Samakal:
2025-05-01@04:54:31 GMT

ট্রাম্পের ইউক্রেন দর্শন

Published: 9th, March 2025 GMT

ট্রাম্পের ইউক্রেন দর্শন

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন এমন সময় ইউক্রেনের ব্যাপারে চুক্তি করার সন্নিকটে, যখন লন্ডনের ল্যাঙ্কাশায়ার হাউসে ১৮ জন ইউরোপীয় নেতা সম্মিলিত সভায় বার্তা দেন, জেলেনস্কি ভালো অবস্থায় রয়েছেন। ঘটনার বিন্দুগুলো সংযুক্ত করে পেন্টাগন ও ক্যাপিটল হিলে সাবেক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা স্টিফেন ব্রায়ান সাবস্ট্যাকে লিখেছেন, ‘ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে তাদের বক্তৃতা তুলে ধরার জন্য ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, যা সুস্পষ্ট। ফরাসিরা মোটামুটি অসন্তুষ্ট হয়ে চলে গেল, কিন্তু স্টারমার সাধারণভাবে সম্মত বলে মনে হয়েছিল। 

ট্রাম্প তাঁর শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে যে কৌশল নেবেন, তা পরবর্তী পরিস্থিতির ইঙ্গিতবহ। ট্রাম্প ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ অথবা আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারেন– এমন এক জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এটা খুবই অসম্ভাব্য, ট্রাম্প ইইউর মেজাজে ক্ষুব্ধ হবেন বা যুক্তরাজ্যের প্রদর্শনীমূলক পদক্ষেপ দ্বারা প্রভাবিত হবেন। জার্মানি আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য সরকারবিহীন থাকবে; এটি ইউরোপীয়দের পাটাতন দুর্বল করে।

নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশ করেছে, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ মার্কিন সাইবার কমান্ডকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে সব অভিযানের বড় আকারে পুনর্মূল্যায়নের অংশ হিসেবে।’ একইভাবে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পুতিন রাশিয়ার সংস্থাগুলোকে আটকানোর জন্য অনুরূপ নির্দেশনা দিয়েছেন।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন পৃথকভাবে মার্কিন নীতিতে পরিবর্তনের দ্য টাইমসের অনুসন্ধানকে সমর্থন দিয়েছে। এতে বলা হয়, মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্কের উষ্ণতা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘রাশিয়াকে আর সাইবার নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে মনে করছে না।’

এতে দাবি করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপার সিক্রেট সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সির (সিসা) বিশ্লেষকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গার্ডিয়ানকে বলেছেন, তাদের ‘মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল, তারা যেন রাশিয়ান হুমকিগুলো অনুসরণ না করে কিংবা রিপোর্ট না করে, যদিও এটি আগে এজেন্সির প্রধান ফোকাস ছিল।’ স্পষ্টতই, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের ‘বিশেষ সম্পর্ক’তে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যভাবে বলতে গেলে, ট্রাম্প প্রশাসন সিসাকে দুর্বৃত্ত অভিযান থেকে আলাদা করার পদক্ষেপ নিচ্ছে।

স্নায়ুযুদ্ধকালে গুপ্তচর সংস্থাগুলোর বেআইনিভাবে অভিযান চালানোর ইতিহাস রয়েছে। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি দেখা গেছে ১৯৬০ সালের ১ মে। ফ্রান্সিস গ্যারি পাওয়ারস চালিত একটি মার্কিন গুপ্তচর বিমান ৮০ হাজার ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নরত অবস্থায় সোভিয়েত বিমান ঘাঁটিতে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল। এই ঘটনা কূটনৈতিক সংকটের সৃষ্টি করেছিল। এতে প্যারিসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডুয়েইট আইজেন হাওয়ার ও সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভের শীর্ষ এক সম্মেলন বাতিল হয়। হঠাৎ দুই নেতার মৃত্যুতে দুই দেশের সম্পর্কের জটিলতা নিরসনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।  
আজ একটি সাদৃশ্যপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ওয়াশিংটন ও মস্কো উভয়েই এ বিষয়ে সচেতন। ক্রেমলিন ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপের চারপাশে এমন গোপনীয়তার আবরণের প্রয়োজনীয়তা নিজেই তার প্রমাণ। গোটা পাশ্চাত্যে এমন অনেক বিরোধিতাকারী রয়েছে, যারা যে কোনো মূল্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না, বরং তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
এ রকম উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সামরিক-প্রতিরক্ষা শিল্পের জটিল বা প্রতিশোধমূলক মানসিকতার সঙ্গে অত্যধিক যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে যতই ভিন্নমতের কণ্ঠস্বর থাকুক, রাশিয়ার পক্ষে ক্রেমলিনের রিট শেষ পর্যন্ত প্রাধান্য পায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় এটি এমন নয়, যেখানে পুরোনো শাসনের অবশিষ্টাংশ এখনও সংবেদনশীল অবস্থানে রয়েছে; যেমনটা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। সুতরাং, চূড়ান্ত বিশ্লেষণে এটি চমৎকারভাবে পরিণত হতে পারে, যেমনটা স্টিফেন ব্রায়ান বলেছেন। তাঁর মতে, ট্রাম্প ‘ইউক্রেনকে ভেঙে পড়তে দেবেন, তবে জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হলে ইউক্রেনের ব্যাপারে পুতিনের সঙ্গে একটি চুক্তি চাইতে পারেন।’

এম কে ভদ্রকুমার: ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক; ইন্ডিয়ান পাঞ্চলাইন থেকে সংক্ষেপিত ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ