গাজার জন্য ‘বাস্তবসম্মত’ আরব পরিকল্পনায় সমর্থন ৪ ইউরোপীয় দেশের
Published: 9th, March 2025 GMT
ইউরোপের প্রধান দেশগুলো বলেছে, তারা ফিলিস্তিনের গাজা পুনর্গঠনে আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাকে সমর্থন করে।
আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত না করেই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
গাজা পুনর্গঠনে মিসরের পরিকল্পনাটি আরব নেতারা অনুমোদন করেছেন। কায়রোতে গত মঙ্গলবার আরব লিগের সম্মেলনে মিসরের প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়। এর তিন দিন পর গতকাল শনিবার জেদ্দায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠকে প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুনআরব নেতাদের গাজা পুনর্গঠন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল০৫ মার্চ ২০২৫কিন্তু আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে। যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজা জোর করে খালি করার পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্পের।
ট্রাম্পের প্রস্তাবে গাজাবাসীকে জর্ডান ও মিসরে সরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’য় (ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল বরাবর একটি রিসোর্ট এলাকা) পরিণত করার বিষয়ে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি আরব নেতারা নাকচ করেছেন।
আরও পড়ুনগাজা পুনর্গঠনে বিকল্প প্রস্তাবে সমর্থন ওআইসির ১৪ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাটি ট্রাম্পের ধারণার একটি বিকল্প। গতকাল শনিবার ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাটিকে ‘বাস্তবসম্মত’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন। এই পরিকল্পনায় পাঁচ বছরের মধ্যে গাজা পুনর্গঠনের কথা বলা আছে।
এক বিবৃতিতে ইউরোপের এই দেশগুলো পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, আরব-সমর্থিত প্রস্তাবটিতে গাজার বিপর্যয়কর জীবনযাত্রার দ্রুত ও টেকসই উন্নতির প্রতিশ্রুতি আছে।
আরও পড়ুনগাজা পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিকল্প প্রস্তুত০৪ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনগাজা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করল আরব দেশগুলো০৪ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আরব সমর থ ত প ব কল প ন কর ছ
এছাড়াও পড়ুন:
এই সরকার চলে গেলেও যেন মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল: অর্থ উপদেষ্টা
এবারের বাজেট বাস্তবসম্মত হবে মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সরকার বাজেট নিয়ে এখন যা বলছে সেভাবেই করা হবে। যাতে এই সরকার চলে গেলেও মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল।’
বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৪৫ তম সভায় তিনি এ কথা বলেন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের বাজেট বাস্তবসম্মত করা হবে। চিরাচরিত বাজেটের মতো হবে না। বাজেট নিয়ে এখন যা বলছে সরকার, সেভাবেই করার চেষ্টা থাকবে। যেন এই সরকার চলেও গেলেও যাতে মানুষ বলে বাজেট ভালো হয়েছিল। বিগত সময়ে বড় বাজেট দেওয়া হতো, কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতো না। কিন্তু এই সরকার যে বাজেট দিবে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা থাকবে।’
কর অব্যাহতির দিন চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন ড. সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়বে। ব্যবসায়ীদেরও প্রতিযোগী হতে হবে। ব্যবসায়ীরা কর দিলে সুবিধা পাবেন। কিন্তু অনেকেই কর অব্যাহতি বা কর রেয়াতি সুবিধা চায়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে অব্যাহতির দিন চলে গেছে। রাজস্ব আয় বাড়ানো নিয়ে এ সরকারের ওপর অনেক চাপ আছে। ব্যবসায়ীরা যে কর দেন তার সুবিধাও তারা ভোগ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে যেসব ব্যবসায়ী আছেন বা যে চেম্বারগুলো রয়েছে অনেক সময় তাদের কথা শোনা হয় না। তবে সরকার তাদের জন্যে কাজ করছে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারে দায়িত্বে থাকায় এখন অনেক গালমন্দ খেতে হচ্ছে। সরকারের ভুলত্রুটি থাকতে পারে। তবু সরকার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে রাখতে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার শুধু আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেনি। অন্যান্য সব পক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছে। আইএমএফের সঙ্গে এখনও শর্ত মেলেনি। কঠোর দর কষাকষি হচ্ছে। চেষ্টা চলছে।’
এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমনান বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে অংশীজনদেন প্রত্যাশা অনেক।’
তিনি বলেন, ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ, এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষগুলো বিবেচনা নিয়ে আগামী অর্থ বছরের জন্য বিনিয়োগ ও ব্যবসা বান্ধব বাজেট প্রণীত হবে বলে এফবিসিসিআই বিশ্বাস করে। এছাড়া নীতি সহায়তার মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয় থাকবে বলে এফবিসিসিআই প্রত্যাশা করে।
সভায় ব্যবসায়ীরাদের পক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ'র সভাপতি শওকত আজীজ রাসেল, রিহ্যাবের পরিচালক আইয়ুব আলী প্রমুখ।