বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে কর্মসূচি নিয়েছে অন্যতম বৃহৎ বামপন্থি দলটি। আজ সকাল ৮টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

বিকেল ৪টায় মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আলোচনা সভা হবে। এ ছাড়া সারাদেশে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সমাবেশ, র‌্যালি, মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালিত হবে।

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষের বিভক্তির পর ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ কলকাতা সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়। একই সম্মেলনে খোকা রায়কে সম্পাদক করে কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ব বাংলা আঞ্চলিক কমিটি তথা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি গঠন করা হয়। স্বাধীনতার পর দলটি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সংক্ষেপে সিপিবি নামে পরিচিত হয়।

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও এর অনেক আগে থেকেই এ দেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯২০ সালে এই ভূখণ্ডে এ আন্দোলনের সূচনা ঘটে। ১৯২৫ সালে ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে সিপিআইর দ্বিতীয় কংগ্রেসে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি গঠিত হয়, যা পরে সিপিবি নামে পরিচিতি পায়।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই কমিউনিস্ট কর্মীদের ওপর হত্যা-নির্যাতন ও জেল-জুলুম-হুলিয়ার খড়্গ নেমে আসে। হাজার হাজার কর্মীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর খাপড়া জেলে কমিউনিস্ট রাজবন্দিদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে সাতজন শহীদ হন। এটাই এ ভূখণ্ডে প্রথম জেল হত্যাকাণ্ড। পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্টরা তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তেভাগা, নানকার, টংকসহ নানা কৃষক-শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন করেছেন তারা। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামেই সিপিবি অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। দীর্ঘ চলার পথে আন্দোলন-সংগ্রামে সিপিবির অসংখ্য নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। 

পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলটি বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক দ্বিদলীয় মেরূকরণের বাইরে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প বলয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। এই লক্ষ্য পূরণে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে তারা। 

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স দলের সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য সারাদেশে দলের সব কমিটি ও শাখার প্রতি আহ্বান জানান তারা। 

সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বা

দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, সন্ত্রাসে জনজীবনে আতঙ্ক বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিবি। দলটি বলেছে, সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে উপদেষ্টারা সংকটের কথা স্বীকার না করলেও দিন দিন জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা বেড়েই চলেছে। এর দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তার প্রধান ড.

মুহাম্মদ ইউনূসকেই নিতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ হলো চোখ বুজে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘মব সন্ত্রাস’ চলতে দেওয়া। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।

গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।

নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।

এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা আইনজীবী ফোরামের পদযাত্রা
  • রাবি উপাচার্যের চেয়ার টেনে পদ্মায় ফেলার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
  • ২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
  • ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন