ভিডিও নির্মাতাদের সতর্ক করল ইউটিউব, কেন
Published: 7th, March 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি এর অপব্যবহারও বাড়ছে। সম্প্রতি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে, যা ‘ডিপফেক’ ভিডিও নামে পরিচিত। এসব ভিডিওতে নির্দিষ্ট ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করার পাশাপাশি কণ্ঠস্বর ব্যবহার করায় অনেকেই বুঝতে পারেন না এটি নকল ভিডিও। এবার ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নীল মোহানের নকল ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবের ভিডিও নির্মাতাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে একদল সাইবার অপরাধী।
ইউটিউবের তথ্যমতে, ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নীল মোহানের ভুয়া ভিডিও ব্যবহার করে ফিশিং হামলা চালাচ্ছে একদল সাইবার অপরাধী। ভিডিওটি নির্মাতাদের কাছে পাঠিয়ে ইউটিউবের মনিটাইজেশন নীতিতে পরিবর্তনের কথা জানানো হচ্ছে। তবে এটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং এর মাধ্যমে প্রতারকেরা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
এক ঘোষণায় ইউটিউব জানিয়েছে, ‘ইউটিউব বা এর কোনো কর্মী ব্যক্তিগত ভিডিওর মাধ্যমে কখনো কোনো বার্তা পাঠায় না বা নীতিগত পরিবর্তনের বিষয়ে যোগাযোগ করে না। যদি কেউ ইউটিউবের নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে ভিডিও পাঠায়, সেটি নিঃসন্দেহে একটি ফিশিং প্রতারণা।’ সাম্প্রতিক সময়ে রেডিটসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এ ধরনের প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। এক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ‘নোটিফিকেশন ফর ইউটিউব ক্রিয়েটরস’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তার কাছে একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। সেখানে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে এবং সেই ভিডিও দেখতে একটি নির্দিষ্ট ফাইল ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে। আরেকজন ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ‘চ্যানেল ফর ক্রিয়েটরস’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো ভিডিওতে ইউটিউবের নতুন মনিটাইজেশন নীতিতে সম্মতি দেওয়ার জন্য একটি লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়েছে।
ভিডিও নির্মাতাদের সতর্ক করে ইউটিউব জানিয়েছে, প্রতারকেরা বিভিন্ন উপায়ে ইউটিউবের নাম ও প্ল্যাটফর্মের ধরন ব্যবহার করে কনটেন্ট নির্মাতাদের টার্গেট করছে এবং ক্ষতিকর লিংকে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে। এর আগে ২০২৩ সালেও রেডিটের এক ব্যবহারকারী নীল মোহানের একটি ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করেছিলেন। এ ধরনের সন্দেহজনক ভিডিও বা বার্তা পেলে ইউটিউবের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে রিপোর্ট করার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: দ্য ভার্জ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস