আড়াইহাজারে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর ইফতার ও দোয়া মাহফিল
Published: 9th, March 2025 GMT
আড়াইহাজারে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উপজেলা শাখার উদ্যোগে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সাথে ইফতার, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৯ মার্চ) স্থানীয় রয়েল রেস্টুরেন্টে এর আয়োজন করা হয় ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আড়াইহাজার শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা মাসরুর আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের আড়াইহাজারের দক্ষিনের আমীর মাওলানা হাদিউল ইসলাম, উত্তরের আমীর মাওলানা মনিরুল ইসলাম, আড়াইহাজার থানা প্রেসক্লাব সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সম্পাদক মজিবুর রহমান, আড়াইহাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ লিটন, বিখ্যাত আলেম মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম জিহাদী, বাংলাদেশ ফেলাফত মজলিশের উপজেলা সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী, সাধারণ সম্পাদক মুফতি আশরাফুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের নেতা ক্বারী মাযহারুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মাওলানা গিয়াস উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামাত, গনঅধিকারসহ অন্যান্য ইসলামী দল সমুহের সভাপতি সেক্রেটারী, সাংবাদিক উপজেলা জমিয়ত, যুব জমিয়ত ও ছাত্র জমিয়ত নেতৃবৃন্দগন।
মাহফিলে বক্তারা রমজানের তাৎপর্য এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রেখে বলেন, রমজান আমাদেরকে পরিশুদ্ধ ও সংযমের শিক্ষা দেয়। পরিশুদ্ধ জীবনের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করা সম্ভব। সমাজের রন্ধে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। তা থেকে মুক্তির জন্য পরিশুদ্ধ জীবনের কোন বিকল্প নেই। স,যে ও যোগ্য মানুষের দ্বারাই কল্যাণকামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ইসলাম সার্বজনীন জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের সৌন্দর্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ফুটিয়ে তুলতে জমিয়ত কর্মীদের কাজ করে যেতে হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ইফত র ল ইসল ম অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় এক মাসে ১৩ লাশ উদ্ধার, বাড়ছে উদ্বেগ
বাড়িতে ঝগড়া চলছিল বড় ভাই ও ভাবির। ছোট ভাই এসে ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই ছোট ভাইয়ের মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ধারালো বঁটি দিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা করেন। পরে বড় ভাই শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ মে, খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলা গ্রামে।
এর আগে ২৭ মে কয়রার ইসলামপুর গ্রামের কয়রা নদীর চর থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় আবদুল মজিদ (৬২) নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ৮ জুন কয়রার কাছারিবাড়ি বাজার-সংলগ্ন পুকুর থেকে নমিতা (৪০) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
১০ জুন কয়রা সদরের গোবরা সড়কে এক ভ্যানচালকের সঙ্গে এক মোটরসাইকেলচালকের কথা-কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন। ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া কথা-কাটাকাটির জেরে কয়রার পল্লীমঙ্গল গ্রামে গত তিন দিনে কয়েক দফা মারামারি, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
অসন্তোষ-দ্বন্দ্বের জেরে কয়রা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা–সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ১০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত এক মাসে খুলনার ১০টি থানা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ ১৩টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান কমে যাওয়ায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। মূল্যবোধ ও ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও ভালোবাসা কমে যাচ্ছে। এতে খুনখারাবি বাড়ছে। একসময় সমাজের একজনের ভালোতে সবাই আনন্দ পেতেন। নেতিবাচক দিকগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতেন। এখন সেই ব্যবস্থা উঠেই গেছে বলা যায়। পাশাপাশি রাজনৈতিক আধিপত্যের লড়াইয়ে প্রভাববলয় সৃষ্টি করতেও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
৩ জুন খুলনা শহরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সবুজ হাওলাদার (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। ৪ জুন খুলনা সদর থানার মতিয়াখালী খালের মধ্যে আটকে ছিল এক নারীর মরদেহ। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ওই নারীর পরিচয় না পেয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুলে দাফন করা হয়। গত ৯ জুন বিকেলে রূপসা উপজেলার আঠারোবেকী নদীতে পাওয়া যায় অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ। মরদেহের শ্বাসনালিতে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল। রূপসা নৌ পুলিশের ওসি আবুল খায়ের বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রহস্য উদ্ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণেই অপরাধ বেড়ে চলেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি তরিকুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারলে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে। আইনি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপরাধ বেড়ে চলেছে।
কয়রা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে প্রতিটি ঘটনায় পুলিশও তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যে বিষয়গুলো পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধের মধ্য দিয়ে সমাধান করা যায়, সেখানে খুনাখুনি, অস্থিরতা, মামলা-হামলার মধ্য দিয়ে একধরনের বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে; যা সবার জন্যই অকল্যাণকর ও ভয়ানক।