সাভারে তুচ্ছ ঘটনায় এক নারী কনস্টেবলকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহর গাড়িচালক সোহেল বাবুর বিরুদ্ধে।

রোববার দুপুরে থানা রোডে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত ওই পুলিশ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরের শিকার ওই নারী কনস্টেবল সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ওই নারী কনস্টেবলের নাম ইতি খানম। তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় কর্মরত আছেন এবং সাভার মডেল থানার কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত সোহেল বাবু সাভার পৌর এলাকার ভাগলপুর মহল্লায় থেকে পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহর গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করে।

থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী পুলিশ কনস্টেবল সাভার থানা রোডে রিকশাযোগে যাওয়ার পথে সাইড চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ি চালক সোহেল বাবু লোহার রড দিয়ে ওই নারী কনস্টেবলকে এলোপাথাড়িভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মারধরের শিকার ওই পুলিশ কনস্টেবল জানান, আমি কালিয়াকৈর থানায় নারী ও শিশু ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে কর্মরত আছি। দুপুরে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে আমার প্রতিবন্ধী বাচ্চাকে রেখে আসতে দেরি হওয়ায় থানা রোডে জ্যামে পড়ি। তাই রিকশা চালককে দ্রুত এক পাশ দিয়ে যেতে বলি। এসময় সোহেল নামের ওই ড্রাইভারকে অনুরোধ করে বলি, ভাই আমি পুলিশের লোক, কালিয়াকৈর থানায় আমার ডিউটি চলে। আমাকে একটু সাইড দিয়ে যেতে দেন। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সে আমাকে ও পুলিশকে নিয়ে বকা দেয় আর আমাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাথারিভাবে মারতে শুরু করে। রিকশায় বসা অবস্থায় সমানে আমর দুই পায়ে পিটাতে থাকলে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করেছি, আমার পা ফ্যাক্সার হয়ে গেছে। এ ঘটনায় আমি সাভার থানায় অভিযোগ করেছি।

এদিকে মারধরের বিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল বাবুর গাড়ির মালিক সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহ জানান, আমি গাড়িতে ছিলাম না। ঘটনাটি শুনে ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছি।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, নারী পুলিশ কনস্টেবলকে মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাভার থানা রোডে তার ওপর হামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ হয়র ন ম রধর র ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ