বাবা বাড়ি ফিরে বিছানায় পেলেন ছেলের হাত–পা বাঁধা লাশ
Published: 11th, March 2025 GMT
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার নিজ বাসা থেকে পিয়াস মজুমদার (২২) নামের এক যুবকের হাত–পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের লাকিরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, বাড়িতে একা পেয়ে টাকা ও সোনা নিতে পিয়াসকে হা–পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
এলাকাবাসী জানান, পিয়াসের বাবা পল মজুমদার পেশায় একজন দন্তচিকিৎসক এবং তাঁর মা অনিতা বৈদ্য নার্সের চাকরি করেন। আজ সকালেও ওই দম্পতি নিজেদের কর্মস্থলে বেরিয়ে যান। তখন বাড়িতে একাই ছিলেন পিয়াস।
পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে পল মজুমদার বাড়িতে গিয়ে তাঁর ছেলে পিয়াসকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাটের ওপর দেখতে পান। ওই সময় বাসার আলমারিসহ আসবাব ভাঙাচোরা ও এলোমেলো অবস্থায় ছিল। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন সেখানে গিয়ে পিয়াসকে উদ্ধার করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ সময় পল মজুমদারের বাসার আলমারিসহ আসবাব ভাঙাচোরা ও এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান লোকজন।
প্রতিবেশী সলমন মজুমদার বলেন, ‘আমাদের ধারণা, ডাকাতি করতে এসে তাঁকে (পিয়াসের) হাত–পা বেঁধে হত্যা করে মালামাল নিয়ে গেছে ডাকাত দল।’
মরদেহের ময়নাতদন্তের পর হত্যার কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।