মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। চোখের পাতা নেড়েছে সে। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
এদিকে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মাগুরার আদালতে রোববার রাতে চার আসামির রিমান্ড শুনানি হয়েছে। শিশুটির বোনের শ্বশুর মূল অভিযুক্ত হিটু শেখের সাত দিন, শাশুড়ি, স্বামী ও ভাশুরের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন এ আদেশ দেন। গতকালও মাগুরা আদালত চত্বর ও শহরে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত কার্যদিবসের মধ্যে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া ধর্ষকদের পক্ষে কোনো আইনি সহায়তা দেবে না বলে জানিয়েছে মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি।
শিশুটি এখন ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) প্যাডিয়াট্রিক আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। প্রতিদিন তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে।
শিশুটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষাবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
এদিকে গতকাল জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে রোববার মাগুরা আদালত চত্বরের সামনে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। আদালত চত্বরের সামনে অবরোধ করে রাখায় নিরাপত্তা শঙ্কায় দিনে আদালতে আসামি হাজির করেনি পুলিশ। ফলে রাত সাড়ে ১১টার পর চার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। রাতেই আদালত রিমান্ড শুনানি করেন।
মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলাউদ্দিন জানান, মূল অভিযুক্ত হিটু শেখকে সাত দিন এবং তার স্ত্রী জাবেদা বেগম, দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব হোসেন সমকালকে বলেন, সোমবারও শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। এ অবস্থায় আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়নি। তারা কারাগারে আছে। জিজ্ঞাসাবাদের বিষয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন।
শিশু ধর্ষণে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে গতকালও প্রায় দিনভর আদালত চত্বরসহ মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা। তারা ধর্ষকদের সাত দিনের মধ্যে ফাঁসির দাবি জানায়।
সকাল ১০টায় জেলা জজ আদালতের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহেদ হাসান টগর, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকনুজ্জামান ও নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মুকুল। বক্তারা এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তারা বলেন, আইনজীবীরা ধর্ষকদের পক্ষে কোনো আইনি সহযোগিতা দেবেন না। বরং আসামিদের বিপক্ষে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।
মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৫ মার্চ রাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুটি। পরদিন সকাল থেকেই সে অচেতন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ কর ছ ত র জনত আইনজ ব গতক ল অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি ও ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিট হয়েছে। এ রিটের ওপর আদেশের জন্য ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন।
ওই ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ ২৯ জুলাই রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ২১ জুলাই বিধ্বস্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে, ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪।
পরে আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে শিশুদের প্রায় পোশাকহীন, অগ্নিদগ্ধ ও আহত অবস্থায় দেখা যায়। এসব ছবি–ভিডিও শিশুদের পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের ট্রমাটাইজ (মানসিকভাবে আঘাত) করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি–ভিডিও প্রকাশে সংবেদনশীল হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ছবি ব্যবহারে আরও সতর্কতা প্রয়োজন। তাই হতাহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো আর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।