মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিয়েভেকে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘পরিস্থিতি ঠিক করতে’ চান যাতে ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়। 

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেন জেলেনস্কি। পোস্টে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আংশিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, “আমি শান্তির প্রতি ইউক্রেনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা কেউই অনন্তকাল যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাই না। টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার টেবিলে আসতে প্রস্তুত ইউক্রেন।”

আরো পড়ুন:

দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর কংগ্রেসে প্রথম ভাষণ ট্রাম্পের

কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা ট্রাম্পের

জেলেনস্কি আরো বলেন, “ইউক্রেনবাসীর চেয়ে শান্তি কেউ চায় না। যুদ্ধের অবসানে আমি এবং আমার দল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বে কাজ করতে প্রস্তুত। আমরা দ্রুত এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে চাই।”  

জেলেনস্কি প্রথমে ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করে যুদ্ধের অবসানের প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, কিয়েভ চূড়ান্ত চুক্তির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দ্রুত কাজ করতে প্রস্তুত এবং প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে বন্দীদের মুক্তি এবং আকাশে যুদ্ধবিরতি- ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার ড্রোন হামলা বন্ধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোতে বোমা হামলা নিষিদ্ধ করা। পাশাপাশি, রাশিয়া রাজি হলে সমুদ্রেও অবলম্বে যুদ্ধবিরতি। তারপর আমরা পরবর্তী সমস্ত পর্যায়ে খুব দ্রুত এগিয়ে যেতে চাই এবং একটি শক্তিশালী চূড়ান্ত চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে চাই।”

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ইউক্রেনকে জ্যাভলিন মিসাইল দিয়েছিলেন, যা যুদ্ধের পরিস্থিতি বদলে দিয়েছিল। আমরা এর জন্য কৃতজ্ঞ।”  

হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাকবিতণ্ডার বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, “গত শুক্রবার আমাদের বৈঠকটি প্রত্যাশিতভাবে হয়নি। এটি সত্যিই দুঃখজনক। এখন সময় এসেছে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানোর এবং ভবিষ্যতে আরও গঠনমূলক সহযোগিতা নিশ্চিত করার।”

তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ বিষয়ক চুক্তি করতে ইউক্রেন প্রস্তুত রয়েছে, যা দেশটিতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন য দ ধ র অবস ন ক জ করত ইউক র ন র জন য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।

হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ