সাভারে নারী পুলিশ সদস্যকে পেটাল গাড়িচালক
Published: 9th, March 2025 GMT
সাভারে তুচ্ছ ঘটনায় এক নারী কনস্টেবলকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহর গাড়িচালক সোহেল বাবুর বিরুদ্ধে।
রোববার দুপুরে থানা রোডে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত ওই পুলিশ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরের শিকার ওই নারী কনস্টেবল সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ওই নারী কনস্টেবলের নাম ইতি খানম। তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় কর্মরত আছেন এবং সাভার মডেল থানার কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত সোহেল বাবু সাভার পৌর এলাকার ভাগলপুর মহল্লায় থেকে পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহর গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করে।
থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী পুলিশ কনস্টেবল সাভার থানা রোডে রিকশাযোগে যাওয়ার পথে সাইড চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ি চালক সোহেল বাবু লোহার রড দিয়ে ওই নারী কনস্টেবলকে এলোপাথাড়িভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মারধরের শিকার ওই পুলিশ কনস্টেবল জানান, আমি কালিয়াকৈর থানায় নারী ও শিশু ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে কর্মরত আছি। দুপুরে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে আমার প্রতিবন্ধী বাচ্চাকে রেখে আসতে দেরি হওয়ায় থানা রোডে জ্যামে পড়ি। তাই রিকশা চালককে দ্রুত এক পাশ দিয়ে যেতে বলি। এসময় সোহেল নামের ওই ড্রাইভারকে অনুরোধ করে বলি, ভাই আমি পুলিশের লোক, কালিয়াকৈর থানায় আমার ডিউটি চলে। আমাকে একটু সাইড দিয়ে যেতে দেন। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সে আমাকে ও পুলিশকে নিয়ে বকা দেয় আর আমাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাথারিভাবে মারতে শুরু করে। রিকশায় বসা অবস্থায় সমানে আমর দুই পায়ে পিটাতে থাকলে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করেছি, আমার পা ফ্যাক্সার হয়ে গেছে। এ ঘটনায় আমি সাভার থানায় অভিযোগ করেছি।
এদিকে মারধরের বিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল বাবুর গাড়ির মালিক সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহ জানান, আমি গাড়িতে ছিলাম না। ঘটনাটি শুনে ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছি।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, নারী পুলিশ কনস্টেবলকে মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাভার থানা রোডে তার ওপর হামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল শ হয়র ন ম রধর র ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব