ভারতের সংসদের আসন বৃদ্ধি নিয়ে ৭ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন স্ট্যালিন
Published: 8th, March 2025 GMT
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারতের সংসদের আসন বাড়ানোর সম্ভাবনা রুখতে দেশের সাত মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকেও। সবাইকে অনুরোধ করেছেন, আগামী ২২ মার্চ চেন্নাইয়ের সভায় উপস্থিত থাকতে। সেখানে দাক্ষিণাত্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের ‘গণতান্ত্রিক অবিচারের’ প্রতিবাদে দেশব্যাপী জনমত গড়ার চেষ্টা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন গত শুক্রবার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন দক্ষিণের চার রাজ্য কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, তেলেঙ্গানার রেবন্ত রেড্ডি ও অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে। পাশাপাশি চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পাঞ্জাবের ভগবন্ত সিং মান ও বিজেপি শাসিত ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝিকেও। এই সঙ্গে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁরা হলেন চন্দ্রশেখর রাও (তেলেঙ্গানা), জগনমোহন রেড্ডি (অন্ধ্র প্রদেশ) ও নবীনচন্দ্র পট্টনায়েক (ওডিশা)। প্রত্যেক নেতাকে তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণের মাধ্যমে লোকসভার আসন বৃদ্ধি করতে চাইছে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রতি মারাত্মক আঘাত। কেন্দ্রীয় ফর্মুলায় তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সাফল্যের সঙ্গে রূপায়ণ করে সুশাসনের নজির সৃষ্টি করেছে।
আসন বৃদ্ধির এই সম্ভাবনা রুখতে স্ট্যালিন ইতিমধ্যেই তাঁর রাজ্যে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন গত ৫ মার্চ। বিজেপি ও তার সহযোগী স্থানীয় দল তামিল মানিলা কংগ্রেস ও এনটিকে সেই বৈঠকে যোগ দেয়নি। বৈঠকে দুটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। একটিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছে, লোকসভার আসন বৃদ্ধি আরও ৩০ বছর স্থগিত রাখা হোক। এই সময়ের মধ্যে সরকার সর্বত্র জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফল করুক, যাতে সংসদে প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে কোনো রাজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে না হয়।
দ্বিতীয় প্রস্তাব ছিল, এই নিয়ে দেশব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে এক যৌথ অ্যাকশন কমিটি গঠন করা হবে। ২২ মার্চের বৈঠকের উদ্দেশ্য সবাইকে নিয়ে সেই কমিটি গড়ে তোলা।
শুধু মুখ্যমন্ত্রীদেরই নয়, ২২ মার্চের বৈঠকে বিজেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও স্ট্যালিন আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সে জন্য চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম, এআইএমআইএম, জেডিএস, অকালি দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, টিডিপি, বিআরএস, জন সেনা, আপ ও তৃণমূল কংগ্রেসকে। কেরালা, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ, পাঞ্জাব, ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য শাখার নেতাদেরও তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ত্রিভাষা নীতি জবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে হিন্দি আগ্রাসন রোখা এবং সংসদের আসন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলোকে অপ্রাসঙ্গিক করে তোলার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে জোটবদ্ধ করতে চাইছেন। হিন্দি ভাষা শিক্ষার নামে কেন্দ্রীয় সরকার তামিলনাড়ুকে ব্ল্যাকমেল করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। স্ট্যালিন বলেছেন, রাজ্যের প্রাপ্য বরাদ্দ কেন্দ্র দিচ্ছে না। আগামী বছর তামিলনাড়ু বিধানসভার নির্বাচনের আগে এই দুই বিষয়কে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন তামিল জাত্যভিমান জাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে বিজেপির চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতাসীন থাকতে পারেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম খ যমন ত র ম খ যমন ত র ক র আসন ব দ ধ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।
একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়।
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল