ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডে আজ মঙ্গলবার সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

অতীতে গ্রিনল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনের ভোট বাইরের বিশ্বের খুব কমই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে। কিন্তু এবার এক ভিন্ন আবহের কারণে এ ভোট বাইরের বিশ্বের নজর কেড়েছে। আর্কটিক অঞ্চলটির ভবিষ্যতের জন্য এ ভোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার তাঁর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাঁর এ আগ্রহের বিষয়টি গ্রিনল্যান্ডকে আলোচনার কেন্দ্রে এনেছে।

কোপেনহেগেনের সঙ্গে দ্বীপটির ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলমান। ট্রাম্পের কথাবার্তা এ বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে।

ড্যানিশ-গ্রিনল্যান্ড নীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নাউজা বিয়ানকো বলেন, নির্বাচন ঘিরে এর আগে কখনো গ্রিনল্যান্ডকে এ রকমভাবে আলোচনার কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়নি।

গ্রিনল্যান্ড প্রায় ৩০০ বছর ধরে ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে। ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার দূরে দ্বীপটির অবস্থান। নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো পরিচালনা, দেখভালের দায়িত্ব দ্বীপটির স্বায়ত্তশাসিত কর্তৃপক্ষ পালন করে। আর দ্বীপটির পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতি-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয় কোপেনহেগেনে।

আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের দিকে ট্রাম্প ও অন্যদের কেন এত নজর২৮ জানুয়ারি ২০২৫

দ্বীপটির জনসংখ্যা ৬০ হাজারের কিছুটা কম। ভোটার প্রায় ৪৪ হাজার। স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপটির ৩১ আসনের পার্লামেন্টে চার বছর অন্তর অন্তর নির্বাচন হয়। পার্লামেন্টে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য ১৬ আসন পেতে হয়।

আজকের নির্বাচনে ছয়টি দলের প্রার্থীরা লড়ছেন। নির্বাচনের ফলাফল আগামীকাল বুধবার সকাল নাগাদ পাওয়া যেতে পারে।

গ্রিনল্যান্ডে বর্তমানে ক্ষমতায় আছে দুটি দলের জোট সরকার। দল দুটি হলো কমিউনিটি অব দ্য পিপল (আইএ) ও ফরোয়ার্ড (এস)। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগেদে।

আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ডে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আশা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প২৬ জানুয়ারি ২০২৫

নির্বাচনের ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো জরিপ নেই। তবে এগেদের ক্ষমতাসীন বামপন্থী জোট আবার জিতবে কি না, তা ভবিষ্যদ্বাণী করতে দ্বিধান্বিত বিশ্লেষকেরা।

যে ছয়টি দল নির্বাচনে লড়ছে, তার মধ্যে পাঁচটিই ডেনমার্ক থেকে গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে। তবে তা কত দ্রুত হওয়া উচিত, তা নিয়ে এই দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

কৌশলগত অবস্থানের পাশাপাশি অব্যবহৃত খনিজ সম্পদের কারণে দ্বীপটির ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নজর পড়েছে। তিনি তাঁর ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে গ্রিনল্যান্ড কেনার ধারণাটি প্রথম সামনে এনেছিলেন।

গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ক্ষমতায় বসার পর থেকে তিনি দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে তাঁর ইচ্ছার কথা বারবার বলে আসছেন। তবে ট্রাম্পের এই আগ্রহের বিষয়টি গ্রিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের নেতারা বারবার নাকচ করেছেন।

আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ড কেন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ০৯ জানুয়ারি ২০২৫

গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেন ট্রাম্প। ভাষণে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড আমাদের দরকার। যেকোনো উপায়ে আমরা এটি অর্জন করব।’

ট্রাম্পের এ বক্তব্য বেশ কিছু রাজনীতিবিদের কাছ থেকে করতালি কুড়ায়। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কেউ কেউ অবশ্য হেসেও দেন।

অন্যদিকে ট্রাম্পের এসব কথাবার্তা গ্রিনল্যান্ডের রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাঁরা এই কর্তার নিন্দা জানান।

প্রধানমন্ত্রী মুট এগেদে বলেছেন, তাঁরা সম্মানজনক আচরণ পাওয়ার যোগ্য। আর তিনি মনে করেন, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যা করছেন, তা সম্মানজনক নয়।

আরও পড়ুনট্রাম্প প্রথম নন, ৭৯ বছর আগেও গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র২৭ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ড নিজের থাবায় নিতে ট্রাম্পের তৎপরতাকে কী চোখে দেখছেন সেখানকার বাসিন্দারা১২ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ। 

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন

পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান,  অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।

গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়। 

তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”

নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ