হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোমিদির জেলেনস্কির বাগ্‌বিতণ্ডা নিয়ে এখনো হতবাক ইউক্রেনের ব্যাংক কর্মকর্তা জিনাইদা শেলেনেঙ্কো। জেলেনস্কির ওপর তাঁরা যেভাবে চড়াও হয়েছেন, তাতে দুজনকে ‘ডাকাত’ বলে মনে হয়েছে ৫২ বছর বয়সী এই ব্যক্তির।

জিনাইদা শেলেনেঙ্কো বলেন, ‘তাঁরা দুজন ডাকাতের মতো করে জেলেনস্কিকে কোণঠাসা করেছেন। তাঁরা আপনার অর্থ চান এবং একই সঙ্গে অপমান করতে চান—যেন দুজন মাফিয়া।’ তবে সেদিনের ঘটনার পর গত সোমবার ট্রাম্প যেভাবে ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন, তাতে মোটেও বিস্মিত নন শেলেনেঙ্কো।

শুক্রবারের বিতণ্ডার পর যদিও ট্রাম্প ও জেলেনস্কি—দুজনই সুর নরম করেছেন, তারপরও এ ঘটনার জেরে সুস্পষ্টভাবে একজনই বিজয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন শেলেনেঙ্কো। তিনি বলেন, ‘ধারণা করুন তো কে এখন আনন্দ করছেন? তিনি হলেন ক্রেমলিনের সেই রক্তচোষা, শিশুদের হত্যাকারী।’ মোটাদাগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বুঝিয়েছেন তিনি।

ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভের সামরিক বিশ্লেষক মিখাইলো জিরোকভের মতে, ইউক্রেনে যদি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে লকহিডের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বড় অর্থনৈতিক ও আইনি সমস্যায় পড়বে। কারণ, এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিয়েভের জন্য অস্ত্র তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

আল-জাজিরাকে জিরোকভ বলেন, ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহও বন্ধ করতে পারে ওয়াশিংটন। এর মধ্যে থাকতে পারে সামরিক স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র পরিচালনার জন্য পাইলট ও অন্য কর্মীদেরও প্রশিক্ষণ বন্ধ হতে পারে। সেটি হবে সবচেয়ে খারাপ বিষয়।

তাহলে সবচেয়ে ভালো বিষয়টি কী হবে? জিরোকভ বলেন, সবচেয়ে ভালো বিষয়টি হবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইউক্রেন এরই মধ্যে যেসব অস্ত্র পেয়েছে, তা শেষ হওয়ার আগে কয়েক মাসের মধ্যে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে একটি কূটনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো।

ইউক্রেনীয় সেনাদের মাঝে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ