ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টে ৮৭ লাখ টাকা প্রতারণা
Published: 13th, March 2025 GMT
প্রতারকচক্রের তৈরি করা ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট নামক মোবাইল অ্যাপে বিনিয়োগের কথা বলে ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীতে মামলা হয়েছে। সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বুধবার (১২ মার্চ) রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) আদালতের বিচারক মামলাটি চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর উপরভদ্রা এলাকায়। তার আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার মামলার আবেদন করার পর বৃহস্পতিবার আদালত মামলাটি চন্দ্রিমা থানার ওসিকে তদন্তের জন্য দিয়েছেন।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের বাংলাদেশ প্রধান সজীব কুমার ভৌমিক ওরফে মাহাদী হাসান (৩৩), কান্ট্রি লিডার মোতালেব হোসেন ভুঁইয়া (৩৫), রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ (৩৮), সোহাগের স্ত্রী ও রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমাতুজ জহুরা মিলি (৩২), রাজশাহীর এজেন্ট মিঠুন মণ্ডল (৩৬), ওয়াজেদ আলী খেবির (৬০), মোজাহার আলী (৫৫) ও মো.
আরো পড়ুন:
সংঘর্ষে বিএনপিকর্মী নিহত
হত্যা মামলায় হুকুমের আসামি সাবেক মেয়র মিজান
‘ওসিকে বলেন আসতে, আমি ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট’
তাদের মধ্যে সজীব কুমার ভৌমিকের বাড়ি নোয়াখালী। মোতালেবের বাড়ি লক্ষ্মীপুর, ওবাইদুল্লাহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। বাকি আসামিদের বাড়ি রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায়।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম বিনিয়োগ করেছিলেন ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া মামলার সাক্ষী জাকির হোসেন ১২ লাখ, শারমীন সুলতানা ২০ লাখ, তাহেরুল ইসলাম ৬ লাখ, রাজীব সাহা ১৭ লাখ, আনোয়ার হোসেন ৮ লাখ ও আশরাফুল রহমান ৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে। হাতিয়ে নেওয়া মোট টাকার পরিমাণ ৮৭ লাখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়, আসামিরা প্রতারক। তারা ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট নামের একটি মোবাইল অ্যাপে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এই অ্যাপে বিনিয়োগ করলে প্রতি এক লাখ টাকার জন্য মাসে মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা মুনাফা আসতে থাকবে।
প্রতারকচক্র তাদের একটি সেমিনারে ডাকেন। মামলার বাদী ও সাক্ষীরা ওই সেমিনারে গেলে তাদের বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর তারা আসামিদের হাতে বিনিয়োগের টাকা তুলে দেন। তখন তারা মোবাইলে ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট অ্যাপ চালু করে দেন, কিন্তু এতে কখনো কোনো মুনাফা আসেনি। কথা ছিল, যে কোনো সময় বিনিয়োগকারীরা মূল টাকা তুলে নিতে পারবেন কিন্তু তারা সেই টাকাও তুলতে পারেননি।
এভাবে তারা প্রতারণার শিকার হন। হঠাৎ গত ২১ ফেব্রুয়ারি আসামি ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ, ফাতেমাতুজ জহুরা মিলি, ওয়াজেদ আলী খেবির ও মিঠুন মণ্ডলের সঙ্গে বাদী সাইফুল ইসলামের দেখা হয়। এ সময় তিনি টাকা ফেরত চাইলে তারা তা দেবেন না জানিয়ে দেন। ভবিষ্যতে টাকা চাইলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলেও তারা হুমকি দেন। ফলে তিনি এ মামলা করেন।
আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় জানান, ২০২৪ সালের শুরুতে রাজশাহীর আদালতে এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছিল। এরমধ্যে নতুন একটি মামলা হলো। আগামী ২৯ এপ্রিল এ মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ রয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএস অ য গ র ম ন ট ব ন য় গ কর
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।