বিদেশি সহায়তা তহবিল স্থগিতে ট্রাম্পের আবেদন খারিজ করলেন আদালত
Published: 5th, March 2025 GMT
বিদেশি সহায়তা তহবিল স্থগিত (ফ্রিজ) চেয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার মার্কিন উচ্চ আদালত এই সংক্রান্ত রায় দেন। খবর সিএনএনের।
যদিও তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ ছাড়ের সময় নিয়ে কিছু জানায়নি উচ্চ আদালত। তবে হোয়াইট হাউসকে নিম্ন আদালতে বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
সিএনএন বলছে, বুধবারের আদেশটি স্বাক্ষরবিহীন ছিল। চারজন বিচারপতি আদেশে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা হলেন- স্যামুয়েল আলিটো, ক্ল্যারেন্স থমাস, নিল গর্সুচ এবং ব্রেট কাভানাফ। এছাড়া প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস, অ্যামি কোনি ব্যারেট, এলেনা কাগান, সোনিয়া সোটোমায়র এবং কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসনসহ পাঁচ বিচারপতি পক্ষে রায় দেন।
সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকরা উল্লেখ করেছেন, গত সপ্তাহে অর্থ ব্যয় করার জন্য আদালতের নির্দেশিত সময়সীমা ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে। নিম্ন আদালতকে ‘অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ মেনে চলা নিশ্চিত করতে সরকারকে কী বাধ্যবাধকতা মানতে হবে তা স্পষ্ট করা উচিত।’
ভিন্নমতের বিচারকদের মধ্যে আলিটো লিখেছেন, নিম্ন আদালতের বিচারককে এই মামলায় বিদেশি সহায়তা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে আদেশ দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আদালতের সিদ্ধান্তে তিনি ‘স্তম্ভিত’ হয়েছিলেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর নির্বাহী আদেশে বিদেশি সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সেই আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেন বেশ কয়েকটি অলাভজনক সংস্থা। পরে সংস্থাগুলোর অনেকটা পক্ষে রায় দেন দেশটির নিম্ন আদালত।
মার্কিন জেলা আদালতের বিচারক আমির আলী পুরো নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে রায় না দিয়ে সীমিত সিদ্ধান্ত দেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগে অনুমোদিত বৈদেশিক সহায়তা আপাতত স্থগিত বা বাতিল করা যাবে না।
ট্রাম্প প্রশাসন বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করার পরপরই মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাকেও (ইউএসএইড) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। এই সংস্থাটির কয়েক হাজার কর্মী এবং ঠিকাদারকে ইতিমধ্যে ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেককে সাময়িক বরখাস্ত বা প্রশাসনিক ছুটিতেও পাঠানো হয়েছে। এ নিয়েও সমালোচনায় পড়তে হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।