করোনার ৫ বছর: যে দেশগুলো কখনো লকডাউনে যায়নি
Published: 6th, March 2025 GMT
এখন থেকে পাঁচ বছর আগে ২০২০ সালের মার্চে বিশ্বে আতঙ্কজনকভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। সংক্রমণ রোধ ও মানুষের মৃত্যু কমানোর চেষ্টায় লকডাউনের মতো বিধিনিষেধে আটকা পড়ে অনেক দেশ। এতে ঘরবন্দী হয়ে পড়েন কোটি কোটি মানুষ।
তবে আতঙ্কের মধ্যেও কিছু দেশ লকডাউনের পথে হাঁটেনি। নাগরিকদের চলাচলে ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় আরোপ করেনি কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, দেশগুলোর এ সিদ্ধান্ত কি সঠিক ছিল?
মার্চে ঘরবন্দী হয়ে পড়া কোটি কোটি মানুষ বাড়িঘরের জানালা দিয়ে এমন এক পৃথিবী দেখতে শুরু করেন, যার সঙ্গে তাঁরা পরিচিত ছিলেন না কখনো। আকস্মিক ‘ঘরবন্দী’ হয়ে তাঁদের জীবন আচমকাই চারদেয়াল ও কম্পিউটার স্ক্রিনে সংকুচিত হয়ে পড়ে।
বিশ্বজুড়ে জাতীয় নেতারা টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে লোকজনকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন। শুধু জরুরি প্রয়োজনে বা দিনে একবার শরীরচর্চার জন্য বাইরে বের হতে বলেন। এসবই ছিল ভয়ানক গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকে রাখার চেষ্টা তাঁদের। তবে এরই মধ্যে দেশে দেশে মারা গেছেন হাজারো মানুষ।
আমি একজন চিকিৎসক। তাই মানুষের জীবন রক্ষার ব্যাপারে আমি অবশ্যই যত্নবান হব। আমরা প্রত্যেক মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই।নিল ব্রাসেলারস, সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের মহামারিবিশেষজ্ঞলন্ডনে নাট্যকর্মী টনি বেকিংহ্যাম ও তাঁর সঙ্গী সিদ্ধান্ত নেন, প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যায় শহরের কেন্দ্রে তাঁরা শরীরচর্চা চালিয়ে যাবেন। বেকিংহ্যাম বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, আশপাশে কেউ নেই, এটা দেখা হবে সত্যি মজার।’ কিন্তু না, বাইরে গিয়ে তাঁরা মজা পাননি। পিকাডিলি সার্কাস ও লিচেস্টার স্কোয়ারের মতো এই জুটির সুপরিচিত জায়গাগুলো, যেখানে সব সময় মানুষের কোলাহলে প্রাণচঞ্চল থাকে, সেখানে শান্ত-নীরবতা। ‘এটা সত্যিই ছিল বিরক্তিকর’, বলেন তিনি।
এভাবে নগরের রাস্তাঘাট, উৎসবের ভেন্যু ও ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে লোকজনের হারিয়ে যাওয়া প্রথম শুরু হয় চীনে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শুরু হয় এ দেশেই। ১১ মার্চ ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা দেয়। এরপর দ্রুতই অন্যান্য দেশ কোয়ারেন্টিনের মতো পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়। মানব ইতিহাসে লোকজনকে এভাবে বিধিনিষেধে বাঁধা পড়ার ঘটনা আগে আর কখনো দেখা যায়নি।
অবশ্য কিছু দেশ হাঁটে ভিন্নপথে। সুইডেন, তাইওয়ান, উরুগুয়ে, আইসল্যান্ড ও অল্প আরও কয়েকটি দেশ লকডাউনের মতো মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপ কখনোই কার্যকর করেনি। এর বদলে দেশগুলো বেশি সংখ্যায় মানুষের একত্র হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা, সংক্রমিত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা বা ভ্রমণে বিধিনিষেধের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
অবশ্য কিছু দেশ হাঁটে ভিন্নপথে। সুইডেন, তাইওয়ান, উরুগুয়ে, আইসল্যান্ড ও অল্প আরও কয়েকটি দেশ লকডাউনের মতো মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপ কখনোই কার্যকর করেনি। এর বদলে দেশগুলো বেশি সংখ্যায় মানুষের একত্র হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা, সংক্রমিত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা বা ভ্রমণে বিধিনিষেধের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে।করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পাঁচ বছর পর অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও তথ্য-উপাত্তের সন্নিবেশ ঘটেছে, হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি নানা মূল্যায়ন। তাতে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো না নিয়ে ওই সব দেশ ঠিক কাজ করেছে কি না, সে বিষয় উঠে এসেছে।
সুইডেনের গোথেনবার্গ শহরটি কুকুরপ্রেমীদের ‘স্বর্গ’, বলছিলেন মানবসম্পদ কর্মকর্তা ও ব্লগার অ্যানা ম্যাক ম্যানাস। তিনি বলেন, ‘কুকুরের যত্নআত্তি করার জন্য খুবই উপযোগী শহর আছে আমাদের এখানে। এমনকি আমাদের আছে কুকুরের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে সিনেমাও।’ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সুইডেনের প্রতিবেশী নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কও ২০২০ সালের মার্চে জাতীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণা করে। কিন্তু নিজ দেশ সুইডেনের সরকার এমন পদক্ষেপে যায়নি, সেটি জানান ম্যাক ম্যানাস।
লকডাউনের কারণে কিছু দেশে লোকজন এমনকি তাঁদের পোষা কুকুর নিয়ে কীভাবে ঘরের বাইরে বের হতে পারেননি, তা–ও শুনেছেন ম্যাক ম্যানাস। দক্ষিণ আফ্রিকা এ রকম একটি দেশ। এটা ম্যাক ম্যানাসকে ব্যথিত করে। ওই সময় ব্লগে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের দেশের সরকার একটা নিরাপদ ও সঠিক পন্থায় কাজ করছে বলে আমি মনে করি।’ তবে তাঁর অনেক সহকর্মী জনস্বাস্থ্য–সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা, যেমন মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ভিড় না করা—সব সময় মেনে না চলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
করোনায় তাঁর দেশ সুইডেনে ঠিক কত মানুষ মারা গেছেন, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে চান ম্যানাস। সেই সঙ্গে তাঁর আছে এ প্রশ্নও, ‘লকডাউন হলে দেশে কি আরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো যেত?’
বিজ্ঞানীরা ম্যাক ম্যানাসের এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের ইংবর্গ ফরথুন ও সুইডেনসহ কয়েকটি দেশের গবেষকেরা ২০২৪ সালের মে মাসে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। সেখানে লকডাউনে না যাওয়া সুইডেন এবং কড়াকড়িভাবে লকডাউন আরোপ করা নরওয়ে, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডে মহামারির প্রথম কয়েক বছরে করোনায় মৃত্যুর ওপর তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এ চিত্রে দেখা গেছে, সুইডেন তার নাগরিকদের ওপর কড়াকড়িভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার বদলে প্রধানত স্বেচ্ছা আচরণ পরিবর্তনমূলক পদক্ষেপে জোর দিয়েছে। বিপরীতে উল্লিখিত অপর তিনটি দেশ করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে কঠোর লকডাউনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এসব দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জনজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকা অনেক কিছুই বন্ধ করে দেয়, অনুরোধ জানায় লোকজনকে ঘরে থেকে কাজ করতে। তবে এসব করেও লোকজনকে ঘরে আটকে রাখা যায়নি।
সুইডেন তার নাগরিকদের ওপর কড়াকড়িভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার বদলে প্রধানত স্বেচ্ছা আচরণ পরিবর্তনমূলক পদক্ষেপে জোর দিয়েছে। বিপরীতে অপর তিন দেশ করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে কঠোর লকডাউনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এসব দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জনজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকা অনেক কিছুই বন্ধ করে দেয়, অনুরোধ জানায় লোকজনকে ঘরে থেকে কাজ করতে। তবে এসব করেও লোকজনকে ঘরে আটকে রাখা যায়নি।সম্ভবত আশ্চর্যজনক না হলেও গবেষকেরা দেখেছেন, ২০২০ সালের বসন্ত ও শীতে মহামারির প্রাথমিক ঢেউ চলার সময় সুইডেনে মৃত্যুর হার লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। ওই সময় কোভিড-১৯ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আরও অবাধে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়। কিন্তু সে বছর অন্য তিনটি দেশে বাড়তি মৃত্যুহার কমে গেলেও ২০২১ ও ২০২২ সালে সুইডেনের তুলনায় বেড়েছে।
আরও পড়ুনবহুমাত্রিক বৈশ্বিক ব্যর্থতাই করোনা মহামারির কারণ১৬ অক্টোবর ২০২২জনসংখ্যার আকার বিবেচনায় চার দেশেই মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি ছিল, বলেন ফরথুন। লকডাউন অংশত মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সময়কালকে প্রভাবিত করেছিল। উদাহরণ হিসেবে নরওয়ে সম্পর্কে ফরথুন বলেন, ‘আমরা সম্ভবত কিছু বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাঁচিয়ে রেখেছি।’ যদিও ২০২০ সালে কেয়ার হোমে উচ্চ সংখ্যায় মৃত্যুর জন্য সুইডেনের কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করা হয়েছিল।
কিছু অর্থনীতিবিদ করোনাকালে এই চার নর্ডিক দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সূচকের তুলনা করেছেন। তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, সামগ্রিকভাবে তুলনামূলক কম অর্থনৈতিক ব্যয়ের কারণে সুইডেনের পদ্ধতিটি ন্যায্য ছিল। কিন্তু এ ধরনের যুক্তি বিতর্কিত এবং সুইডেনে লকডাউন ঘোষণা না করা এখনো কারও কারও মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছে।
নিল ব্রাসেলারস সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের একজন মহামারি বিশেষজ্ঞ। তিনি নিজ দেশের গ্রহণ করা কোভিড-১৯ কৌশলের সমালোচনা করেন। মহামারি চলাকালে বেলজিয়ামে চলে যান তিনি।
নিল বলেন, ‘আমি একজন চিকিৎসক। তাই মানুষের জীবন রক্ষায় ব্যাপারে আমি অবশ্যই যত্নবান হব। আমরা প্রত্যেক মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই।’
আরও পড়ুননতুন রূপে এসেছে করোনা, দাপট দেখাবে কতটা?২৭ ডিসেম্বর ২০২৩আরও পড়ুনকরোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত, ঝুঁকি কতখানি২৪ ডিসেম্বর ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ন ষ র জ বন ২০২০ স ল পদক ষ প ল কজনক র জন য ন র মত ক জ কর র ওপর অবশ য র বদল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।