তিন বছরের বেশি সময় স্থায়ী যুদ্ধের বিরতিতে ইউক্রেন সম্মতি দেওয়ার পর কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে রাশিয়া। অবশ্য যুদ্ধে রাশিয়া এখন বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কি যুদ্ধবিরতিতে সায় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সুযোগ কাজে লাগাবেন, নাকি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবেন।

সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ৩০ দিনের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। এরপর রাশিয়াকেও একই প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে জানিয়েছেন, শিগগিরই রাশিয়া-ইউক্রেনকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হবে।

এরই মধ্যে ইউক্রেন এই প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে উল্লেখ করে রুবিও বলেন, রাশিয়াও শান্তির হাত বাড়িয়ে দিলে এত দিনের চলমান যুদ্ধ বন্ধ হতে খুব বেশি দেরি নেই। কিন্তু রাশিয়া যদি এ প্রস্তাব মেনে না নেয়, তাহলে শান্তি আলোচনায় অনিশ্চয়তা দেখা দেবে বলে মত দেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে রাশিয়ার রাজি হওয়া না-হওয়া বহুমুখী হিসাব-নিকাশের ওপর নির্ভর করছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি অবধি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়ে এসেছেন, কোনো ধরনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগ্রহ তাঁর নেই। যদি শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করতেই হয়, সেটি হতে হবে স্থায়ী সমাধান।

বর্তমানে যুদ্ধে অনেকটাই কোণঠাসা ইউক্রেন, রাশিয়ার সেনারা ভালো অবস্থানে রয়েছেন। তা ছাড়া পুতিন বারবার বলেছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পাবেন। এই পরিস্তিতিতে পুতিন কি ট্রাম্পের মন রাখবেন, নাকি যুদ্ধ চালিয়ে ইউক্রেনে জয়ের পথেই হাঁটবেন, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।

মূলত গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। বিশেষ করে ১২ ফেব্রুয়ারি পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের একান্ত ফোনালাপ এবং এরপর দফায় দফায় রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিনিদের বৈঠকই চলমান যুদ্ধের আশু সুরাহার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন কূটনীতিকেরা।

তবে কূটনীতিকেরা মনে করেন, রাশিয়ার পদক্ষেপ এখনো স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না। সৌদি আরবে বৈঠকের পর বেশ কৌশলী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তারিত না জেনে কোনো মন্তব্য জানানো হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না বলেই রাশিয়া এমন কৌশলী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

রুশ-মার্কিনদের সাপে-নেউলে সম্পর্কের বাইরে গিয়ে ট্রাম্প-পুতিন সখ্য কিন্তু বিশ্বপাড়ায় মোটেও অজানা নয়। তবে এ সখ্যই সব নয়, এর বাইরে আছে ইউক্রেনের খনিজের প্রতি ট্রাম্পের চোখ আর কিয়েভের ভূমির ওপর পুতিনের লোভ।

শেষ কয়েক দিনের যুদ্ধে ভালোই এগিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর কুরস্কের বেশির ভাগ এলাকা এখন রাশিয়ার দখলে। দর–কষাকষিতে কুরস্ককে নিজেদের হাতে রাখতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে দিন দিন তা কঠিন হয়ে উঠছে তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য।

আবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নজিরবিহীন বাগ্‌বিতণ্ডা এবং পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করার অভিযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের মতো ঘটনা এত দিন জেলেনস্কিকে ভালোই ভুগিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, শান্তিচুক্তির প্রতি যত দিন না আগ্রহ দেখাবে ইউক্রেন, তত দিন বন্ধ থাকবে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা। নিজের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিতে হচ্ছে জেলেনস্কিকে।

কিন্তু পুতিন কেন আপস করবেন? বাইডেন প্রশাসনের সময় হাজারখানেক নিষেধাজ্ঞার ভারেও নতজানু না হওয়া পুতিন কেন এত সহজে রাজি হবেন যুদ্ধবিরতিতে?

সৌদি আরবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সাইবিহাসহ দুই দেশের কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। এ সময় সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সল বিন ফারহানসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ১১ মার্চ, জেদ্দা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব

বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি

২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।

 তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।

আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।

কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন

সম্পর্কিত নিবন্ধ