ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতেক সুস্থ মুসলমানের জন্য রোজা রাখা ফরয। রমজান মাসে অনেক অ্যাথলেটকেই ম্যাচ ডে’তে খেলার সাথেই সিয়াম সাধনা করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বহু ম্যাচে রোজা রেখে খেলেছেন। লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহ এবং সাবেক রিয়াল তারকা করিম বেনজেমাও সিয়াম পালন করেই খেলতে নেমে গিয়েছিলেন বহু বড় ম্যাচ। এমনকি হাশিম আমলা তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসটা (৩১১*) খেলেছিলেন রোজা রেখেই। তবে চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামি রোজা রাখছেন না।

সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিল্ডিং করার সময় বাউন্ডারি লাইনে ক্রিকেটার মুহাম্মদ শামিকে দেখা গিয়েছে, এনার্জি ড্রিংকস পান করতে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের সর্বভারতীয় সভাপতি মওলানা শাহাবুদ্দিন রিজভি দাবি করেছেন যে, শরিয়ত মতে অপরাধ করেছেন শামি।

রিজভি বলেন, “শামি রোজা রাখেননি। আবার পানিও পান করেছেন। তার এই কাজে জনগণের কাছে ভুল বার্তা গিয়েছে। রোজা না রেখে শামি পাপ করেছেন।”

আরো পড়ুন:

ফাইনালে যে পাঁচ বিষয়ে চোখ থাকবে

বাড়তি ভ্রমণে বিরক্ত মিলার ফাইনালে কিউইদের সমর্থক 

ইসলামিক নিয়মের ব্যাপারে জাবিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মওলানা খালিদ রশিদ ফারাঙ্গি মাহলি। খালিদ বলেন, “রোজা রাখাটা প্রত্যেক মুসলিমের জন্যই বাধ্যতামূলক। বিশেষ করে রমজান মাসে। যদিও আল্লাহ কোরআনে পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন যে, যদি কোনও ব্যক্তি কোথাও যান বা অসুস্থ হন, তাহলে তিনি রোজা পালন না-ও করতে পারে। মহম্মদ শামি সফরে গিয়েছেন। তাই তিনি রোজা পালনে ছাড় পেয়েছেন। কেউ ওর দিকে আঙুল তুলতে পারবে না। এনিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করা উচিত নয়।”

এদিকে শামির ভাই মোহাম্মদ হাসিব জানান, তার ভাই রোজা পালন করছেন। তবে তিনি ম্যাচের দিন রোজা রাখছেন না। বাকি দিনগুলোয় অবশ্য তিনি নিয়মমাফিক রোজা পালন করেছেন। হসিব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “শামি নিয়মিত রমজান পালন করেন। ম্যাচের জন্য যে রোজা তিনি রাখতে পারেননি, পরে সেটাও তিনি পালন করে নেবেন।”

এই পরিস্থিতিতে শামির রবিবার (৯ মার্চ, ২০২৫) নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবেন। এই ৩৪ বছর বয়সী পেসারের ছেলেবেলার কোচ বদরুদ্দিন সিদ্দিকি মনে করেন যে, দেশ সবার আগে। বদরুদ্দিন বলেন, “শামি যা করেছেন, একেবারে ঠিক করেছেন। ওর এসব দিকে নজর দেওয়ার কোনও দরকার নেই। ওর উচিত এখন ফাইনাল ম্যাচের দিকে নজর রাখা। আপনি কোনও পাপ করেনি। আপনি যা করেছেন, দেশের জন্য করেছন।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ কর ছ ন ফ ইন ল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ