চীন, রাশিয়া ও ইরানের কূটনীতিকদের মধ্যে আজ শুক্রবার বৈঠক হয়েছে। বেইজিংয়ের আশা, এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে থাকা আলোচনা নতুন করে শুরু করা যাবে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করেছিল ইরান। এ চুক্তির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে দায়িত্বপালনকালে ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।

ওয়াশিংটনের সরে যাওয়ার পরও এক বছর ধরে তেহরান ওই চুক্তি মেনে চলেছিল। পরে তারাও তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে। চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা তখন থেকে ভেস্তে যায়।

বেইজিং বলেছে, তারা আশা করে, কম সময়ের মধ্যে ওই আলোচনা নতুন করে শুরু করতে যে তৎপরতার প্রয়োজন, তা আজকের আলোচনার মধ্য দিয়ে দৃঢ় হবে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভিতে এ বৈঠক সম্পর্কে বলা হয়, তিন কূটনীতিক ইরানের পারমাণবিক ইস্যু এবং অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করেছেন। চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাওজু, রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটিতে এ আলোচনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।

ইরানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তেহরান।

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প ইরানকে পারমাণবিক আলোচনার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ইরান প্রত্যাখ্যান করলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার তেহরান বলেছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বরাবর লেখা চিঠিটি তারা এখন পর্যালোচনা করছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি গতকাল দেশটির সরকারের আনুষ্ঠানিক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।’

আরাগচি আরও বলেন, চাপ ও হুমকিমুক্ত থাকলে এবং জনগণের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার নিশ্চয়তা পেলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ