কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচতলার বারান্দার শয্যা থেকে গত শুক্রবার রাতে পড়ে রোগীর মৃত্যুর পর সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি। ফলে মেঝেতে, করিডরে রোগীদের ঠাঁই দিতে হয়। এ ছাড়া নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের কারণে দমবন্ধ পরিস্থিতি হয় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের জন্য মোট শয্যা ৫০০টি। তবে ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিনই এক হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। ফলে শয্যাসংকটে রোগীদের কখনো হাসপাতালের মেঝেতে আবার কখনো ঠাঁই হচ্ছে বারান্দা বা করিডরে। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৪ জন। এর আগের দিন শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৯ জন। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, গরমের সময় রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ হয়ে যায়।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের ওসমান গনি (৪৭) শুক্রবার মারা যান। তাঁকে ৩ মার্চ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ভর্তির দিন থেকে তিনি ওয়ার্ডের সামনের করিডরে অরক্ষিত একটি শয্যায় ছিলেন। সেখান থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওসমান গনির স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, ঘুম না আসায় শয্যার সঙ্গে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে ছিলেন তাঁর স্বামী। মাথা ঝোঁকালে তিনি হঠাৎ নিচে পড়ে মারা যান।

ওসমান গনি যেখান থেকে পড়ে যান, শনিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোনো শয্যা নেই। সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নার্স বলেছেন। সার্জারি বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে ৮১টি শয্যার বিপরীতে ৯১ জন রোগী ভর্তি আছেন। ওয়ার্ডের সামনে সিঁড়ি লাগোয়া করিডরে কয়েকজন রোগীকে ভর্তি অবস্থায় দেখা গেছে।

আরও পড়ুনকুমিল্লা মেডিকেলের বারান্দার বেড থেকে পড়ে রোগীর মৃত্যু০৮ মার্চ ২০২৫

শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করে ভর্তি রোগীদের কয়েকজন স্বজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, এই হাসপাতালে একটি শয্যা পেতে যুদ্ধ করতে হয় রোগীদের। একটি সিট খালি হলেই অন্য রোগীর স্বজনেরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন শয্যা নেওয়ার জন্য। অনেকে দালাল বা হাসপাতালের কর্মচারীদের টাকা দিয়ে শয্যার ব্যবস্থা করেন।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। দুর্গন্ধ তো আছেই। এমন পরিবেশে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক রোগী। শয্যা না পাওয়ায় মেডিসিন বিভাগের ভেতরের মেঝে ছাড়িয়ে রোগীরা ঠাঁই নিয়েছেন সিঁড়ির সামনের খালি জায়গাতেও। ওই বিভাগে পুরুষ ওয়ার্ডে শয্যা আছে ৬৪টি; শনিবার সেখানে ১৬৭ জন রোগী ভর্তি ছিলেন।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারান্দার এই জায়গায় পাতা শয্যা থেকে পড়ে মারা যান ওসমান গনি নামের এক রোগী। ঘটনার পর শয্যা সরিয়ে নেওয়া হয়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ