ট্রাম্পের নেতৃত্বে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত: জেলেনস্কি
Published: 5th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিয়েভেকে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘পরিস্থিতি ঠিক করতে’ চান যাতে ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেন জেলেনস্কি। পোস্টে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আংশিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, “আমি শান্তির প্রতি ইউক্রেনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা কেউই অনন্তকাল যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাই না। টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার টেবিলে আসতে প্রস্তুত ইউক্রেন।”
আরো পড়ুন:
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর কংগ্রেসে প্রথম ভাষণ ট্রাম্পের
কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা ট্রাম্পের
জেলেনস্কি আরো বলেন, “ইউক্রেনবাসীর চেয়ে শান্তি কেউ চায় না। যুদ্ধের অবসানে আমি এবং আমার দল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বে কাজ করতে প্রস্তুত। আমরা দ্রুত এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে চাই।”
জেলেনস্কি প্রথমে ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করে যুদ্ধের অবসানের প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, কিয়েভ চূড়ান্ত চুক্তির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দ্রুত কাজ করতে প্রস্তুত এবং প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে বন্দীদের মুক্তি এবং আকাশে যুদ্ধবিরতি- ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার ড্রোন হামলা বন্ধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোতে বোমা হামলা নিষিদ্ধ করা। পাশাপাশি, রাশিয়া রাজি হলে সমুদ্রেও অবলম্বে যুদ্ধবিরতি। তারপর আমরা পরবর্তী সমস্ত পর্যায়ে খুব দ্রুত এগিয়ে যেতে চাই এবং একটি শক্তিশালী চূড়ান্ত চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে চাই।”
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ইউক্রেনকে জ্যাভলিন মিসাইল দিয়েছিলেন, যা যুদ্ধের পরিস্থিতি বদলে দিয়েছিল। আমরা এর জন্য কৃতজ্ঞ।”
হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাকবিতণ্ডার বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, “গত শুক্রবার আমাদের বৈঠকটি প্রত্যাশিতভাবে হয়নি। এটি সত্যিই দুঃখজনক। এখন সময় এসেছে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানোর এবং ভবিষ্যতে আরও গঠনমূলক সহযোগিতা নিশ্চিত করার।”
তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ বিষয়ক চুক্তি করতে ইউক্রেন প্রস্তুত রয়েছে, যা দেশটিতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন য দ ধ র অবস ন ক জ করত ইউক র ন র জন য প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’