বন্দর উপজেলার সাবেক মাকসুদ হোসেন ও তার পরিবার গত ১৬ বছরের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্টের পর্যন্ত যে হামলা, মারধর ও লুটপাট করে যে বর্বরতা চালিয়েছে তা ৭১’র স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধে জ্বালাও পোড়াও লুটপাট ও বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। 

অবৈধ কালো টাকায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে বিরোধী পন্থী ছাত্র আন্দোলনকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বাড়িঘর সহ বন্দর উপজেলার শতাধিক বাড়ি ঘর ভাংচুর ও  লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে মাকসুদ হোসেন ও তার বাহিনী।  

এমপি সেলিম ওসমান তথা  ওসমান পরিবারের দাপটে অস্ত্রধারি সস্ত্রাসী বাহিনীর একক আধিপত্যে  মাকসুদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায়নি বলে ভুক্তভোগী বহু পরিবারের অভিযোগ।  এছাড়াও  নিজ পরিবারের লোকজনের দখলে প্রায় অর্ধশতাধিক শিল্প  প্রতিষ্ঠান।

সরজমিনে ঘুরে জানাগেছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি পাক হানাদার বাহিনীর পক্ষে সাধারণ মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার ও নির্যাতন চালাতেন  মাকসুদ হোসেন চেয়ারম্যানের দাদা মাঈনউদ্দিন মাওন্না, পিতা এমএ রফিক, চাচা আব্দুস সামাদ ও আব্দুল মালেক। স্বাধীনতার পর  তারা তালিকাভূক্ত  রাজাকার। 

৭১ এর স্বাধীনতার পর লালখারবাগ গ্রাম সহ  শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পোড়ানো হয়।  খুনের শিকার হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন,  রফিক,  কসাই নবী হোসেন সহ দেড় ডজন ব্যক্তি। ৭১ এর পর ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অতিষ্ঠ ছিলেন বন্দরউত্তরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ। 

১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার আমলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কাদির ডিলার  রাজাকারের তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী কার্মকান্ডের মাকসুদ হোসেনের পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। তারপর থেকে প্রশাসনিক চাপে মাকসুদ সহ তার  পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে অন্যত্রে বসবাস শুরু করেন।  ২০০০ সালে প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের হাত  ধরে  জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

মাকসুদ হোসেনের ছোট ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন কালু। ২০০১ সালে পর  বিএনপি জামায়াতে ইসলামী চার দলীয় জোট সরকারের আমলে কালু মারা যাওয়ার পর কিছুদিন নিস্ক্রিয় থাকলেও ১/১১ এর পর নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত এমপি নির্বাচিত হন  নাসিম ওসমান। এমপি নাসিম ওসমানের  হস্তক্ষেপে মাকসুদের বড় ভাই আনোয়ার শাহ মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হন। 

তারা দুইজন মারা যাওয়ার পর মাকসুদ হোসেন এমপি সেলিম ওসমানের আস্থাভাজন হয়ে উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।  ওসমান পরিবারের দাপটে  আরো দুই বার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভাগিয়ে নেয়। গত ১৬ বছরের আওয়ামীলীগের শাসনামলে মাকসুদ চেয়ারম্যান ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভ গড়ে তুলে  এক সন্ত্রাসী বাহিনী।  

এ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে  মাদক, ঝুট সহ নানা অপকর্ম।  ওসমান পরিবারের দাপটে এক আধিপত্য বিস্তার করে অবৈধ পন্থায় হাতিয়ে নেয় কয়েকশত কোটি টাকা এবং এক/ দেড় শ বিঘা জমি, বিলাশ বহুল গাড়ি ও বাড়ি।  অবৈধ টাকার দাপটে ইউপি  চেয়ারম্যান  পদ থেকে পদত্যাগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অংশ নিয়ে নির্বাচিত হয়ে পূর্ব পূরুষ বাবা, দাদা ও চাচাদের ভুমিকায় ফুটে ওঠে মাকসুূদ হোসেন। 

দখলে নেয়  বন্দর উপজেলার জাঙ্গাল, কামতাল, লাঙ্গলবন্দ মালিবাগ বিক্রমপুর স্টীল মিল, মিনান স্টীল মিল,  বাশার পেপার মিল,  আরএফএল,  মেটারডোর কোম্পানী সহ অর্ধশত শিল্প প্রতিষ্ঠান।  

৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা দেশ ত্যাগের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিরোধী প্রার্থী সহ শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় মাকসুদ ও তার পূত্র মাহমুদুল হাসান শুভ বাহিনী।   

এসব কর্মকান্ডের ঘটনায় অদৃশ্য ইশারায় থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়নি। মুছাপুরের  ছাত্র আন্দলোনকারি একটি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হলেও মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.

সাখাওয়াত হোসেন খান বাদী মতিউর রহমানকে ডেকে নিয়ে মিমাংসা করে দেন বলে চাউর রয়েছে। তার পর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাকসুদ হোসেন।   
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ শত ধ ক ব ড় পর ব র র ম ওসম ন ব ড় ঘর ত র পর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ