রূপগঞ্জে পুলিশের উপর হামলা ও মারধরে ৫ সিএনজি চালক গ্রেপ্তার
Published: 6th, March 2025 GMT
রূপগঞ্জে পুলিশের উপর সিএনজি চালকদের হামলা ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ সিএনজি চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ভোর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেফতাকৃতরা হলো- উপজেলার গুতিয়াবো এলাকার সিএনজি চালক আব্দুর রউফ, পিতলগঞ্জ এলাকার কাউসার, কাঞ্চন মায়াবাড়ী এলাকার ফরদৌস, আরিফ ও বাদল।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, গতকাল বুধবার (৫ মার্চ) পুলিশের উপর চড়াও হয়ে দুজনকে আহত করার ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার এসআই ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আর ও ১৫০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
সেই মামলার ভিত্তিতে পুলিশ বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আব্দুর রউফ, কাউসার, ফেরদৌস, আরিফ ও বাদলকে গ্রেফতার করে।
পরে গ্রেফতারকৃতদের জজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয় বলে জানান রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী।
এর আগে বুধবার (৫ মার্চ) সকালে পূর্বাচল উপশহরের কুঁড়িল বিশ্বরোড এলাকায় তিনশ' ফুট সড়কে চলাচলরত সিএনজি চালকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে গাড়ি প্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে বিআরটিসি বাসের ঠিকাদারের নিয়োজিত রাকিব ও জিহাদের লোকজন। চাঁদা না দেয়ায় বেশ কয়েকজন সিএনজি চালকদের মারধেরসহ কয়েকটি সিএনজি ভাংচুর করে তারা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে সিএনজি চালকরা একত্রিত হয়ে তিনশ' ফুট সড়কের কাঞ্চন সেতুর পশ্চিমপাড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে পূর্বাচল চায়না ক্যাম্প থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে। এসময় বিক্ষুব্ধ সিএনজি চালকরা পুলিশের এসআই আবু ছাইম ও কনস্টেবল বাচ্চু মিয়াকে মারধর করে আহত করে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ থ ন স এনজ
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।