আলাউদ্দিন বাবু যখন ক্রিজে যাচ্ছিলেন তখন পারটেক্সের জয়ের সমীকরণ কঠিন ছিল না। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের দেওয়া ৩০০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পারটেক্সের ৬৭ বলে ৯৭ রান লাগত। কিন্তু হাতে তাদের উইকেট ছিল না।

আলাউদ্দিন ক্রিজে গিয়েছিলেন নয় নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে। কিছুক্ষণ পরই থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান শালেহিন রিফাত সাদ (১৩) ফেরেন সাজঘরে। সেখান থেকে জয়ের চিন্তা করা কঠিন ছিল। প্রাইম ব্যাংক টানা দ্বিতীয় জয়ের অপেক্ষার প্রহর গুনছিল। কিন্তু আলাউদ্দিন তাদের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান।

৩২ বলে ৭৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে। ২৪৩.

৭৫ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ৭ ছক্কা। তাতে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় নাটকীয়ভাবে। ৪৭ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ২ ওভার হাতে রেখে পারটেক্সকে ৩ উইকেটে দারুণ এক জয় এনে দেন আলাউদ্দিন। ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতে। ব্যাটিং ঝড় তোলার আগে বল হাতে ৬১ রানে ২ উইকেট নেন। তাতে তার দিনটা রাঙায় দারুণভাবে।

আরো পড়ুন:

মুশফিকময় দিনে অঙ্কনের ফিফটি, হৃদয়ের ঝড়

প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে ‘ফেল’ সাব্বির

টস হিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রাইম ব্যাংক শাহাদাত হোসেন দিপুর ৬৪ ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ৬৯ রানে ৮ উইকেটে ২৯৯ রানের পুঁজি পায়। শামীম আগের দিন ৯৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছিলেন। আজ ৬০ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় সাজান ৬৯ রানের ইনিংস। শাহাদত ৫১ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৬৪ রান করেন।

ইনিংসের শুরুতে নাঈম শেখ ৬২ বলে ৪৬ রান করেন। অধিনায়ক জাকির হাসান ৪৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস উপহার দেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বড় সংগ্রহ পেলেও পারটেক্সও জবাব দেয় দারুণভাবে।

দুই ওপেনার জয়রাজ শেখ ও জসিম উদ্দিন সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হলেও রুবেল মিয়ার ৪১ ও সাব্বির রহমানের ৫৩ রানে ম্যাচে ফেরে তারা। এরপর চটজদলি কয়েকটি উইকেট হারালেও বিপদে পড়তে হয়নি তাদেরকে। আহরার খানের ৩৬ বলে ৪৪ ও আলাউদ্দিনের শেষের ঝড়ে প্রথম জয় তুলে নেয় পারটেক্স।

প্রাইম ব্যাংকের বোলিং এদিন ভালো হয়নি। হাসান মাহমুদ ৮০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। নাজমুল অপু ৬১ রানে ২ এবং আরাফাত সানী ৫০ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ