ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 6th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ গতকাল বুধবার নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোয় ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার বিষয়টি আরও অনিশ্চয়তার পথে এগিয়ে গেল।
মাইক ওয়াল্টজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা করেছি, আমরা এক ধাপ পিছিয়ে এসেছি।’ তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ‘এই সম্পর্কের সব দিক’ স্থগিত ও পর্যালোচনা করছে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা শুরুর প্রাথমিক পর্যায় থেকেই কিয়েভের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে গত সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইউক্রেনকে আর কোনো সামরিক সহায়তা দেওয়া হবে না। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যকার বাগ্বিতণ্ডার পর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিতে বিপদে ইউক্রেন ০৪ মার্চ ২০২৫সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা এবং ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চুক্তি করতে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি। শেষ পর্যন্ত বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যেতে বলা হয়।
এখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ রাখার বিষয়টি আংশিক নাকি পুরোপুরি কিংবা এটা কত সময়ের জন্য কার্যকর থাকতে পারে—এসবের কিছুই জানানো হয়নি।
এদিকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সংবাদ সম্মেলনে সামরিক সহায়তার বিষয়ে বলেন, এটি বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তহবিল ‘পুনর্বিবেচনা’ করছে।
তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভ অনেকাংশেই ওয়াশিংটনের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এ পর্যায়ে এসে মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়া চলমান যুদ্ধে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও পড়ুনট্রাম্প সামরিক সহায়তা স্থগিতের আগে ইউক্রেনকে যেসব অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র০৪ মার্চ ২০২৫সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করা হলে যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুতর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
আরও পড়ুন‘অনুতাপ’ জানিয়ে জেলেনস্কি বললেন, ট্রাম্পের ‘বলিষ্ঠ নেতৃত্বের’ অধীনে কাজ করতে প্রস্তুত আছেন০৪ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।