যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার কাছে মনে হচ্ছে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে রাশিয়ার চেয়ে ইউক্রেনকে সামলানো বেশি কঠিন।

ওভাল অফিসে শুক্রবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার সঙ্গে খুব ভালো কাজ করছে এবং কিয়েভের চেয়ে মস্কোকে সামলানো বেশি সহজ।

যদিও এর কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন যে, ইউক্রেনের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের বিষয়টি শক্তভাবে বিবেচনা করছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে: ইউক্রেন

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার অভিযান স্থগিত

এদিকে, ট্রাম্প ইতিমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছেন।মহাকাশ প্রযুক্তি সংস্থা ম্যাক্সার বিবিসি ভেরিফাইকে জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ক্ষেত্রে কিছু স্যাটেলাইট চিত্রে ইউক্রেনের প্রবেশাধিকার সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়। এর পরপরই ট্রাম্প কিয়েভের জন্য সমস্ত সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান বন্ধ করে দেন।

রাশিয়া এরপর বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।

স্পষ্টতই এ হামলার প্রতিক্রিয়াতেই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, তিনি নতুন করে শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছেন কারণ ‘রাশিয়া এখন যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনকে পুরোপুরি আক্রমণ করছে’।

কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প সুর বদলে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যা করছেন অন্য যে কেউ হলেও তাই করতো।

“আমি মনে করি, তিনি তাদের (ইউক্রেন) উপর আগের চেয়েও বেশি আঘাত করছেন এবং আমার মনে হয়, ওই অবস্থানে থাকলে অন্য যে কেউই এখন সম্ভবত তাই করতো।”

ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে পুতিন যুদ্ধের অবসান চান। কিন্তু ইউক্রেন সম্পর্কে একই কথা তিনি বলতে পারছেন না।

পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সরাসরি কূটনীতি ন্যাটো মিত্রদের হতবাক করেছে। কারণ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণের পর পশ্চিমারা কার্যত রাশিয়াকে পরিত্যাগ করেছিল।

জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বাদানুবাদ সত্ত্বেও তার পররাষ্ট্র নীতি দলের সুর গত দুই দিনে ইউক্রেনের প্রতি আরো সমঝোতামূলক বলে মনে হচ্ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র চায় ইউক্রেন তার বিরল খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার দিয়ে চুক্তিকে স্বাক্ষর করুক এবং মস্কোর সঙ্গে দ্রুত যুদ্ধবিরতি করতে সম্মত হোক।

জেলেনস্কি চুক্তির অংশ হিসেবে কিয়েভের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, এ ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টি পরে আলোচনা হতে পারে এবং এটা হবে সহজ একটা বিষয়।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ট র ম প বল ইউক র ন র করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ