নারী ও কন্যা নির্যাতন জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে: মহিলা পরিষদ
Published: 10th, March 2025 GMT
বর্তমানে নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। তারা মনে করে, এটি এখন জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ ধরনের সহিংসতা বন্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় পরিষদের সদস্যরা এ কথা বলেন।
‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ বিষয়ে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির সদস্যদের নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বর্তমানে নারী ও কন্যা নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। এ ব্যাপারে বিশেষ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এ ছাড়া নারীর প্রতি যা হচ্ছে, তা কেবল নারীর ইস্যু নয়। এটি একটি সামাজিক সমস্যা, যা দূর করতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার এই পরিস্থিতি এ সময়ে হঠাৎ করে বেশি খারাপ হলো। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রকে দায়বদ্ধ করতে হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয় সব সময়ই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটি সব সময়ই গুরুত্বহীন থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে নারীরা নিরাপদে হাঁটতে পারেন।
লেখক ও গবেষক মফিদুল হক বলেন, নারীর প্রতি নৃশংসতা বাড়ছে। ধর্মের নামে ধর্মের অপব্যবহার হচ্ছে। এসব বিষয়ে আইনের বাধাগুলোও চিহ্নিত করতে হবে।
অন্যদিকে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় কী কারণে সাজা হচ্ছে না, মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণ কী—এসব চিহ্নিত করে দূর করতে হবে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম এ সবুর।
তথ্যপ্রযুক্তি–বিশেষজ্ঞ মাহবুব জামান বলেন, নারী নির্যাতনের বর্তমান পরিস্থিতি নারী ও কন্যা নির্যাতনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, সামাজিক নৈরাজ্য হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, আইনের প্রয়োগ না হলে, আইন পরিবর্তন করে বেশি কিছু করা যায় না।
সভায় বলা হয়, গত বছর (২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) ৫১৬ জন নারী ও কন্যা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। চলতি বছরের দুই মাসেই (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ৯৭ জন ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন। নারী ও কন্যা নির্যাতন এখন জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মাসুদা রেহানা বেগম, মনোরোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহিদা চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন পর স থ ত র সদস য সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল