লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভার ডাক এসেছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে গত ২১ জানুয়ারি ঢাকায় এলেন মিতা তঞ্চঙ্গ্যা। বন ভবনে তাঁর মতো অনেকেই হাজির। ভাইভা বোর্ডে ঢোকার আগে সবার উচ্চতা মেপে দেখা হচ্ছে। ফরেস্টার বা বন বিট কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিতে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি শারীরিক যোগ্যতাও বিবেচনা করা হয়। শারীরিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতা। মিতা দেখলেন উচ্চতার কারণে অনেকেই মন খারাপ করে চলে যাচ্ছে। নিজের উচ্চতা নিয়ে নিশ্চিত থাকার পরও মনে কিছুটা শঙ্কা ভর করল। তাঁকে যখন ডাকা হলো, দুরু দুরু মনে গেলেন। বুকের মাপ নেওয়ার পর উচ্চতা মেপে একজন খাতায় টুকে নিলেন, পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি। মনটা নির্ভার হয়ে উঠল। ভাইভা বোর্ডেও থাকল সেই নির্ভার ভাব।

এসব গল্প এখন অতীত। নিয়োগ পরীক্ষায় ১৫তম হয়ে ফরেস্টার হিসেবে যোগ দিয়েছেন মিতা তঞ্চঙ্গ্যা। মাঠপর্যায়ে দেশের প্রথম নারী বন কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর কর্মস্থল চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মাদার্শা রেঞ্জ। সেখানে যোগ দিয়েছেন ১০ ফেব্রুয়ারি। মিতা বলেন, ‘পাহাড়ে বনাঞ্চলে বেড়ে উঠেছি। কর্মজীবনের শুরুতে শৈশব থেকে দেখা বনাঞ্চল রক্ষার কাজ পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। পরিবার ও সহকর্মীদের কাছ থেকেও সহযোগিতা পাচ্ছি। আমার এখন কাজ শেখার সময়।’

বিট কর্মকর্তা বন অধিদপ্তরের একেবারে মাঠপর্যায়ের পদ। বন বিট কার্যালয়ের তিনি প্রধান। বনপ্রহরী, বাগানমালি ও অন্যান্য কর্মচারী সরাসরি তাঁর নেতৃত্বে বন রক্ষা ও তত্ত্বাবধানের কাজ করেন। বনদস্যু বা বনাঞ্চল ধ্বংসকারী, বনজ সম্পদ পাচারকারীদের তৎপরতা বিট কর্মকর্তাকেই মোকাবিলা করতে হয়। এ জন্য পদটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। ঢাকায় বন অধিদপ্তরে ফরেস্টার পদে যেদিন যোগ দিয়েছিলেন, সেদিনও মিতা তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে কথা হয়েছিল। উচ্ছ্বসিত হয়ে জানিয়েছিলেন, ঝুঁকি ছাড়া কোনো কাজ নেই। পেশাদারত্ব ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করা না–করার মধ্যেই ঝুঁকির বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করে।

মিতা তঞ্চঙ্গ্যা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ফর স ট র

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ