পাবনার চাটমোহর উপজেলায় একটি ইউনিয়ন কৃষক দলের কমিটিতে ‘আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মীদের’ পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে সদ্য ঘোষিত বিলচলন ইউনিয়ন কৃষক দলের কমিটির ১০ জন নেতা গতকাল বুধবার উপজেলা কৃষক দলের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তাঁরা কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপি ও কৃষক দল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা কৃষক দল চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়ন কৃষক দলের ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামকে সভাপতি, বাবু মিয়াকে সহসভাপতি, নটাবাড়িয়া গ্রামের আবদুল মোমিমকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও দোদারিয়া গ্রামের আলহাজ হোসেনকে প্রচার সম্পাদক করা হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ এই চারজন আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করা নেতারা হলেন, নবগঠিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জনি হোসেন, যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক মহসিন আলী, সহ–দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন, সহশিক্ষা ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আলিফ হোসেন, সহযোগাযোগ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম, সদস্য আমিরুল ইসলাম ও আক্কাস আলী।

বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আফছার আলী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমান বলেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি পদ পাওয়া নজরুল ইসলামের বাড়িতে নৌকা প্রতীকের কার্যালয় ছিল। বিগত ১৬ বছরে তাঁরা কোনো দিন বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নতুন কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম না। আমি ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল করেছি। আমি আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম, এখনো আছি। ভবিষ্যতেও থাকব। প্রতিপক্ষ মিথ্য অভিযোগ তুলছে। তারা প্রমাণ করে দিক, আমি আওয়ামী লীগ করেছি।’

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব আজাদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। কমিটিতে না আসতে পেরে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যাঁরা অভিযোগ তুলেছেন, তাঁরা প্রমাণ দিতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম আওয় ম ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ