Samakal:
2025-06-15@23:08:10 GMT

কালভার্টে মরছে জলাশয়

Published: 9th, March 2025 GMT

কালভার্টে মরছে জলাশয়

দখল-দূষণসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে ধ্বংস হচ্ছে জলাধার। সিলেট ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়নে তেমনই একটি দৃশ্য নজরে পড়ে। এখানে কালাসারা হাওর থেকে প্রমত্তা রত্না নদীর শেষ চিহ্ন দাশপাড়া খাল হয়ে দয়ালং হাওরে জল প্রবাহিত হয়।
প্রায় দুই যুগ আগেও এই খাল দিয়ে সব ধরনের নৌকা চলাচল করতে দেখা গেলেও এখন পানি চলাচল করতে পারে না। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খালের বিভিন্ন স্থানে বিরাট অংশ মাটি ভরাট করে সরু কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলপ্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখনও এ ধরনের সরু কালভার্ট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
এমন অবস্থায় একদিকে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি ব্যবস্থা, অন্যদিকে তৈরি হয়েছে বন্যার ঝুঁকি। এসব সরু কালভার্ট উচ্ছেদ করে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্ট নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 
জানা যায়, কালাসারা হাওর থেকে দাশপাড়া হয়ে দয়ালং হাওরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী খালের কালাসারা হাওর অংশে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে খালটি ভরাট হয়ে গেলে জলপ্রবাহের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এমন অবস্থায় ২০২৫ সালে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। কিছু 
ব্যক্তি নিজেদের প্রয়োজনে খনন করা খালের বিভিন্ন স্থান ভরাট করে খালের প্রশস্ততা কমিয়ে সরু কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলপ্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।
সম্প্রতি ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের ফলে খালের দুই পাশের জায়গার কদর বেড়ে যাওয়ায় সরু কালভার্ট নির্মাণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গত প্রায় এক যুগে খালের ওপর অন্তত ৬টি এমন কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এখনও কালভার্ট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি একটি কালভার্ট নির্মাণের খবর পেয়ে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালটি পরিদর্শন করেছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সরু কালভার্ট না করে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্ট নির্মাণ করলে জলপ্রবাহে কোনো প্রতিবন্ধকতা 
সৃষ্টি হতো না।
শুধু এ খাল নয়, উপজেলার সর্বত্র এমন অবস্থা বিরাজ করছে। দখল ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে খালবিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্ষায় জলাবদ্ধতা এবং গ্রীষ্মে পানির অভাবে প্রতিবছর অনেক জমি পতিত পড়ে থাকছে। খালগুলো দখলমুক্ত করে খননের মাধ্যমে সচল করা গেলে কৃষির উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হস্তিদুর গ্রামের তুতিউর রহমান চৌধুরী তোতা মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে এখানে বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্টগুলো নির্মাণ করা প্রয়োজন ছিল। 
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (সেচ, উইং) সিলেটের বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী রুবায়েত ফয়সাল মো.

হাবিবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, কিছুদিন পূর্বে সম্প্রতি এ উপজেলায় যোগদান করেছেন তিনি। খালের একটি কালভার্ট নির্মাণের খবর পেয়ে পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর প রব হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ