভয়ে চলাচল করতে পারেন, এমন পরিস্থিতি তৈরিই তার লক্ষ্য। 

এক সময়ে গণশৌচাগার জায়গাটি নারীর জন্য ছিল রীতিমত বিভীষিকার মতো। গণশৌচাগার অথবা পাবলিক টয়লেট ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যা ছিল খুবই কম, মাত্র ৩ শতাংশের মতো। কিন্তু ইউনিলিভারের ডোমেক্সের সঙ্গে অংশীদারিত্বের  মাধ্যমে ‘ভূমিজের’ নেওয়া উদ্যোগের কারণে এখন তৈরি হয়েছে নিরাপদ, পরিষ্কার এবং সহজে ব্যবহার্য শৌচাগার। এসব শৌচাগার ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং কিছু স্থানে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। এ থেকে প্রমাণ হয় যে সঠিক সমাধানের মাধ্যমে অনেক বাধা পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব, শহরকে আরও বেশি মানুষের জন্য জীবনধারণের যোগ্য করে তোলা সম্ভব। 

আগামীর জন্য ফারহানা রশিদের স্বপ্ন এটাই- আমাদের শহরগুলো হয়ে উঠুক সবার জন্য বাসযোগ্য। যারা পরিবর্তন আনতে চান, তাদের প্রতি ফারহানার আহ্বান, পুরাতন ধ্যানধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে, ভবিষ্যতে শহরের নকশাগুলো তৈরি করতে হবে যত্নে এবং সবার জন্য নিরাপত্তা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। উদ্ভাবন এবং পারস্পরিক সহায়তার মধ্য দিয়ে তৈরি হবে আগামীর এমন শহর, যেখানে সবাই নিজের সম্মান ও স্বাধীনতা রক্ষা করে চলতে পারবে।
 
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ‘এক্সেলারেট অ্যাকশন - এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দা ফিউচার’ ক্যাম্পেইনের অধীনে ফারহানা রশিদের একাগ্রতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

ভবিষ্যতের হাল ধরতে চান যারা, সেসব নারীদের জন্য ফারহানা রশিদের উপদেশ- নিজের পরিকল্পনার ওপর বিশ্বাস রাখুন। একাগ্রভাবে কাজ করতে থাকলে একে এক সব রাস্তাই আপনার জন্য খুলে যাবে। সমাজে যে পরিবর্তন আনতে চান, নিজের কাজের মাধ্যমেই সেই পরিবর্তনকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ ব যবহ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ