করোনার ৫ বছর: যে দেশগুলো কখনো লকডাউনে যায়নি
Published: 6th, March 2025 GMT
এখন থেকে পাঁচ বছর আগে ২০২০ সালের মার্চে বিশ্বে আতঙ্কজনকভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। সংক্রমণ রোধ ও মানুষের মৃত্যু কমানোর চেষ্টায় লকডাউনের মতো বিধিনিষেধে আটকা পড়ে অনেক দেশ। এতে ঘরবন্দী হয়ে পড়েন কোটি কোটি মানুষ।
তবে আতঙ্কের মধ্যেও কিছু দেশ লকডাউনের পথে হাঁটেনি। নাগরিকদের চলাচলে ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় আরোপ করেনি কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, দেশগুলোর এ সিদ্ধান্ত কি সঠিক ছিল?
মার্চে ঘরবন্দী হয়ে পড়া কোটি কোটি মানুষ বাড়িঘরের জানালা দিয়ে এমন এক পৃথিবী দেখতে শুরু করেন, যার সঙ্গে তাঁরা পরিচিত ছিলেন না কখনো। আকস্মিক ‘ঘরবন্দী’ হয়ে তাঁদের জীবন আচমকাই চারদেয়াল ও কম্পিউটার স্ক্রিনে সংকুচিত হয়ে পড়ে।
বিশ্বজুড়ে জাতীয় নেতারা টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে লোকজনকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন। শুধু জরুরি প্রয়োজনে বা দিনে একবার শরীরচর্চার জন্য বাইরে বের হতে বলেন। এসবই ছিল ভয়ানক গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকে রাখার চেষ্টা তাঁদের। তবে এরই মধ্যে দেশে দেশে মারা গেছেন হাজারো মানুষ।
আমি একজন চিকিৎসক। তাই মানুষের জীবন রক্ষার ব্যাপারে আমি অবশ্যই যত্নবান হব। আমরা প্রত্যেক মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই।নিল ব্রাসেলারস, সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের মহামারিবিশেষজ্ঞলন্ডনে নাট্যকর্মী টনি বেকিংহ্যাম ও তাঁর সঙ্গী সিদ্ধান্ত নেন, প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যায় শহরের কেন্দ্রে তাঁরা শরীরচর্চা চালিয়ে যাবেন। বেকিংহ্যাম বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, আশপাশে কেউ নেই, এটা দেখা হবে সত্যি মজার।’ কিন্তু না, বাইরে গিয়ে তাঁরা মজা পাননি। পিকাডিলি সার্কাস ও লিচেস্টার স্কোয়ারের মতো এই জুটির সুপরিচিত জায়গাগুলো, যেখানে সব সময় মানুষের কোলাহলে প্রাণচঞ্চল থাকে, সেখানে শান্ত-নীরবতা। ‘এটা সত্যিই ছিল বিরক্তিকর’, বলেন তিনি।
এভাবে নগরের রাস্তাঘাট, উৎসবের ভেন্যু ও ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে লোকজনের হারিয়ে যাওয়া প্রথম শুরু হয় চীনে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শুরু হয় এ দেশেই। ১১ মার্চ ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা দেয়। এরপর দ্রুতই অন্যান্য দেশ কোয়ারেন্টিনের মতো পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়। মানব ইতিহাসে লোকজনকে এভাবে বিধিনিষেধে বাঁধা পড়ার ঘটনা আগে আর কখনো দেখা যায়নি।
অবশ্য কিছু দেশ হাঁটে ভিন্নপথে। সুইডেন, তাইওয়ান, উরুগুয়ে, আইসল্যান্ড ও অল্প আরও কয়েকটি দেশ লকডাউনের মতো মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপ কখনোই কার্যকর করেনি। এর বদলে দেশগুলো বেশি সংখ্যায় মানুষের একত্র হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা, সংক্রমিত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা বা ভ্রমণে বিধিনিষেধের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
অবশ্য কিছু দেশ হাঁটে ভিন্নপথে। সুইডেন, তাইওয়ান, উরুগুয়ে, আইসল্যান্ড ও অল্প আরও কয়েকটি দেশ লকডাউনের মতো মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপ কখনোই কার্যকর করেনি। এর বদলে দেশগুলো বেশি সংখ্যায় মানুষের একত্র হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা, সংক্রমিত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা বা ভ্রমণে বিধিনিষেধের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে।করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পাঁচ বছর পর অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও তথ্য-উপাত্তের সন্নিবেশ ঘটেছে, হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি নানা মূল্যায়ন। তাতে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো না নিয়ে ওই সব দেশ ঠিক কাজ করেছে কি না, সে বিষয় উঠে এসেছে।
সুইডেনের গোথেনবার্গ শহরটি কুকুরপ্রেমীদের ‘স্বর্গ’, বলছিলেন মানবসম্পদ কর্মকর্তা ও ব্লগার অ্যানা ম্যাক ম্যানাস। তিনি বলেন, ‘কুকুরের যত্নআত্তি করার জন্য খুবই উপযোগী শহর আছে আমাদের এখানে। এমনকি আমাদের আছে কুকুরের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে সিনেমাও।’ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সুইডেনের প্রতিবেশী নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কও ২০২০ সালের মার্চে জাতীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণা করে। কিন্তু নিজ দেশ সুইডেনের সরকার এমন পদক্ষেপে যায়নি, সেটি জানান ম্যাক ম্যানাস।
লকডাউনের কারণে কিছু দেশে লোকজন এমনকি তাঁদের পোষা কুকুর নিয়ে কীভাবে ঘরের বাইরে বের হতে পারেননি, তা–ও শুনেছেন ম্যাক ম্যানাস। দক্ষিণ আফ্রিকা এ রকম একটি দেশ। এটা ম্যাক ম্যানাসকে ব্যথিত করে। ওই সময় ব্লগে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের দেশের সরকার একটা নিরাপদ ও সঠিক পন্থায় কাজ করছে বলে আমি মনে করি।’ তবে তাঁর অনেক সহকর্মী জনস্বাস্থ্য–সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা, যেমন মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ভিড় না করা—সব সময় মেনে না চলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
করোনায় তাঁর দেশ সুইডেনে ঠিক কত মানুষ মারা গেছেন, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে চান ম্যানাস। সেই সঙ্গে তাঁর আছে এ প্রশ্নও, ‘লকডাউন হলে দেশে কি আরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো যেত?’
বিজ্ঞানীরা ম্যাক ম্যানাসের এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের ইংবর্গ ফরথুন ও সুইডেনসহ কয়েকটি দেশের গবেষকেরা ২০২৪ সালের মে মাসে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। সেখানে লকডাউনে না যাওয়া সুইডেন এবং কড়াকড়িভাবে লকডাউন আরোপ করা নরওয়ে, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডে মহামারির প্রথম কয়েক বছরে করোনায় মৃত্যুর ওপর তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এ চিত্রে দেখা গেছে, সুইডেন তার নাগরিকদের ওপর কড়াকড়িভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার বদলে প্রধানত স্বেচ্ছা আচরণ পরিবর্তনমূলক পদক্ষেপে জোর দিয়েছে। বিপরীতে উল্লিখিত অপর তিনটি দেশ করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে কঠোর লকডাউনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এসব দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জনজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকা অনেক কিছুই বন্ধ করে দেয়, অনুরোধ জানায় লোকজনকে ঘরে থেকে কাজ করতে। তবে এসব করেও লোকজনকে ঘরে আটকে রাখা যায়নি।
সুইডেন তার নাগরিকদের ওপর কড়াকড়িভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার বদলে প্রধানত স্বেচ্ছা আচরণ পরিবর্তনমূলক পদক্ষেপে জোর দিয়েছে। বিপরীতে অপর তিন দেশ করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে কঠোর লকডাউনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এসব দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জনজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকা অনেক কিছুই বন্ধ করে দেয়, অনুরোধ জানায় লোকজনকে ঘরে থেকে কাজ করতে। তবে এসব করেও লোকজনকে ঘরে আটকে রাখা যায়নি।সম্ভবত আশ্চর্যজনক না হলেও গবেষকেরা দেখেছেন, ২০২০ সালের বসন্ত ও শীতে মহামারির প্রাথমিক ঢেউ চলার সময় সুইডেনে মৃত্যুর হার লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। ওই সময় কোভিড-১৯ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আরও অবাধে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়। কিন্তু সে বছর অন্য তিনটি দেশে বাড়তি মৃত্যুহার কমে গেলেও ২০২১ ও ২০২২ সালে সুইডেনের তুলনায় বেড়েছে।
আরও পড়ুনবহুমাত্রিক বৈশ্বিক ব্যর্থতাই করোনা মহামারির কারণ১৬ অক্টোবর ২০২২জনসংখ্যার আকার বিবেচনায় চার দেশেই মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি ছিল, বলেন ফরথুন। লকডাউন অংশত মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সময়কালকে প্রভাবিত করেছিল। উদাহরণ হিসেবে নরওয়ে সম্পর্কে ফরথুন বলেন, ‘আমরা সম্ভবত কিছু বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাঁচিয়ে রেখেছি।’ যদিও ২০২০ সালে কেয়ার হোমে উচ্চ সংখ্যায় মৃত্যুর জন্য সুইডেনের কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করা হয়েছিল।
কিছু অর্থনীতিবিদ করোনাকালে এই চার নর্ডিক দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সূচকের তুলনা করেছেন। তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, সামগ্রিকভাবে তুলনামূলক কম অর্থনৈতিক ব্যয়ের কারণে সুইডেনের পদ্ধতিটি ন্যায্য ছিল। কিন্তু এ ধরনের যুক্তি বিতর্কিত এবং সুইডেনে লকডাউন ঘোষণা না করা এখনো কারও কারও মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছে।
নিল ব্রাসেলারস সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের একজন মহামারি বিশেষজ্ঞ। তিনি নিজ দেশের গ্রহণ করা কোভিড-১৯ কৌশলের সমালোচনা করেন। মহামারি চলাকালে বেলজিয়ামে চলে যান তিনি।
নিল বলেন, ‘আমি একজন চিকিৎসক। তাই মানুষের জীবন রক্ষায় ব্যাপারে আমি অবশ্যই যত্নবান হব। আমরা প্রত্যেক মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই।’
আরও পড়ুননতুন রূপে এসেছে করোনা, দাপট দেখাবে কতটা?২৭ ডিসেম্বর ২০২৩আরও পড়ুনকরোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত, ঝুঁকি কতখানি২৪ ডিসেম্বর ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ন ষ র জ বন ২০২০ স ল পদক ষ প ল কজনক র জন য ন র মত ক জ কর র ওপর অবশ য র বদল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিরোধী তালিকায় থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত এবং একই অভিযোগে ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার বা সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার
ববির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় থাকা ইবির ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ‘শাস্তি নির্ধারণ কমিটি’ করবেন উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
এদিকে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। যাদের পড়াশোনা শেষ হয়েছে, সেই শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল করা হবে। আর যারা অধ্যয়নরত, তাদের বহিষ্কার করা হবে।
এর আগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় অবতীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণে গত ১৫ মার্চ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন।
এই কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, বিভিন্ন তথ্যচিত্র, ভিডিও এবং পত্রিকার খবর পর্যালোচনা করে তালিকায় থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানবিরোধী এবং নিবর্তনমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা পায়।
কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাময়িক বরখাস্তের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা হলেন: ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম আক্তারুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মিয়া রাশিদুজ্জামান।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনসহ আরো রয়েছেন, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল হক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।
সাসপেন্ড হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকায় রয়েছেন প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন খান ও আব্দুল হান্নান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট, একই দফতরের উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম সেলিম, প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার ড. ইব্রাহীম হোসেন সোনা।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শাখা কর্মকর্তা উকীল উদ্দিনসহ তালিকায় নাম রয়েছে ফার্মেসি বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম (শিমুল), আইসিটি সেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াস, অর্থ ও হিসাব বিভাগের শাখা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফি) শেখ আবু সিদ্দিক রোকন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমানের।
বহিষ্কার ও সদন বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের বিপুল খান, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের মেহেদী হাসান হাফিজ ও শাহীন আলম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের রতন রায়।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের মুন্সি কামরুল হাসান অনিকসহ তালিকায় রয়েছেন, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের হুসাইন মজুমদার, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের তরিকুল ইসলাম।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের মৃদুল রাব্বী, ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের ফজলে রাব্বী, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শাকিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিমুল খান, আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের কামাল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মাসুদ রানা, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মেজবাহুল ইসলাম বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের তালিকায় রয়েছেন।
সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের অনিক কুমার, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আব্দুল আলিম, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিজন রায়, শেখ সোহাগ ও শাওনও এই শাস্তি পেয়েছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় শাস্তি পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের তানভীর ও শেখ সাদি, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মাজহারুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মনিরুল ইসলাম আসিফ, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মারুফ ইসলাম, চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের পিয়াস, বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ফারহান লাবিব ধ্রুব, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের প্রাঞ্জল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন।
ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের রাফিদ, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আদনান আলি পাটোয়ারি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের লিয়াফত ইসলাম রাকিব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ইমামুল মুক্তাকী শিমুলও শাস্তির তালিকায় রয়েছেন।
এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারী হিসেবে এই ৬৩ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও তাদের উস্কানিদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনকারী অনেকেই ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ অভিযুক্তদেরও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা/তানিম/রাসেল