বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ফারুক গ্রেপ্তার
Published: 8th, March 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রুবেল হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি জয়নাল আবেদীন ফারুক ওরফে কলার ফারুককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর আলম। ্এরআগে শুক্রবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মিজমিজি মাদ্রাসা রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জয়নাল আবেদীন ফারুক সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার ছেলে ওয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমিরী ওসমানের অন্যতম সহযোগী। তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে সাইনবোর্ড, মিতালী মাকের্ট ও সাহেবপাড়াসহ আশপাশ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারীদের মাস্টার মাইন্ড ও অর্থ যোগানদাতা ছিলেন নাসিক ২নং ওয়ার্ড নাজু মার্কেট বটতলা এলাকার নূরুল হকের ছেলে জয়নাল আবেদীন ফারুক ওরফে কলার ফারুক।
তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল মোড় পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণ, হামলা চালিয়েছেন। জয়নাল আবেদীন ফারুকের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা ও ডিএমপির পল্টন থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, জয়নাল আবেদীন ফারুক ওরফে কলার ফারুকের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যাসহ দুইটি মামলা রয়েছে, যার মামলা নং- ২৫, তারিখ, ২৬/০৮/২০২৪, এছাড়াও হত্যার চেষ্টা যার মামলা নং- ২ তারিখ: ২/০৯/২০২৪, ফতুল্লা থানায় মামলা নং- ৪, তারিখ: ০৫/০৯/২০২৪, অপর মামলা নং- ১৮ তারিখ: ২২/০৮/২০২৪, ডিএমপির পল্টন থানায় হত্যা মামলা, যার মামলা নং- ১৭ তারিখ: ১৩-০২-২০২৫, এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বটতলা নাজু মার্কেট এলাকার বাসিন্দা জানান, বহু অপকর্মের হোতা জয়নাল আবেদীন ফারুক। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা কালিন সময় শামীম ওসমানের দাপট দেখিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সে।
কিন্তু পাঁচ আগষ্টের পর নতুনভাবে খোলশ পাল্টে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে মিশে নিজেকে নব্য বিএনপির কর্মী দাবি করতে শুরু করেছে। র্যাব তাকে গ্রেফতার করায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে বলেও জানান তিনি।
আব্দুল হালিম নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, গেল ষোল বছর সাহেবপাড়া, নাজু মার্কেট, রহিম মার্কেট, মিজমিজি, মাহমুদপুর পাকার মাথা, মিতালী মার্কেটসহ আশপাশের এলাকায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দোসর হয়ে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রামরাজত্ব করে বেরিয়েছেন এই ফারুক ওরফে কলার ফারুক।
তার ভয়ে এলাকাবাসী তটস্থ থাকতেন। ব্যবসায়ীরা থাকতেন ভীত। মিতালী মার্কেটের বহু ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়ে নিজের আখের গুছিয়েছেন এই বাটপার ও মানুষ ঠকানো ফারুক। দোকানমালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
সাইনবোর্ড মিতালী মার্কেটের ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন জানান, গেল ষোল বছরে শামীম ওসমানের দাপট দেখিয়ে মার্কেটির ব্যবসায়ীদের পথে বসিয়েছে সে। আমার কাছ থেকেও জমি দেওয়ার কথা বলে ত্রিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পরে আর জমিও দেয়নি, টাকা চাইতে গেলে উল্টো হামলা, মামলার ভয় দেখাতো সে। তিনি বলেন, বহু ব্যবসায়ীর স্বপ্ন ভেঙ্গে খানখান করেছেন প্রতারক জয়নাল আবেদীন ফারুক।
হারুন মিয়া নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, আমার কাছ থেকেও ছয় লাখ টাকা নিয়ে গেছে সে। টাকা চাইতে গেলে উল্টো হামলা ও মামলার শিকার হতে হয়। টাকাটা আজও পেলাম না। মিতালী মার্কেটের ১৩নং ভবনের ৩৬০টি দোকান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে প্রতি দোকান থেকে নয় হাজার টাকা করে প্রায় পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে সে। ৮ নং ভবনের দশটি দোকান দীর্ঘদিন জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর আলম বলেন, জয়নাল আবেদীন ফারুককে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ কল র ফ র ক ফ র ক ওরফ ব যবস য় এল ক য় ত র কর ওসম ন
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা। গত বছরের একই সময় যা ছিল ১ টাকা ২৫ পয়সা।
এ ছাড়া বছরের প্রথম ছয় মাসেও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৫৬ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ২ টাকা ৬২ পয়সা, অর্থাৎ বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মূলত ব্যাংকের বিনিয়োগ ও সুদ আয় বৃদ্ধির কারণে ইপিএস বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক ঘোষণায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ২৪ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩০ টাকা ৯৯ পয়সা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আমানত সংগ্রহ ও ব্যাংকঋণ বৃদ্ধির কারণে নগদ প্রবাহ বেড়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণে কিছুটা ধীরগতি দেখা গেছে।
অন্যদিকে ৩০ জুন ২০২৫ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদের মূল্য (এনএভি) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৬০ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর যা ছিল ৩৯ টাকা ৩৮ পয়সা। নিট মুনাফা ও সরকারি সিকিউরিটিজের পুনর্মূল্যায়নের ফলে এ বৃদ্ধি হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
২০২৪ সালের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ১২ দশমিক ৫ শতাংশ স্টক। ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংক সমন্বিতভাবে আগের বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। ফলে তাদের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা (এনপিএটি) হয়েছে ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা, ২০২৩ সালে যা ছিল ৮২৮ কোটি টাকা। একক ভিত্তিতে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের ৭৩০ কোটি টাকার তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৬ শতাংশ।