দখল-দূষণসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে ধ্বংস হচ্ছে জলাধার। সিলেট ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়নে তেমনই একটি দৃশ্য নজরে পড়ে। এখানে কালাসারা হাওর থেকে প্রমত্তা রত্না নদীর শেষ চিহ্ন দাশপাড়া খাল হয়ে দয়ালং হাওরে জল প্রবাহিত হয়।
প্রায় দুই যুগ আগেও এই খাল দিয়ে সব ধরনের নৌকা চলাচল করতে দেখা গেলেও এখন পানি চলাচল করতে পারে না। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খালের বিভিন্ন স্থানে বিরাট অংশ মাটি ভরাট করে সরু কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলপ্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখনও এ ধরনের সরু কালভার্ট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
এমন অবস্থায় একদিকে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি ব্যবস্থা, অন্যদিকে তৈরি হয়েছে বন্যার ঝুঁকি। এসব সরু কালভার্ট উচ্ছেদ করে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্ট নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, কালাসারা হাওর থেকে দাশপাড়া হয়ে দয়ালং হাওরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী খালের কালাসারা হাওর অংশে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে খালটি ভরাট হয়ে গেলে জলপ্রবাহের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এমন অবস্থায় ২০২৫ সালে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। কিছু
ব্যক্তি নিজেদের প্রয়োজনে খনন করা খালের বিভিন্ন স্থান ভরাট করে খালের প্রশস্ততা কমিয়ে সরু কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলপ্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।
সম্প্রতি ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের ফলে খালের দুই পাশের জায়গার কদর বেড়ে যাওয়ায় সরু কালভার্ট নির্মাণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গত প্রায় এক যুগে খালের ওপর অন্তত ৬টি এমন কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এখনও কালভার্ট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি একটি কালভার্ট নির্মাণের খবর পেয়ে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালটি পরিদর্শন করেছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সরু কালভার্ট না করে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্ট নির্মাণ করলে জলপ্রবাহে কোনো প্রতিবন্ধকতা
সৃষ্টি হতো না।
শুধু এ খাল নয়, উপজেলার সর্বত্র এমন অবস্থা বিরাজ করছে। দখল ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে খালবিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্ষায় জলাবদ্ধতা এবং গ্রীষ্মে পানির অভাবে প্রতিবছর অনেক জমি পতিত পড়ে থাকছে। খালগুলো দখলমুক্ত করে খননের মাধ্যমে সচল করা গেলে কৃষির উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হস্তিদুর গ্রামের তুতিউর রহমান চৌধুরী তোতা মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে এখানে বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্টগুলো নির্মাণ করা প্রয়োজন ছিল।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (সেচ, উইং) সিলেটের বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী রুবায়েত ফয়সাল মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর প রব হ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।