বনানীতে নারী শ্রমিককে চাপা দেওয়া পিকআপের নিবন্ধন স্থগিত
Published: 10th, March 2025 GMT
বনানীতে নারী পোশাকশ্রমিককে চাপা দেওয়া পিকআপটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। পিকআপের মালিককে প্রয়োজনীয় সব দলিল এবং চালককে তাঁর লাইসেন্সসহ তিন দিনের মধ্যে বিআরটিএতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় পিকআপটির নিবন্ধন নম্বর (ঢাকা মেট্রো-ন-১৪-০৭৬২) স্থায়ীভাবে বাতিল করে মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিআরটিএ।
আজ সোমবার সকাল ৬টা ৪১ মিনিটের দিকে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় কলাবোঝাই একটি পিকআপের চাপায় মিনা আক্তার নামের এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত হন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে মহাখালীর আমতলী পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন। এতে দুই পাশের সড়কে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়লে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
বিআরটিএর তথ্য অনুসারে, পিকআপটির মালিকের নাম টিটন ইসলাম। ঠিকানা কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধোপাইল এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরই বিআরটিএর পক্ষ থেকে নিবন্ধন স্থগিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর পিকআপের মালিকের যে ফোন নম্বর বিআরটিএতে রক্ষিত আছে, সেই নম্বরে কল করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বিআরটিএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ভয় পেয়ে হয়তো মালিক ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। তবে বিআরটিএ থেকে নোটিশ করা হলে বেশির ভাগ মালিকই হাজির হন। এই যানের মালিক এবং চালককেও হাজির করা যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
আরও পড়ুন৭ ঘণ্টা পর বনানীর সড়ক ছাড়লেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা, অবরোধে ভোগান্তি৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প কআপ র ব আরট এ ন বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।