আমাদের নিকটতম বিবর্তনীয় আত্মীয় হিসেবে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে নিয়ান্ডারথাল মানব (হোমো নিয়ান্ডারথালেনসিস)।
১৮৬৩ সাল পর্যন্ত নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রথম জীবাশ্মগুলো সেভাবে স্বীকৃত হয়নি। যদিও কয়েক দশক আগে সেগুলো আবিষ্কৃত। দীর্ঘ সময় ধরে নিয়ান্ডারথালরা হোমো স্যাপিয়েন্স ও প্রথম বনমানুষের মতো প্রাক-মানব পূর্বপুরুষদের মধ্যে অনুপস্থিত সংযোগের একটি মডেল হিসেবে গণ্য ছিল।
অতীতে নিয়ান্ডারথালদের একটি ইউরোপীয় প্রজাতি বলে মনে করা হতো, যারা কোনো চিহ্ন ছাড়াই অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। বিশ্বাস করা হতো যে তাদের শারীরিক, বৌদ্ধিক ও প্রযুক্তিগত কিছু তুলনামূলক-দুর্বলতা তাদের বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিয়েছিল। তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিল ক্রো-ম্যাগনন, প্রাথমিক হোমো স্যাপিয়েন্স।
গবেষণার অগ্রগতি নিয়ান্ডারথালদের সম্পর্কে পুরোনো নিন্দনীয় দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই উল্টে দিয়েছে। আমরা এখন জানি যে আধুনিক মানুষ এবং নিয়ান্ডারথালদের ৫ লক্ষ বছরেরও কম সময় আগে একটি সাধারণ আফ্রিকান পূর্বপুরুষ ছিল। এখনও সমস্ত মানুষের জিনোমে ১ থেকে ৪ শতাংশ নিয়ান্ডারথাল ডিএনএ রয়েছে।
নিয়ান্ডারথালদের ইতিহাস সম্পর্কে যে বিষয়টি আমাদের আচ্ছন্ন করে তা হলো, তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বসবাসকারী প্রতিটি স্থানে হোমো স্যাপিয়েন্সরা তাদের প্রতিস্থাপিত করেছে। আজ বিশ্বাস করা হয় যে নিয়ান্ডারথাল ও হোমো স্যাপিয়েন্স, আমাদের প্রজাতি, প্রায় চার লক্ষ বছর আগে আবির্ভূত হতে শুরু করে। প্রথমটি ইউরোপে এবং দ্বিতীয়টি আফ্রিকায়। কিন্তু প্রায় দুই লক্ষ বছর ধরে তাদের কঙ্কালের পার্থক্য সুনির্দিষ্ট ছিল। দুই লক্ষ বছর আগে থেকে, বিশেষ করে এক লাখ বিশ হাজার বছর আগে থেকে, নিয়ান্ডারথালদের শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যগুলো– যা হাড়ের মধ্যে পাওয়া যায়– আরও স্পষ্ট হতে শুরু করে। তাদের বাহ্যিক চেহারা কেমন ছিল তা এখনও জানা যায়নি। ভৌগোলিক অঞ্চল বা নির্দিষ্ট জনসংখ্যা অনুসারে এটি পরিবর্তিত হতো। আমরা জানি হোমো স্যাপিয়েন্স সম্ভবত কালো চামড়ার ছিল। তবে তারা উত্তর আফ্রিকার মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে একই রকম দেখতে হতো না। সাইবেরিয়ান নিয়ান্ডারথালরা সম্ভবত ভূমধ্যসাগরীয় নিয়ান্ডারথালদের থেকে আলাদা দেখতে হতো।
প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া
বিলুপ্তি জৈবিক বিবর্তনের একটি স্বাভাবিক অংশ। অনুমান করা হয়, যত প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল তার ৯৯.
প্রাকৃতিক বিলুপ্তির সঙ্গে বেশ কিছু ভিন্ন কারণ জড়িত, যার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হলো প্রজাতির মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন। ট্যাক্সন বা প্রজাতির বিলুপ্তির কারণ সৃষ্ট হতে পারে তখন, যখন তারা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ও জেনেটিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। নিয়ান্ডারথালরা প্রায় চল্লিশ হাজার থেকে সাঁইত্রিশ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। কালের এই সীমার বাইরে তারা টিকে ছিল, এমন কোনো দৃঢ় প্রমাণ নেই।
কোনো ব্যক্তি বা নিয়ান্ডারথাল জনগোষ্ঠী কখন বেঁচে ছিল এবং কখন তারা বিলুপ্ত হয়েছিল তা খুঁজে বের করার জন্য আমরা সচরাচর রেডিওকার্বন ডেটিং ব্যবহার করি। এই কৌশলগুলোর উন্নতির ফলে এলাকাভিত্তিক কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়। যেমন নিয়ান্ডারথালরা তুলনামূলক সম্প্রতি বাস করত যেমন ভিন্ডিজায় (ক্রোয়েশিয়া)আটাশ হাজার বছর আগে। স্পাইয়ে (বেলজিয়াম) বাস করত চল্লিশ থেকে সাঁইত্রিশ হাজার বছর আগে। বিচ্ছিন্ন কিছু জনগোষ্ঠী নির্দিষ্ট অঞ্চলে কয়েক সহস্রাব্দ বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়েছিল। একটি প্রজাতির বিলুপ্ত হওয়ার জন্য অবশ্যই শেষ ব্যক্তিটির মৃত্যু হতে হবে। কিন্তু প্রকৃতি আরও জটিল উপায়ে কাজ করে। নিয়ান্ডারথাল ও হোমো স্যাপিয়েন্সদের সংমিশ্রণ নতুন আফ্রিকান অভিবাসীদের মধ্যে মিশেও যেতে পারে। একটি ট্যাক্সন বা প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার আগে এটি তার প্রাকৃতিক পরিসরগুলোয় অসুবিধায় পড়ে। হতে পারে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে। ফলে এতোকালের আবাস-অঞ্চলে তাদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেতে পারে। ফ্রান্সের রোন উপত্যকার ম্যান্ড্রিন গুহায় পাওয়া নিয়ান্ডারথাল জীবাশ্মের ডিএনএ বিশ্লেষণে দেখা গেছে সেই ব্যক্তি অজ্ঞাত নিয়ান্ডারথাল বংশের অন্তর্ভুক্ত ছিল, যারা প্রায় পঞ্চাশ হাজার বছর ধরে ক্রমশ অপরাপর নিয়ান্ডারথালের থেকে জিনতাত্ত্বিকভাবে আলাদা গেছে।
নিজস্ব প্রতীকী সংস্কৃতি
চূড়ান্ত বিলুপ্তির আগে তাদের জনসংখ্যার বেশির ভাগ তাদের আবাস-অঞ্চল থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। পৃথক গোষ্ঠীতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এমন স্থানে পুনর্বাসিত হয়েছিল যেখানে জিনের সংমিশ্রণের উপায় ছিল না।
এল সিড্রন (আস্তুরিয়াস, স্পেন), ভিন্ডিজা (ক্রোয়েশিয়া), মেজমাইস্কায়া (ককেশাস) ও আলতাইয়ের (সাইবেরিয়া) গুহা থেকে নিয়ান্ডারথালদের জিনোমিক গবেষণা দেখায়, শেষ জনগোষ্ঠীর জিনগত বৈচিত্র্য ছিল খুব কম। এর অর্থ হলো তারা ছোট ও বদ্ধ-গোষ্ঠী ছিল যেখানে আন্তঃপ্রজনন ঘটত। শেষ পর্যন্ত বেশির ভাগ নিয়ান্ডারথাল জনসংখ্যা ও উপ-জনসংখ্যা শারীরিক ও জিনগতভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে কার্যকরভাবে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। অনুমান করা হয়, প্রক্রিয়াটি পাঁচ সহস্রাব্দ সময় নিয়েছে। বেয়াল্লিশ থেকে সাঁইত্রিশ হাজার বছর আগের কথা।
ভূমধ্যসাগরে অবসর জীবন
একসময় নিয়ান্ডারথালদের একচেটিয়াভাবে ইউরোপীয় বলে মনে করা হতো। তাদের জীবাশ্মগুলো আলতাইয়ের (সাইবেরিয়া) চাগিরস্কায়া, ডেনিসোভা গুহা এবং জাগ্রোস পর্বতমালার (ইরান) বাওয়া ইয়াওয়ান আশ্রয়স্থল পর্যন্ত পূর্বদিকে পাওয়া গিয়েছে। কিছু পাথরের হাতিয়ার আমাদের অনুমান করতে সাহায্য করে, নিয়ান্ডারথালরা পূর্ব এশিয়ায় বিস্তৃত হতে পারে এবং মধ্য এশিয়ায় সম্ভবত তারা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। তবে শেষ নিয়ান্ডারথাল জীবাশ্ম ইউরোপের দক্ষিণ অর্ধেক থেকে এসেছে। মুস্টেরিয়ান প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
আইবেরিয়ান উপদ্বীপ তাদের জীবনকালে একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করেছে। এখন এটা স্পষ্ট, নিয়ান্ডারথালরা তাদের শেষ শতাব্দী রৌদ্রোজ্জ্বল আন্দালুসিয়ায় কাটিয়েছিল। ২০০৩ সালে বোকেতে দে জাফরায়া গুহা (মালাগা, স্পেন) এবং ২০০৬ সালে গোরহামের গুহা (জিব্রাল্টার)-এ পরিচালিত গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে সময়টি অন্তত তেত্রিশ থেকে আটাশ হাজার বছর আগে। যদিও এই অনুসন্ধানগুলো তখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
এব্রো নদীর দক্ষিণে অন্যান্য আইবেরিয়ান স্থান, যেমন– কুয়েভা আন্তোন, সিমা দে লাস পালোমাস (মুরসিয়া, স্পেন), গ্রুটা দি অলিভেইরা (পর্তুগাল) ও গোরহামের গুহার কিছু স্তর কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করে চলেছে এখনো। যদি আইবেরিয়ান উপদ্বীপই শেষ স্থান না হয়, যেখানে শেষ নিয়ান্ডারথালরা বেঁচে ছিল, সেক্ষেত্রে এটি পশ্চিম ইউরোপের কোনো স্থান হতে পারে। তবে ভবিষ্যতে যদি সাইবেরিয়া বা আরো পূর্বাঞ্চলীয় কোথাও এ জনগোষ্ঠীর শেষ অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় তো অবাক হবো না।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশৃঙ্খলা
প্রাচীন নৃবিজ্ঞানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর মধ্যে একটি হলো, কেন নিয়ান্ডারথালরা বিলুপ্ত হয়ে গেল। বাস্তবতা হলো– আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না। বেশ কয়েকটি অনুমান রয়েছে। নিয়ান্ডারথালদের আবির্ভাবের পর থেকে তাদের বিলুপ্তি পর্যন্ত বিশাল সময় অতিবাহিত হয়েছে। এই মানব প্রজাতির অস্তিত্বের সাড়ে তিন লাখেরও বেশি সময় ধরে, জলবায়ু বহুবার নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী তা ঘটেছে। এর অর্থ হলো নিয়ান্ডারথালদের তেরো হাজারেরও বেশি প্রজন্মের তথ্য ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের রৌদ্রোজ্জ্বল অঞ্চল থেকে শুরু করে, হালকা শীতের এলাকা হয়ে, পাহাড়প্রমাণ বরফের নিচে চাপা পড়ে গেছে। আমরা জানি যে নিয়ান্ডারথালরা কমপক্ষে ১০টি প্রধান জলবায়ুগত উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে বেঁচে ছিল। যার মধ্যে রয়েছে স্ট্যাডিয়াল (হিমবাহের গৌণ অগ্রগতি) এবং আন্তঃহিমবাহের মন্দা বা স্থবিরতা) সময়কাল। এই অঞ্চলগুলো বরফের আগমনের আগে উদ্ভিদ এবং প্রাণিজগতের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করেছিল। বরফ সরে যাওয়ার পর, তারা তাদের পূর্ববর্তী পর্বতমালায় নতুন করে প্রাচুর্যের সাথে উপনিবেশ স্থাপন করতে ফিরে আসে।
তারা কি ষষ্ঠ বিলুপ্তির অংশ?
নিয়ান্ডারথালরা ছিল মহাবাস্তুতন্ত্রের দাবার বোর্ডে টুকরো সৈনিকমাত্র। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদের পরিসর ধীরে ধীরে প্রসারিত ও সংকুচিত হয়েছিল। আণবিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য আমাদের বলে যে নিয়ান্ডারথালরা উত্তর এবং পূর্বের অঞ্চলগুলোতে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। এই উপনিবেশ সম্ভবত মঙ্গোলিয়া এবং চীন পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সম্প্রসারণের দুটি বড় ঢেউয়ের প্রথমটি শুরু হয়েছিল এক লাখ ত্রিশ হাজার বছর আগে এবং দ্বিতীয়টি ষাট হাজার বছর আগে থেকে। দ্বিতীয় সম্প্রসারণ তরঙ্গ তুলনামূলকভাবে স্বল্পস্থায়ী ছিল। পঞ্চান্ন হাজার বছর আগে থেকে জলবায়ুকেন্দ্রিক চরম ও অনিয়মিত সব ঘটনার মুখোমুখি হতে থাকে নিয়ান্ডারথালরা। এতে নিয়ান্ডারথাল জনসংখ্যার ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছিল, যা এক বিশাল অনিশ্চয়তার সময়কালে তাদের প্রবেশ করায়।
হয়ত জলবায়ুর কোনো অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনই তাদের মুছে দিয়েছিল। প্রজাতির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে নিঃশেষিত হয়নি তারা।
মূল লেখক : স্প্যানিশ নৃতাত্ত্বিক
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জনস খ য জনগ ষ ঠ অন ম ন আম দ র ব স কর ইউর প জলব য
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।