চাটমোহরে ‘আওয়ামী লীগ কর্মীরা’ কৃষক দলে পদ পাওয়ার অভিযোগে ১০ জনের পদত্যাগ
Published: 6th, March 2025 GMT
পাবনার চাটমোহর উপজেলায় একটি ইউনিয়ন কৃষক দলের কমিটিতে ‘আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মীদের’ পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে সদ্য ঘোষিত বিলচলন ইউনিয়ন কৃষক দলের কমিটির ১০ জন নেতা গতকাল বুধবার উপজেলা কৃষক দলের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তাঁরা কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় বিএনপি ও কৃষক দল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা কৃষক দল চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়ন কৃষক দলের ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামকে সভাপতি, বাবু মিয়াকে সহসভাপতি, নটাবাড়িয়া গ্রামের আবদুল মোমিমকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও দোদারিয়া গ্রামের আলহাজ হোসেনকে প্রচার সম্পাদক করা হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ এই চারজন আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করা নেতারা হলেন, নবগঠিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জনি হোসেন, যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক মহসিন আলী, সহ–দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন, সহশিক্ষা ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আলিফ হোসেন, সহযোগাযোগ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম, সদস্য আমিরুল ইসলাম ও আক্কাস আলী।
বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আফছার আলী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমান বলেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি পদ পাওয়া নজরুল ইসলামের বাড়িতে নৌকা প্রতীকের কার্যালয় ছিল। বিগত ১৬ বছরে তাঁরা কোনো দিন বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নতুন কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম না। আমি ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল করেছি। আমি আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম, এখনো আছি। ভবিষ্যতেও থাকব। প্রতিপক্ষ মিথ্য অভিযোগ তুলছে। তারা প্রমাণ করে দিক, আমি আওয়ামী লীগ করেছি।’
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব আজাদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। কমিটিতে না আসতে পেরে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যাঁরা অভিযোগ তুলেছেন, তাঁরা প্রমাণ দিতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল ইসল ম আওয় ম ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ