মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে রিমান্ড শুনানিও হয়নি।

পুলিশ বলছে, আদালতের মূল ফটকে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ করে রাখায় আসামিদের আদালতে হাজির করার ঝুঁকি নেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এর আগে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বেলা ১১টার দিকে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভেতর থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে তাঁরা মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে সেনাবাহিনীর আশ্বাসে বেলা আড়াইটার দিকে আদালতের মূল ফটক ছেড়ে তাঁরা ভায়নার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

আরও পড়ুনমাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় চার আসামির রিমান্ডের আবেদন, আদালতের ফটকে বিক্ষোভ৪ ঘণ্টা আগে

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলার মূল অভিযুক্ত শিশুটির বোনের শ্বশুরকে বৃহস্পতিবার আটক করা হয়। এ ঘটনায় তখনো মামলা না হওয়ায় আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে পরদিন শুক্রবার তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। শিশুটির মা শনিবার মামলা করেন। এখন ধর্ষণের মামলায় প্রথম ওই আসামিকে (বোনের শ্বশুর) গ্রেপ্তার দেখাতে হবে। এ জন্য আসামিকে আদালতে হাজির করার বাধ্যবাধকতা আছে। এ ছাড়া তিনিসহ অন্য আসামিদের রিমান্ড শুনানির জন্য আদালতে হাজির করার বাধ্যবাধকতা আছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

আলাউদ্দিন বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, চার আসামি কারাগারে আছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এখনো রিমান্ড শুনানি হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আসামিদের নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় তাঁদের আদালতে হাজির করতে না পারায় রিমান্ড আবেদনের শুনানি করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুনমাগুরায় আদালতের ফটক ছেড়ে শিক্ষার্থীদের ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ৩ ঘণ্টা আগে

এ বিষয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গতকাল রাত থেকেই রিমান্ড আবেদনসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে রেখেছিলাম। কিন্তু আসামিদের আদালতে হাজির করার ঝুঁকি নেওয়া যায়নি। দিনভর আন্দোলনকারীরা আদালতের ফটক ঘিরে রেখেছিল। আসামিদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলছিল। আদালতে আনতে গিয়ে আসামিদের ওপর হামলা বা তার চেয়েও খারাপ কিছু হলে দায় কে নেবে? যাঁরা ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন করছেন, তাঁদের তো এটুকু ধৈর্য ধরতে হবে। তাঁদের কারণেই যদি তদন্ত বিলম্বিত হয়, সেই দায় কে নেবে?’

আজ আদালতের মূল ফটক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। অন্যথায় আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে ‘মার্চ টু মাগুরা’ কর্মসূচি দেওয়া হবে। বেলা একটার পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর একটি দল আসে। পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের আশ্বাস পেয়ে বেলা সোয়া দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা আদালতের ফটক থেকে সরে শহরের ভায়না মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখানেও ধর্ষণে জড়িতদের জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটির মা বললেন, ‘ইশ্‌! ক্যান যে পাঠাইছিলাম’২ ঘণ্টা আগে

মাগুরা পৌর এলাকায় বোনের (শ্বশুর) বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে গত বুধবার দিবাগত রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার অচেতন অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে শিশুটি উন্নত চিকিৎসার জন্য এখন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় গতকাল শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ জ র কর র কর মকর ত র জন য অবর ধ তদন ত ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু

তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। 

রোববার তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞ‌প্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
+ ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও  +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ