আমাদের সব কার্ডেই ডুয়াল কারেন্সি সুবিধা রয়েছে
Published: 13th, March 2025 GMT
সমকাল: রমজান ও ঈদ উপলক্ষে আপনাদের ক্রেডিট কার্ডে কী কী অফার রয়েছে?
খোরশেদ আনোয়ার: প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক ও ইএমআই সুবিধা নিয়ে আসে। এ বছর নির্দিষ্ট ক্লোথিং ও ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডে শপিং, সিলেকটিভ গ্রোসারি মার্চেন্টে ক্যাশব্যাক অফার, উইকেন্ড গ্রোসারি শপিংয়ে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, রোজায় নির্দিষ্ট হোটেল চেইনের সঙ্গে বুফে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ডিনার অফার এবং সিলেকটিভ ইএমআই মার্চেন্টে ক্যাশব্যাক অফার রয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন স্টোর, রেস্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি ও হোটেল বুকিংয়ে বিশেষ ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে। অফারগুলো নির্দিষ্ট শর্ত ও সীমিত সময়ের জন্য প্রযোজ্য। বিস্তারিত জানতে ইবিএল ওয়েবসাইটে ভিজিট অথবা হেল্পলাইনে কল করতে পারেন গ্রাহকরা।
সমকাল: আপনাদের কার্ডগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
খোরশেদ আনোয়ার: ইবিএল গ্রাহকদের জীবনযাত্রা ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষভাবে ডিজাইন করা ক্রেডিট কার্ড অফার করে থাকে। আমাদের সব কার্ডই ডুয়াল কারেন্সি সুবিধাসম্পন্ন, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজ করে তোলে। আমাদের ক্রেডিট কার্ডগুলো বিভিন্ন গ্রাহক চাহিদার ভিত্তিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। দৈনন্দিন কেনাকাটায় সাশ্রয়ী করার জন্য কিছু কার্ড বিশেষ ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক সুবিধা প্রদান করে। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ট্রাভেল কার্ড। প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য রয়েছে বিশ্বব্যাপী লাউঞ্জ অ্যাক্সেস, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইবিএল স্কাইলাউঞ্জ সুবিধা, ঢাকা বিমানবন্দরে মিট-অ্যান্ড-গ্রিট সেবা, এক্সক্লুসিভ ডিসকাউন্ট ও রিওয়ার্ড পয়েন্টসহ আরও অনেক সুবিধা। ইবিএল ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা প্রদান করে।
সমকাল: ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কতটা বাড়ছে?
খোরশেদ আনোয়ার: বাংলাদেশের বাজারে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। বর্তমান বাজার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন আরও সুবিধাজনক ও সহজলভ্য হয়ে উঠছে। এটি গ্রাহকদের দৈনন্দিন কেনাকাটা ও প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি তাদের অর্থ ব্যবস্থাপনায় আরও বেশি স্বাধীনতা দিচ্ছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার ধারণা সামনে রেখে ভবিষ্যতে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার আরও দ্রুত বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বাজারের এই বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইবিএল সর্বদা পরিবর্তনশীল গ্রাহক চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রেডিট কার্ড সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারের অগ্রগতিতে ইবিএল অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ভবিষ্যতেও উদ্ভাবনী অফার ও সুবিধার মাধ্যমে এই সেক্টরে নেতৃত্ব বজায় রাখবে।
সমকাল: ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে কী করণীয় রয়েছে?
খোরশেদ আনোয়ার: ডিজিটাল লেনদেনকে আরও জনপ্রিয় করতে হলে ডিজিটাল পেমেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন, গ্রাহকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং লেনদেন খরচ কমানো প্রয়োজন। ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) ডিজিটাল ব্যাংকিং এবং কার্ড পেমেন্টের মাধ্যমে এই পরিবর্তনের অন্যতম পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। আমাদের গ্রাহকদের জন্য রয়েছে ইবিএল স্কাইব্যাংকিং, যা একটি সমৃদ্ধ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপলিকেশন। এটি বিভিন্ন ইবিএল সেবাকে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একত্র করেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা যে কোনো সময়, যে কোনো স্থান থেকে অ্যাকাউন্ট চেক, ফান্ড ট্রান্সফার, বিল পেমেন্ট, মোবাইল রিচার্জ, ক্রেডিট কার্ড ম্যানেজমেন্ট, এটিএম লোকেশন, ব্রাঞ্চ লোকেশন ট্র্যাকিংসহ আরও অনেক সেবা নিতে পারেন।
সমকাল: ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে গ্রাহকদের কোন কোন ক্ষেত্রে সচেতন থাকা উচিত?
খোরশেদ আনোয়ার: ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অনুরোধ, দয়া করে কেউ ওটিপি, পিন, সিভিভি বা কার্ড ডিটেইলস কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। ব্যাংক কখনোই গ্রাহকের কাছ থেকে এই তথ্য জানতে চাইবে না। অনলাইন শপিংয়ের সময় বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক কোনো লেনদেন দেখে যোগাযোগ করতে হবে ব্যাংকের কন্ট্যাক্ট সেন্টারে। আমরা বিশ্বাস করি, গ্রাহক সচেতনতা ও উন্নত সাইবার সিকিউরিটি ব্যবস্থা সম্মিলিতভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত রাখবে।
সমকাল: ক্রেডিট কার্ড নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?
খোরশেদ আনোয়ার: ইবিএল ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিছু উদ্যোগ ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা আমাদের ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আমাদের প্রোডাক্ট ফিচারস অ্যান্ড বেনিফিটস ক্রমাগত আপডেট করছি, যা ডিজিটালি কম্প্যাটিবল এবং গ্রাহকদের জন্য উপকারী। এ ছাড়া আমরা নতুন ও উদ্ভাবনী ক্রেডিট কার্ড সলিউশন আনার জন্য পেমেন্ট স্কিম পার্টনারদের সঙ্গে কৌশলগতভাবে কাজ করছি। বাজারের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে আমাদের কার্ড সেলস টিমও ধাপে ধাপে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে, যাতে আমরা আরও কার্যকরভাবে নতুন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারি। ইবিএল বিশ্বাস করে, উন্নত গ্রাহক সেবা সাফল্যের চাবিকাঠি। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইবিএল ক্রমাগত তার ব্যাংকিং সেবাগুলো উন্নত করছে, যা পরিবর্তনশীল গ্রাহক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। উন্নত ডিজিটাল সেবা ও প্রোডাক্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ, নিরাপদ ও দক্ষ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতে ইবিএল আধুনিক ও উদ্ভাবনী সেবা নিয়ে দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে আরও প্রসারিত হবে বলে আশা করি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র ড ট ক র ড ব যবহ র গ র হকদ র জ দ র জন য গ র হক ল নদ ন আম দ র সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
দহন থেকে জংলি
‘আমি নিয়মিত অনেক চিত্রনাট্য পাচ্ছি। নিয়মিত সেসব সিনেমা করলে প্রচুর টাকা কামাতে পারব। ফিন্যান্সিয়ালি জায়গাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দর্শক আমাকে যেভাবে দেখতে চাচ্ছেন, তেমন গল্প পাচ্ছি না। দর্শক-প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কিছু দিতে চাই। যখন সামগ্রিক চিন্তা করি, তখন ভাবতে হয় আমি কতটা আয় করলাম তার চেয়েও দর্শকের সামনে কীভাবে আসছি, সেটি মুখ্য। এটি একটি প্যাকেজ। মাঝে একটি-দুটি গল্প পছন্দ হয়। সেসব টিমের যে অবস্থা, বাজেট সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভালো গল্প তুলে আনা কঠিন হবে। তখন আমি না করে দিই। আমি চাইছি নিজের মতো করে কাজ করতে। জীবনে অনেক সিনেমা করতে হবে, এমন চিন্তা নেই। আমার মতো করে অল্প কিছু কাজ করে যেতে চাই।’ বলছিলেন সিয়াম আহমেদ।
গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’। যে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নায়কের আবেগ ও পরিশ্রমের দীর্ঘ গল্প। সিনেমাটি করতে একচুলও ছাড় দেননি সিয়াম। ফলাফল হিসেবে পেয়েছেন দর্শকের অবারিত ভালোবাসা। জংলি মুক্তির পর তাই গল্পটি হয়ে উঠেছে সবার। দর্শকরা হলে গিয়ে কেঁদেছেন, গল্পে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। করেছেন সিয়াম ও তাঁর টিমের প্রশংসা।
সিয়াম বললেন, ‘এ সিনেমায় আমি দীর্ঘ সময় দিয়েছি। সিনেমার জন্য চুলদাড়ি বড় করেছি। একটি সিনেমার জন্য আমার পাগলামি নিয়ে মা-বাবার মনে হয়তো প্রশ্ন ছিল, ছেলেটি চুল-দাড়ি বড় করে কী করছে? কী করেছি, এটি তো তাদের বোঝানো যায় না। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সিনেমাটি মুক্তির পরে গল্পটি তাদের টাচ করবে। কারণ, গল্পটিই এমন, এটি প্রথম যদি কাউকে টাচ করে, সেটি সন্তানের মা-বাবাদের। যে কারণে তাদের একসঙ্গে হলে নিয়ে কাছ থেকে অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত মা-বাবার কাছ থেকে সেরা ফিডব্যাক পেয়েছি। বাবা-মেয়ের গল্পটি দেখে তারা ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু আমার বাবা-মা নন, অন্য মা-বাবাদের কাছেও গল্পটি নিজেদের হয়ে উঠেছে। তারা সিনেমাটি দেখে কেঁদেছেন। হল রিঅ্যাকশনের সেসব ভিডিও সবাই দেখেছেন। সব মিলিয়ে আমরা সফল। আমাদের জংলি সফল।’
মুক্তির পর থেকে ‘জংলি’ সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গ্রাফ দেখলে শুধু দর্শকের ভালোবাসায় সফল নয়, ব্যবসায়িকভাবেও সিনেমাটি যে সফল তার চিত্র বিদ্যমান। মাত্র ৮টি শো দিয়ে শুরু হওয়া সিনেমাটি ঈদের এতদিন পরও মাল্টিপ্লেক্সে ত্রিশটির মতো শো নিয়ে দাপিয়ে চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও জংলি হয়ে উঠেছে দর্শকদের সিনেমা।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জানিয়েছেন, জংলি প্রায় ছয় কোটির (গ্রস) ক্লাবে প্রবেশ করেছে।
ঈদে মুক্তির পর থেকে ক্রমশ দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘জংলি’। এমনকি, দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে ‘জংলি’। গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এ সিনেমাটি। কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ‘জংলি’।
ঈদে আরও অনেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জংলি বিশেষ হয়ে উঠেছে কেবল বাবা-মেয়ের গল্পের কারণে। সঙ্গে সিয়ামের নজরকাড়া অভিনয়। নৈঋতার পাখি হয়ে ওঠার দারুণ চেষ্টা। দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট নামে এক মনীষী বলেছেন, ‘একজন বাবা বলেন না যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন; বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন’ জংলি সিনেমায় সিয়াম সেটি বোঝাতে পেরেছেন। ফলে সিনেমাটি হয়ে উঠেছে সবার।
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন– ‘পৃথিবীতে আসার সময় প্রতিটি মানুষই একটি করে আলাদিনের প্রদীপ নিয়ে আসে, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই প্রদীপ থেকে ঘুমন্ত দৈত্যকে জাগাতে পারে।’
সিয়াম তাঁর জীবনের সেই দৈত্যকে জাগাতে পেরেছেন। পেরেছেন বলেই হয়তো আজ তিনি সাধারণ সিয়াম থেকে নায়ক সিয়াম হয়ে উঠেছেন। সিয়ামের যাত্রাটা শুরু বেশ আগে হলেও পুরোপুরি শুরু হয় ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমাটির মাধ্যমে সিয়াম নাটক থেকে পুরোপুরি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে ওঠেন। সে যাত্রা এখনও চলছে। প্রথম সিনেমায় যে সিয়ামকে সবাই দেখেছেন, জংলির সেই সিয়াম যেন আকাশ-পাতাল। তখন সিয়াম ছিলেন তরুণ, এই সিয়াম এখন বাবা। পর্দায় ও বাস্তবে দুই জায়গাতে দারুণ এক বাবা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আগামী পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন রাখলে নায়ক বলেন, ‘আমি নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাই। যারা আমার আগের কাজ দেখেছেন, তারা যেন বলেন, আগের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন।’