ইমাম হাসান ভূঁইয়া তাইম, শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ ও মো. ইয়াসির সরকারের চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডও এসেছে। তবে এই তিনজন পরীক্ষা দিতে পারবেন না। মানুষগুলোই তো আর পৃথিবীতে নেই। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে তিনজনই শহীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন।

চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৬ জুন। এই তিন শহীদের পরিবারে সন্তানের পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে নেই কোনো উচ্ছ্বাস। স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। নতুন করে ক্ষোভেরও জন্ম দিচ্ছে তাঁদের মনে। কারণ, সন্তানেরা যে বাংলাদেশের জন্য রক্ত দিল, সেই বাংলাদেশের দেখা মিলছে না।

রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেলেও এই তিনজনের নামে প্রবেশপত্র হবে না। কারণ, টেস্ট পরীক্ষা দেওয়ার আগেই তারা পৃথিবী ছেড়েছে।

মো.

ইয়াসির সরকারের বড় বোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হাফসা বুশরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আব্বুকে ভাইয়ের রেজিস্ট্রেশন কার্ডের কথা জানালে আব্বু বলেছে, এ কার্ড দিয়ে কী করব? আমাদের ইয়াসিরই তো নেই।’ হাফসা বলেন, এ কার্ড শহীদ পরিবারগুলোতে নতুন করে ক্ষতের তৈরি করছে। কত স্মৃতি যে চারপাশে ভিড় করছে।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে গত ৫ আগস্ট গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্র মো. ইয়াসির সরকার (১৮)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাছের কুতুবখালীর প্রধান সড়কে ইয়াসির গুলিবিদ্ধ হন। নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজীনগর এম ডব্লিউ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন ইয়াসির। বাসা রাজধানীর শনির আখড়ার গ্যাস রোড এলাকায়। ইয়াসিরের বাবা ইউসুফ সরকার ক্যানসারের রোগী। ইয়াসির ছাড়াও তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে আছে।

ইয়াসিরের বোন হাফসা জানালেন, বয়সে ছোট হলেও ইয়াসির পরিবারের ভরসার জায়গা ছিল। মা-বাবাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, ছোট বোনকে মাদ্রাসায় আনা-নেওয়া করা, বাবার সঙ্গে বাজার করা—সবই করতেন। নিজের শখ বলতে ছিল, মাঝেমধ্যে সাইকেল চালিয়ে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাওয়া।

ইয়াসির সরকার ও তার রেজিস্ট্রেশন কার্ড

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষা: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রে ভালো করতে হলে

এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টি সম্পূর্ণ তাত্ত্বিক হওয়ায় ভালো ফল অর্জন করতে অবশ্যই অধ্যায়ভিত্তিক মৌলিক বিষয়গুলো ভালোভাবে অধ্যয়ন করতে হবে। এ বিষয়ে ভালো ফল অর্জনের কৌশলগত বিষয়টি তোমরা নিশ্চয় জানো। এরপরও বলে রাখছি, যে করেই হোক পুরো নম্বরের উত্তর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সময় ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু সৃজনশীল অংশের জন্য সময় বরাদ্দ ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট অর্থাৎ ১৫০ মিনিট তাই জ্ঞানমূলক অংশের জন্য ২ মিনিট, অনুধাবনমূলক অংশের জন্য ৩ মিনিট, প্রয়োগমূলক অংশের জন্য ৭ মিনিট, উচ্চতর দক্ষতা অংশের জন্য ৮ মিনিট। একটি প্রশ্ন তোমাকে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় নিয়ে লিখতে হবে।

বহুনির্বাচনি অংশ—

১. বহুনির্বাচনি অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বছরের বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করবে,

২. ভালো কলেজগুলোর নির্বাচনি প্রশ্নপত্র বহুনির্বাচনি অংশটা মনোযোগসহকারে সমাধান করা,

৩. বহুনির্বাচনি অংশের উত্তর সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করবে।

সৃজনশীল অংশ—

এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথমে জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর আগে দেওয়াটা ভালো। পরে সময় নিয়ে উদ্দীপক নির্ভর প্রশ্ন যেমন প্রয়োগ মূলক ও উচ্চতর দক্ষতার প্রশ্নের উত্তর করাটা দেওয়াটা ভালো। এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই বুঝে লিখবে। অপ্রাসঙ্গিক কোনো ধরনের কিছু লিখবে না। নিচে দেখে নাও কোন কোন অধ্যায়ের প্রশ্নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

আরও পড়ুনঅষ্টম শ্রেণিতে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে, আছে প্রশ্নও২৮ জুলাই ২০২৫

অধ্যায়-১ (ব্যবস্থাপনার ধারণা):

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি, ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর এই দুটি বিষয় দিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকতে পারে। তা ছাড়া ব্যবস্থাপনার উত্পত্তি ও ক্রমবিকাশ বহুনির্বাচনি অংশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যায়-২ (ব্যবস্থাপনা নীতি):

হেনরি ফেয়লের ১৪টি ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আদর্শ ব্যবস্থাপকের দক্ষতা, ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন দিয়েও সৃজনশীল প্রশ্ন আসতে পারে।

অধ্যায়-৩ (পরিকল্পনা প্রণয়ন):

পরিকল্পনার প্রকারভেদ, উত্তম পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্য, পরিকল্পনা প্রণয়নের ধাপ।

অধ্যায়-৪ (সংগঠিতকরণ):

সংগঠন কাঠামোর প্রকারভেদ ও সংগঠনের নীতিমালা সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।

অধ্যায়-৫ (কর্মী সংস্থান):

কর্মী সংগ্রহের উত্স, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যায়-৬ (নেতৃত্ব):

নেতৃত্বের প্রকারভেদ দিয়ে সব সময় সৃজনশীল প্রশ্ন থাকে। এটি ভালোভাবে আত্মস্থ করতে হবে। আদর্শ নেতার গুণাবলি ও পরামর্শমূলক নির্দেশনা।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়ছে১৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনজাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে তিনটি ডিপ্লোমা কোর্স, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে২৩ জুলাই ২০২৫

অধ্যায়-১০ (নিয়ন্ত্রণ):

নিয়ন্ত্রণের বৈশিষ্ট্য, নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ ও নীতিমালা সৃজনশীলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সৃজনশীল অংশে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য ক ও খ অংশের উত্তর যথাযথভাবে লেখা। অর্থাৎ সময়ক্ষেপণ না করে অতিরিক্ত কোনো কিছু না লেখা। উদ্দীপকনির্ভর প্রশ্ন ‘গ’ অংশে প্রথমে উত্তরের মূল অংশ প্রথম প্যারায় লিখতে হবে। এরপর দ্বিতীয় প্যারায় জ্ঞান অংশের ব্যাখ্যা করা এবং তৃতীয় প্যারায় উদ্দীপককে সামনে রেখে বা হাইলাইট করে উত্তর লেখা। একইভাবে ‘ঘ’ অংশের জন্য প্রথমে মূল উত্তর নির্ধারণ করতে হবে, এরপর মূল উত্তরের ব্যাখ্যা, প্রয়োগ, মূল উত্তরের পক্ষে বা বিপক্ষে যুক্তি, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ মতামত তুলে ধরে উপস্থাপন করতে হবে।

লেখক: মোহাম্মদ মাজেদুল হক খান, সহযোগী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুনজার্মানির ডাড স্কলারশিপে স্নাতকোত্তর, মাসে ৯৯২ ইউরোর সঙ্গে বিমান টিকিট-বাড়িভাড়াসহ নানা সুবিধা২৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক
  • এইচএসসি পরীক্ষা: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রে ভালো করতে হলে
  • এইচএসসি পরীক্ষা: জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর কীভাবে পাবে