বিএইচবিএফসির গৃহঋণের সুদ বাড়ল, তবে এখনো তা ব্যাংকের চেয়ে কম
Published: 7th, March 2025 GMT
গৃহঋণ দেওয়া দেশের একমাত্র সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) সব ধরনের ঋণের সুদ ১ শতাংশ করে বেড়েছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হবে। তাতে ঋণের ধরন অনুযায়ী সুদ হবে ৮ থেকে ১০ শতাংশ। বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবদুল মান্নান গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
বিএইচবিএফসির ঋণের সুদ ১ শতাংশ বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব গত নভেম্বরে অনুমোদন করে সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদ। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সম্মতি না পাওয়ায় তা কার্যকর করা হয়নি। সর্বশেষ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। গত ৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছিল বিএইচবিএফসি।
জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক প্রথম আলোকে বলেন, এত লম্বা সময় ফাইল পড়ে থাকার কথা নয়। কী কারণে অনুমোদনে দেরি হয়েছে, তার খোঁজ নেওয়া হবে।
সর্বোচ্চ ২৫ বছরের জন্য ১১ ধরনের গৃহঋণ দেয় বিএইচবিএফসি। এসব ঋণের মধ্যে রয়েছে—নগর বন্ধু, পল্লীমা, আবাসন উন্নয়ন, আবাসন মেরামত, প্রবাস বন্ধু, হাউজিং ইকুইপমেন্ট ঋণ, কৃষক আবাসন ঋণ, সরকারি কর্মচারী ঋণ, ফ্ল্যাট ঋণ, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ঋণ এবং স্বপ্ননীড় ঋণ। এত দিন এসব ঋণের সুদ ছিল ৭ থেকে ৯ শতাংশ। এখন তা বেড়ে ৮ থেকে ১০ শতাংশ হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগর এলাকার সব ধরনের ঋণ এবং দেশের অন্য এলাকার ফ্ল্যাট ঋণের সুদ ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা ছাড়া অন্য এলাকার সব ধরনের ঋণের সুদ ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯ শতাংশ। আর পেরি আরবান, উপজেলা সদর ও গ্রোথ সেন্টার এলাকায় ঋণের সুদ ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮ শতাংশ হয়েছে।
বিএইচবিএফসি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির মোট গ্রাহক ৯২ হাজার ৬৬৮ জন। চলতি অর্থবছরে সংস্থাটির ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ২৫ বছর মেয়াদি সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ পাচ্ছে বিএইচবিএফসি। প্রথম কিস্তি ৮৫০ কোটি টাকা এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। আগামী জুলাইয়ে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা রয়েছে। সংস্থাটির খেলাপি ঋণের হার ৪ শতাংশের কম।
বিএইচবিএফসির এমডি মো.
বিশেষায়িত সরকারি এ সংস্থার মূল কাজ হলো গৃহঋণ বিতরণ। পাশাপাশি সংস্থাটি ফ্ল্যাট নিবন্ধন, আবাসন উন্নয়ন ও মেরামত এবং বাড়ি নির্মাণে সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্যও ঋণ দিয়ে থাকে। সব বিভাগীয় শহর ছাড়াও দেশের প্রতিটি জেলায় শাখা আছে বিএইচবিএফসির। সংস্থাটির ঋণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সরল সুদ।
বিএইচবিএফসি থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করতে চাইলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ টাকা নিজের থাকতে হয়। যেমন বাড়ি নির্মাণে যদি এক কোটি টাকা খরচ হয়, তার ৩০ লাখ টাকা নিজের থাকতে হবে। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন অভিজাত এলাকায় বাড়ি নির্মাণের জন্য একক ব্যক্তি দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পান।
আবাসন ব্যবসায়ীদের সমিতি রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, মূল্যস্ফীতি এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যমান হারের তুলনায় বিএইচবিএফসির নতুন হার যৌক্তিক পর্যায়েই আছে। তবে সংস্থাটি এখনো পুরোনো ধাঁচেই আছে। ফ্ল্যাট কেনায় ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীলতা থেকে সংস্থাটির বেরিয়ে আসা উচিত।
কত সুদে কত টাকা ঋণ
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার নাগরিক, যাঁদের বাড়ি নির্মাণ উপযোগী জমির মালিকানা রয়েছে এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বাড়ি নির্মাণের নকশা অনুমোদন করা আছে, তাঁরা পাবেন নগর বন্ধু ঋণ। এ ঋণের সুদ হার বেড়ে ১০ শতাংশ হবে। সর্বোচ্চ ২০ বছর মেয়াদে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা বাদে দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা সদর এলাকা এবং উপশহর (পেরি আরবান), উপজেলা সদর ও গ্রোথ সেন্টার এলাকার নাগরিকেরা বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাটের জন্য পল্লীমা নামক ঋণ নিতে পারে, যার সুদ ৮ থেকে বেড়ে ৯ শতাংশ হবে।
নিজস্ব অর্থায়নে এক বা একাধিক তলা নির্মাণের পর এবং অসম্পূর্ণ নির্মাণকাজ সমাপ্ত করার জন্য আবাসন উন্নয়ন ঋণ দেওয়া হয়। এ কর্মসূচির আওতায় বহুতল বাড়ি নির্মাণের নকশা অনুমোদন করে সর্বোচ্চ ২০ বছর মেয়াদে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা, দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা সদর এলাকায় যাঁদের নির্মিত ও সংস্কার বা মেরামতযোগ্য বাড়ি আছে, তাঁরা নিতে পারবেন আবাসন মেরামত ঋণ। সর্বোচ্চ ১৫ বছর মেয়াদে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। এখানে নিজস্ব তহবিল থাকা বাধ্যতামূলক নয়।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর ভেতরে বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য রয়েছে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত প্রবাস বন্ধু নামক ঋণ নেওয়ার সুযোগ। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে অন্য সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় শহর এলাকায় এক কোটি টাকা পর্যন্ত এ ঋণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া সব জেলা সদরে ৮০ লাখ এবং পেরি আরবান, উপজেলা সদর ও গ্রোথ সেন্টার এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া হাউজিং ইকুইপমেন্ট ঋণ, কৃষক আবাসন ঋণ, সরকারি কর্মচারী ঋণ, ফ্ল্যাট ঋণ, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ঋণ, স্বপ্ননীড় নামক ঋণের সুদ ১ শতাংশ করে বেড়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক বছর ম য় দ ঋণ র স দ ম র মত র এল ক এল ক র র ঋণ র র জন য এল ক য় ধরন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল
১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।
১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।
১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।
মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।
বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।
কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।
ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি