তাদের বাদ্যযন্ত্র তৈরি হয় সবজি দিয়ে
Published: 11th, March 2025 GMT
যেকোনো কিছু থেকেই সুর সৃষ্টি করা সম্ভব, নিজেদের এই বিশ্বাস শ্রোতাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে অভিনব এক কাজ করে যাচ্ছে একটি বাদক দল। তারা তাদের ট্যুরে শুধু সবজি দিয়ে তৈরি বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে চলেছে। প্রতিবারই একেবারে নতুন ও সতেজ বাদ্যযন্ত্র।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাতে ওই বাদক দল দিনের পর দিন এ কাজ করে চলেছে এবং সফল হয়েছে। দলটির নাম ‘দ্য ভেজিটেবল অর্কেস্ট্রা’। ১১ সদস্যের বাদক দলটি গঠিত হয় ১৯৯৮ সালে, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়।
বাদক দলটি এ পর্যন্ত ৩৪৪টি কনসার্টে তাদের বিশেষভাবে তৈরি বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছে। বাদ্যযন্ত্রগুলো মুলা, গাজর, শসা, বেগুন, কুমড়া ও লিকের মতো সবজি দিয়ে তৈরি।
ভেজিটেবল অর্কেস্ট্রার ওয়েবসাইটে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমরা যে ধ্বনি তৈরি করতে পারি, সেই ধ্বনি অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্র দিয়ে (সহজে) করা সম্ভব নয়। আপনি শুনেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন। এগুলো থেকে কখনো কখনো প্রাণীদের মতো আওয়াজ বের হয়, কখনো কখনো একেবারে বিমূর্ত ধ্বনি।’
বাদক দলটি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে যাচ্ছে এবং তাদের নতুন সব বাদ্যযন্ত্র তৈরির জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। কারণ, মঞ্চে তাদের অনুষ্ঠান চলাকালেই সবজি ভেঙে যেতে পারে বা শুকিয়ে যেতে পারে।
কনসার্ট শেষে দলটি দর্শকদের সবজির স্যুপ খেতে দেয়। বাদ্যযন্ত্র তৈরি করতে গিয়ে যেসব সবজি বেঁচে যায়, সেগুলো দিয়েই ওই স্যুপ তৈরি করা হয়।
ভেজিটেবল বাদক দলটির ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, ‘আপনি প্রায় সবকিছু থেকেই সুর তৈরি করতে পারবেন। প্রতিটি জিনিসের সুর তোলার নিজস্ব ক্ষমতা আছে। সেদিক থেকে দেখলে প্রতিটি জিনিসই বাদ্যযন্ত্র হয়ে উঠতে পারে।’
নিজেদের অভিনব এসব বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দলটি পৃথিবীর নানা প্রান্তে কনসার্ট করে বেড়াচ্ছে। তারা তাদের ওয়েবসাইটে শ্রোতাদের শুধু একটি প্রশ্ন করা বন্ধ করতে বলেছে। প্রশ্নটি হলো, তাঁরা সবাই নিরামিষভোজী কি না?
দলটি বলেছে, ‘না আমরা নই। এ প্রশ্ন আর করবেন না। আমরা ৩০ লাখবার এ প্রশ্ন শুনেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ যযন ত র ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।